ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন: শরীয়তপুর-৩
বিএনপির মনোনয়ন প্রার্থী অপু ও সাঈদ, জামায়াতের আজহারুল
কেএম রায়হান কবীর, শরীয়তপুর
প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শরীয়তপুর-৩ (ভেদরগঞ্জ, ডামুড্যা ও গোসাইরহাট) আসনে মনোনয়ন পেতে তৎপর হয়ে উঠেছেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। এদিকে এমনিতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঠে দেখা যায়নি। দলের নিবন্ধন স্থগিত হওয়ার পর থেকে তারা আরও নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছেন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শরীয়তপুর-৩ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী দুজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একান্ত সচিব মিয়া নুর উদ্দিন অপু এবং জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও আহম্মেদ গ্রুপের চেয়ারম্যান সাঈদ আহমেদ আসলাম। এ আসন থেকে জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী দলের কেন্দ্রীয় সদস্য মুহাম্মদ আজহারুল ইসলাম। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সম্ভাব্য প্রার্থী অ্যাডভোকেট হামিদ মিয়া সরদার, মুফতি ফেরদাউস আহম্মেদ। জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থী ম. ম. ওয়াসিম খোকন। অন্য আসনগুলোর মতো শরীয়তপুর-৩ আসনেও নির্বাচনকেন্দ্রিক দলীয় ও সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার করেছেন সম্ভাব্য প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা।
জেলার সর্বদক্ষিণে অবস্থিত এ আসনটি ভেদরগঞ্জ উপজেলার একাংশ, ডামুড্যা ও গোসাইরহাট উপজেলা নিয়ে গঠিত। এ আসনে রয়েছে ভেদরগঞ্জ উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা, ডামুড্যা উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা এবং গোসাইরহাট উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও একটি প্রস্তাবিত পৌরসভা। স্বাধীনতার পর থেকে বেশির ভাগ সময় আওয়ামী লীগের দখলেই ছিল এ আসনটি। ১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আবিদুর রেজা খান, ’৭৯ সালে দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে মুসলিম লীগের ইব্রাহীম খলিল ওরফে নওয়াব বালা, ’৮৬ সালে তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির ইঞ্জিনিয়ার ফারুখ আলম, ’৮৮ সালে জাতীয় পার্টির এমএ রেজা, ’৯১ সালে তৎকালীন বাকশাল সম্পাদক (আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসাবে) আব্দুর রাজ্জাক, ’৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপি প্রার্থী শফিকুর রহমান কিরণ, ’৯৬ সালের ১২ জুন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, ২০০১ সালে আ.লীগের আব্দুর রাজ্জাক, ২০০৮ সালে আবার আব্দুর রাজ্জাক নির্বাচিত হন। ২০১১ সালের ২৩ ডিসেম্বর আব্দুর রাজ্জাকের মৃত্যুর পর ২০১২ সালের মার্চে উপনির্বাচনে আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে নাহিম রাজ্জাক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে নাহিম রাজ্জাক আ.লীগের টিকিটে দ্বিতীয়বারের মতো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। একাদশ জাতীয় সংসদেও দলীয় টিকিটে বিজয়ী হন নাহিম রাজ্জাক।
এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একান্ত সচিব, সাবেক ছাত্রদল নেতা মিয়া নূর উদ্দিন অপু গোসাইরহাট উপজেলার কোদালপুরের সন্তান। নূর উদ্দিন অপু বয়সে তরুণ হলেও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ও জিয়া পরিবারের অত্যন্ত বিশ্বস্ত। গোসাইরহাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি তারিক আজিজ মোবারক ঢালী বলেন, গত নির্বাচনের কয়েকদিন আগে তাকে হামলা করে মারাত্মকভাবে আহত করা হলে হেলিকপ্টারে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। পটপরিবর্তনের পর তিনি জামিনে মুক্তি পান। তিনি বিএনপি এবং জিয়া পরিবারের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়েছেন বারবার। তার থেকে নির্ভরযোগ্য, জনপ্রিয় ও বিশ্বস্ত লোক এ আসনে বিএনপি থেকে আর কেউ নেই।
বিএনপির অপর মনোনয়নপ্রত্যাশী সাঈদ আহমেদ আসলাম ডামুড্যা উপজেলার কনেশ্বর ইউনিয়নের সন্তান। তিনি শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি কয়েক বছর যাবৎ নির্বাচনি এলাকায় যোগাযোগ রেখে দলীয় রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন। তবে মন্তব্য নেওয়ার জন্য সাঈদ আহমেদ আসলামকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।
জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী মুহাম্মদ আজহারুল ইসলাম কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে ডামুড্যা পৌরসভা জামায়াতের আমির আতিকুর রহমান কবীর যুগান্তরকে বলেন, দলীয় মনোনয়ন পেলে মুহাম্মদ আজহারুল ইসলামকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে সবাই মিলে কাজ করব।
