ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন: ফরিদপুর-১
বিএনপিতে এগিয়ে কৃষক দলের নাসির, জামায়াতের ইলিয়াস
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে, সম্ভাব্য প্রার্থীরা ততই সরব হচ্ছেন। ফরিদপুরের চারটি আসনেই বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন। এক্ষেত্রে বিএনপির প্রার্থীরা এগিয়ে রয়েছেন। সরব জামায়াতের প্রার্থীও। ৫ আগস্টের পর বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা এলাকায় তাদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছেন। রাজনৈতিক নানা কর্মসূচিতে যোগদানের পাশাপাশি এলাকায় ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে কৌশলে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। জুলাই আন্দোলনে শহিদ কিংবা আহতদের বাড়িতে গিয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। অনুদান দিচ্ছেন। নানা সামাজিক কর্মকাণ্ডে নির্বাচনি এলাকায় বেশির ভাগ সময় ব্যয় করছেন। ঈদকে সামনে রেখে পোস্টার-ব্যানার সাঁটিয়ে শুভেচ্ছা ও দোয়া চাইছেন। এদিকে কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ার পর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ফরিদপুরের কোনো নির্বাচনি এলাকায় দেখা যাচ্ছে না। ফরিদপুর-১ আসনটি বোয়ালমারী, মধুখালী ও আলফাডাঙ্গা উপজেলা নিয়ে গঠিত। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়ের সূত্রানুযায়ী, এ আসনের মোট ভোটার ৪ লাখ ৭৭ হাজার ৯৮১ জন।
এ আসনে আগাম নির্বাচনি তৎপরতা শুরু করেছেন জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি, সাবেক এমপি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম এবং সামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু। এ আসনে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে এলাকায় কাজ করছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াস মোল্লা।
বিএনপির অন্যতম মনোনয়নপ্রত্যাশী খন্দকার নাসিরুল ইসলাম বোয়ালমারী উপজেলার কাদিরদি এলাকার বাসিন্দা। দলীয় নেতাকর্মীরা ফরিদপুর-১ আসনে তাকে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে তুলে ধরে গণসংযোগ করছেন। এলাকায় তিনি ব্যাপক সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করেছেন। তিনি বিভিন্ন সভা, সমাবেশ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ ছোট-বড় অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে নিজের উপস্থিতি জানান দিচ্ছেন। আগামী দিনে জনগণের সহযোগিতা চাইছেন।
বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বলেন, কৃষকদলের সিনিয়র ম্যান হিসাবে নাসিরুল ইসলাম এ আসনের তিন উপজেলায় বেশ জনপ্রিয়। তার সঙ্গে থেকে আমরা দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আশা করি, তিনি আগামী নির্বাচনে নমিনেশন পাবেন এবং বিপুল ভোটে জয়লাভ করবেন। খন্দকার নাসিরুল ইসলাম বলেন, এলাকার মানুষের জন্য দলের হয়ে কাজ করে যাচ্ছি। মানুষের কল্যাণে তাদের পাশে থেকেছি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা নিয়ে মানুষের কাছে যাচ্ছি। অতীতেও এলাকার মানুষের সুখে-দুঃখে কাছে থেকেছি। তাই তারা আগামী নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসাবে আমাকে দেখতে চান।
জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী ড. মো. ইলিয়াস মোল্লা বোয়ালমারী উপজেলার কামালদিয়া কালপোহা গ্রামের বাসিন্দা। চাকরি থেকে অবসরের পর তিনি এলাকার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন। দলের নেতাকর্মীরাও বেশ তৎপর। তারা মসজিদ-মাদ্রাসায় গিয়ে ইসলামি শাসনব্যবস্থার নানা সুফলের কথা তুলে ধরছেন।
বোয়ালমারী উপজেলা জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন বলেন, এলাকায় আমরা ড. ইলিয়াস মোল্লার হয়ে কাজ করছি। দলীয় হাইকমান্ড থেকে গ্রিন সিগন্যাল পেয়ে তিনি এলাকার মানুষের সঙ্গে বেশি সময় দিচ্ছেন এবং দল সংগঠিত করার বিষয়ে কাজ করছেন।
আগামী নির্বানে প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে ড. মো. ইলিয়াস মোল্লা যুগান্তরকে বলেন, জামায়াত ক্ষমতায় গেলে আল্লাহর আইন অনুযায়ী মদিনা সনদে রাষ্ট্র গঠনে গুরুত্ব দেওয়া হবে। ধর্মবর্ণনির্বিশেষে দেশের ১৮ কোটি মানুষের নাগরিক অধিকার সমানভাবে নিশ্চিত করা হবে। রাষ্ট্রীয় সম্পদ পাচার করা যাবে না। মা-বোনেরা যাতে পর্দার সঙ্গে নির্বিঘ্নে চলাফেরা করতে পারে, সেই ব্যবস্থা করা হবে। এ আসনে জাতীয় পার্টিসহ অন্য কোনো প্রার্থীর তৎপরতা এখনো চালাতে দেখেননি স্থানীয়রা।

