ফিলিস্তিনি কবি মোসাব আবু তোহার পুলিৎজার জয়
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
যুক্তরাষ্ট্রে সাংবাদিকতার সর্বোচ্চ সম্মান হিসাবে খ্যাত পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছেন ফিলিস্তিনি কবি ও লেখক মোসাব আবু তোহা। দ্য নিউ ইয়র্কার ম্যাগাজিনে প্রকাশিত ‘গাজায় শারীরিক ও মানসিক হত্যাকাণ্ড’ শীর্ষক প্রবন্ধের জন্য তাকে এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। সোমবার এ পুরস্কার বিজয়ী হিসাবে তার নাম ঘোষণা করা হয়। খবর আল-জাজিরার।
পুরস্কার পাওয়ার পর আবু তোহা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে লিখেছেন, ‘আমি ‘কমেন্টারি’ লেখার জন্য পুলিৎজার পুরস্কার জিতেছি। এটি আশা নিয়ে আসুক। এটি একটি গল্প হোক।’
প্রতিক্রিয়া জানিয়ে দেওয়া তার এই কথাগুলো আরেক ফিলিস্তিনি কবি রিফাত আল আরিরের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন হিসাবে দেখা হচ্ছে। এই কবি ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত হন। তার লেখা সবশেষ কবিতার শিরোনাম ছিল ‘ইফ আই মাস্ট ডাই, লেট ইট বি আ টেল’। অর্থ ‘আমাকে যদি মরতেই হয়, তাহলে তা হোক এক উপাখ্যান’।
ফিলিস্তিনের অধিকাংশ কবির মতো মোসাব আবু তোহাও দখলদার ইসরাইলের নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। ২০২৩ সালে ইসরাইলি বাহিনীর হাতে আটক হন। কিছুদিন পর মুক্তি দেওয়া হলেও তাকে মিশরে নির্বাসনে পাঠানো হয়। মিশর থেকে পরে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে ইসরাইলি নিপীড়নের সেই তিক্ত ও ভয়ংকর অভিজ্ঞতাগুলো দ্য নিউ ইয়র্কারে লিখতে শুরু করেন। এক নিবন্ধে তিনি লিখেছেন, ‘গত এক বছরে আমি আমার স্মৃতির অনেক বাস্তব অংশ হারিয়ে ফেলেছি-মানুষ, স্থান ও এমন অনেক জিনিস যা আমাকে মনে রাখতে সাহায্য করেছিল।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি ভালো স্মৃতি তৈরি করতে সংগ্রাম করেছি। গাজায় প্রতিটি ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়ি এক ধরনের অ্যালবামে পরিণত হয়, যা ছবি দিয়ে নয় বরং প্রকৃত মানুষদের দ্বারা ভরা থাকে, মৃতরা তার পৃষ্ঠাগুলোর মধ্যে চাপা পড়ে থাকে।’
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর যুক্তরাষ্ট্রে আবু তোহার থাকা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এর মধ্যেই উগ্র ডানপন্থি গোষ্ঠীগুলো আবু তোহাকে বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা নিয়ে তিনি শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। যে কারণে সম্প্রতি তিনি বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় সেমিনার বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পর্যায়ে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পুলিৎজার পুরস্কার সাংবাদিকতার ‘নোবেল’ হিসাবে খ্যাত। ১৯১৭ সাল থেকে এ পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। সাংবাদিকতা ছাড়াও সাহিত্য, সংগীত ও নাটকে বিশেষ অবদানের জন্য কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির একটি বোর্ড প্রতিবছর এ পুরস্কার ঘোষণা করে।
