Logo
Logo
×

শেষ পাতা

শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ড

জড়িতদের শাস্তিসহ অধিকারের তিন সুপারিশ

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৫ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

রাজধানীর মতিঝিল শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশকে কেন্দ্র করে দায়ের হওয়া মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ তিনটি সুপারিশ করেছে মানবাধিকার সংগঠন অধিকার। রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই দাবি জানায় সংগঠনটি। বিবৃতিতে উল্লেখ করা অধিকারের তিনটি সুপারিশ হলো-সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এই হত্যাযজ্ঞের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করা, হতাহতের শিকার পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা এবং এই ঘটনায় যেসব মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে সেগুলো প্রত্যাহার।

বিবৃতিতে বলা হয়, ১২ বছর আগে ঢাকার মতিঝিলে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশকে কেন্দ্র করে ২০১৩ সালের ৫ ও ৬ মে তৎকালীন হাসিনা সরকারের নির্দেশে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও নিরাপত্তা বাহিনী বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটায়। অধিকার এই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনার বিষয়ে সরেজমিন তথ্যানুসন্ধান করে এবং অন্ততপক্ষে ৬১ জন বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। দেশে এত বড় একটা হত্যাযজ্ঞের ঘটনা ঘটলেও ওই সময়ে অন্য কোনো মানবাধিকার সংগঠন কিংবা জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এই ঘটনার কোনো প্রতিবাদ করেনি। ওই সময় ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য এবং আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখায়।

এতে আরও বলা হয়, তথ্যানুসন্ধান প্রকাশ করার পর আওয়ামী লীগ সরকার অধিকারের কাছে নিহতদের নাম-ঠিকানাসহ বিস্তারিত তালিকা চাইলে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে অধিকার বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানায়। সেই কমিটির কাছে তালিকা হস্তান্তর করবে বলে জানায়। কিন্তু সরকার কোনো তদন্ত কমিশন গঠন করেনি। বরং ২০১৩ সালের ১০ আগস্ট রাতে অধিকারের সেক্রেটারি আদিলুর রহমান খানকে (বর্তমান উপদেষ্টা) পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা তার বাসার গেটের সামনে থেকে তুলে নিয়ে যায়। গুলশান থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের কাছে তাৎক্ষণিকভাবে তার অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা তাকে তুলে নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে। সারারাত গুম করে রেখে পরদিন আদিলুর রহমান খানকে আদালতে হাজির করা হয়। ৫৪ ধারায় আদিলুর রহমান খানকে আটক দেখিয়ে ডিবি পুলিশ তাকে রিমান্ডে নেয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ওই সময়ে সরকার সমর্থিত সংবাদমাধ্যমগুলো গোয়েন্দা সংস্থার সরবরাহকৃত ভুয়া তালিকা নিয়ে মনগড়া রিপোর্ট প্রকাশ করে। পরে আদিলুর রহমান খান এবং অধিকারের পরিচালক এএসএম নাসির উদ্দিন এলানকে নিবর্তনমূলক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬ (সংশোধনী ২০০৯)-এ অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করা হয়। আদিলুর রহমান খান এবং এএসএম নাসির উদ্দিন এলানকে যথাক্রমে ৬২ ও ২৫ দিন কারাগারে আটক রাখা হয়।

এরপর দীর্ঘ ১০ বছর ধরে বিচারিক হয়রানির পর ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জুলফিকার হায়াৎ ২০২৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর এই মামলায় কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আদিলুর রহমান খান এবং এএসএম নাসির উদ্দিন এলানকে অভিযুক্ত করে দুই বছরের কারাদণ্ড দেন।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম