Logo
Logo
×

শেষ পাতা

ব্রিফিংয়ে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ

২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন

ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। ফাইল ছবি

পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, এবারের বাজেট দায়িত্বজ্ঞানহীন হবে না। এমন বাজেট হবে, যা আগামী অর্থবছরের জন্য বোঝা হবে না। আমরা শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারের বাজেট করছি। এজন্যই আগামী অর্থবছরে এডিপির আকার কমেছে। নতুন অর্থবছরের (২০২৫-২৬) জন্য ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। রোববার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠক শেষে ব্রিফ করেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা। এ সময় তিনি এসব কথা বলেন।

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, ৩৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ কমেছে উন্নয়ন বাজেটে। আগামী অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের ১ লাখ ৪৪ হাজার কোটি এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৮৬ হাজার কোটি টাকা খরচের লক্ষ্য রয়েছে। তবে সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৮ হাজার ৫৯৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা যোগ করা হলে এডিপির আকার দাঁড়াবে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৫৯৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা। নতুন অর্থবছরে পাঁচ খাতেই যাচ্ছে মোট বরাদ্দের ৬৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ (প্রায় ৭০ শতাংশ)। এছাড়া মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাচ্ছে স্থানীয় সরকার বিভাগ এবং সর্বনিম্ন সংসদবিষয়ক সচিবালয়।

সাংবাদিকদের কাছে প্রশ্ন রেখে উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলেন। কিন্তু আমি মনে করি, আমাদের উদ্দেশ্য দুটি। এক হলো একটি সুশাসিত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যেতে একটা ভালো নির্বাচন দেওয়া এবং দ্বিতীয় হলো, সুশাসন নিশ্চিতে কিছু প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার করা। আমরা সেগুলো করছি। তাহলে আমাদের কাছে কেন এত দাবি। বিভিন্ন গোষ্ঠী ও শত শত সংগঠন তাদের বঞ্চনা দূর করতে আমাদের কাছে দাবি জানাচ্ছে, আন্দোলন করছে। এত বছরের বঞ্চনা আমরা এই অল্প সময়ে কীভাবে দূর করব? সবাই বলে গণতান্ত্রিক সরকার অনেক বেশি সংবেদনশীল। তাহলে সেই সরকার এলে তখন তো দাবিগুলো পূরণ করতে পারে? আমাদের কাছে শিক্ষকরা বেতন বাড়াতে বলেন। ডাক্তার, নার্সরাও বেতন বাড়াতে বলেন, সরকারি কর্মচারীরাও বলেন, বেসরকারি শিক্ষক চাকরি ও স্কুল জাতীয়করণ করার দাবি জানান; কিন্তু আমরা সবটাই পূরণ করতে পারব না। তবে বাজেটে কিছুটা যাতে শুরু করা যায়, সেই চেষ্টা থাকবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগামী অর্থবছরে এডিপি যাতে শুরু থেকেই বাস্তবায়ন করা যায়, সেটি নিয়ে এনইসিতে আলোচনা হয়েছে। সেই প্রচেষ্টা থাকবে। তিনি বলেন, চলমান প্রকল্পের বোঝা আমাদের ঘাড়েও আছে।

সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাওয়া ৫ সেক্টর : পরিবহণ ও যোগাযোগ খাতে আগামী অর্থবছরের এডিপিতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৮ হাজার ৯৭৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। এছাড়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৩২ হাজার ৩৯২ কোটি ২৬ লাখ টাকা এবং শিক্ষায় ২৮ হাজার ৫৫৭ কোটি টাকা। গৃহায়ন ও কমিউনিটি সুবিধাবলি খাতে ২২ হাজার ৭৭৬ কোটি ৪০ লাখ এবং স্বাস্থ্যে দেওয়া হয়েছে ১৮ হাজার ১৪৮ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এসব খাতেই বরাদ্দ গেছে এডিপির ৬৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ।

সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পেয়েছে ১০ মন্ত্রণালয় ও বিভাগ : আগামী অর্থবছরের এডিপিতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাওয়া মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো হলো-স্থানীয় সরকার বিভাগ ৩৬ হাজার ৯৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগ ৩২ হাজার ৩২৯ কোটি ৫৭ লাখ, বিদ্যুৎ বিভাগ ২০ হাজার ২৮৩ কোটি ৬২ লাখ এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ ১৩ হাজার ৬২৫ কোটি টাকা। আরও আছে-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ১২ হাজার ১৫৪ কোটি ৫৩ লাখ, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ ১১ হাজার ৬১৭ কোটি ১৭ লাখ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ১১ হাজার ৩৯৮ কোটি ১৬ লাখ, নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয় ৯ হাজার ৩৮৭ কোটি ৬২ লাখ, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ৮ হাজার ৪৮৯ কোটি ৮৬ লাখ এবং রেলপথ মন্ত্রণালয় ৭ হাজার ৭১৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। এছাড়া সর্বনিম্ন বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে সংসদবিষয়ক সচিবালয়ের অনুকূলে ২০ হাজার টাকা।

এডিপিতে যত প্রকল্প : আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের এডিপিতে বরাদ্দসহ মোট প্রকল্প রয়েছে ১ হাজার ১৪৩টি। এর মধ্যে বিনিয়োগ প্রকল্প ৯৬৯টি, সমীক্ষার ১৯টি, কারিগরি সহায়তার ৯৭টি এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নের প্রকল্প থাকবে ৫৮টি। এগুলোর বাইরে অনুমোদনহীন নতুন প্রকল্প থাকবে ৯৯০টি। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নের ৭৫৪টি, বৈদেশিক ঋণ পাওয়া সুবিধার জন্য ২০০টি এবং স্বয়ত্তশাসিত সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নের ৩৬টি প্রকল্প রয়েছে। এছাড়া পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় বাস্তবায়নের জন্য নির্ধাতি প্রকল্প রয়েছে ৭৯টি। এডিপিতে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের ২২৮টি প্রকল্পের তালিকা যুক্ত করা হয়েছে।

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম