জুলাই ঐক্যের সংবাদ সম্মেলন
হাসিনার দোসর ৪৪ সচিব, ১২ ম্যাজিস্ট্রেটের নাম প্রকাশ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২১ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে বর্তমানে কর্মরত পতিত আওয়ামী লীগের দোসর ৪৪ জন সচিব ও ১২ জন ম্যাজিস্ট্রেটের তালিকা প্রকাশ করেছে ‘জুলাই ঐক্য’ নামের একটি সংগঠন। সংগঠনটি এসব আমলা ও ম্যাজিস্ট্রেটদের বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোসহ ৭ দফা দাবি জানিয়েছে। ৮০টি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত এই প্ল্যাটফর্মটির নেতারা বলেছেন, ৩১ মের মধ্যে তাদের দাবি মানতে হবে। অন্যথায় ‘মার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচি দেওয়া হবে। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই হুঁশিয়ারি দেন জুলাই ঐক্যের সংগঠক এবি জোবায়ের। এর আগে লিখিত বক্তব্যে ৭ দফা দাবি তুলে ধরেন জুলাই ঐক্যের সংগঠক মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ। তাদের প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-৩১ মের মধ্যে তালিকায় উল্লিখিত আওয়ামী লীগের সব দোসর আমলাদের বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাতে হবে। সবার ব্যাংক হিসাব ও অবৈধ সম্পদ জব্দ করতে হবে। দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে। ৩৬শে জুলাইয়ের (৫ আগস্ট) মধ্যে এখন পর্যন্ত চিহ্নিত সব স্বৈরাচারের দোসরের তালিকা সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। আইনের যে ধারার কারণে থানায় খুনি পুলিশদের নামে মামলা নেওয়া হয় না তা ৩১ মের মধ্যে বাতিল অথবা সংশোধন করতে হবে। সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়া ৬২৬ জনের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। তারা এখন কোথায় আছে এবং কতজন কার সহযোগিতায় দেশ ছেড়েছে তাদের তালিকাও প্রকাশ করতে হবে।
এর আগে পতিত সরকারের দোসর আখ্যা দিয়ে বর্তমানে প্রশাসনে কর্মরত ৪৪ জন আমলার নাম পড়ে শোনান জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে শহীদ সৈয়দ মুনতাসুর রহমানের বাবা সৈয়দ গাজিউর রহমান। আন্দোলনে গুলি চালানোর নির্দেশদাতা ৯৫ জন ম্যাজিস্ট্রেটের নাম পড়ে শোনান জুলাই ঐক্যের সংগঠক ও আপ বাংলাদেশের সদস্য আব্দুল্লাহ আল মিনহাজ। তবে দুটি তালিকাই অসম্পূর্ণ বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। পরে কালচারাল ফ্যাসিস্ট, শিক্ষাঙ্গন, চিকিৎসাঙ্গন, আইনাঙ্গন এবং গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন সেক্টরে থাকা স্বৈরাচারের দোসরদের তালিকাও প্রকাশ করা হবে বলে জানানো হয়।
স্বৈরাচারের দোসর সচিব : তাদের দেওয়া তালিকা অনুসারে স্বৈরাচারের দোসর সচিবরা হলেন-পানিসম্পদ সচিব নাজমুল আহসান, পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন সচিব ফারহিনা আহমেদ, কৃষি সচিব ড. মো. ইমদাদ উল্লাহ মিয়ান, ভূমি আপিল বোর্ডের সদস্য মুহাম্মদ ইব্রাহীম, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নামজা মেবারেক, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব মো. মুশফিকুর রহমান, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব মো. আব্দুর রহমান খান, অর্থ সচিব ড. খালেকুজ্জামান, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মো. রুহুল আমীন, দুর্নীতি দমন কমিশনের সচিব খোরশেদা ইয়াসমিন, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান মো. আমিনুল আহসান, রেক্টর (বিপিএটিসি) সাইদ মাহবুব খান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান, জাতীয় উন্নয়ন একাডেমির রেক্টর ড. মো. শহীদুল্লাহ, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমির রেক্টর ড. মো. ওমর ফারুক, শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব এএইচএম শফিকুজ্জামান, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান নাসরিন আফরোজ, বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী, সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. মুসলিম চৌধুরী, প্রতিরক্ষা সচিব মো. আশরাফ উদ্দিন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ইশরাত চৌধুরী, বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শরীফা খান, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব ডা. মো. সারোয়ার বারী, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) জায়েদা পারভীন, ইআরডি সচিব শাহরিয়ায় কাদের সিদ্দিকী, প্ল্যানিং কমিশন সদস্য এমএ আকমল হোসেন আজাদ, ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন, জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমির মহাপরিচালক সুকেশ কুমার সরকার, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সংযুক্ত মোহাম্মদ মাহমুদুল হোসাইন খান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের গাজী মুহাম্মদ সাইফুজ্জামান, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ সাইদুর রহমান, চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান ড. লিপিকা ভদ্র, জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো. আব্দুল কাইয়ুম, জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক সালেহ আহমেদ মোজাফফর, মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কেয়া খান, জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. বশিরুল আলম, ওয়াশিংটনে নিযুক্ত ইকোনমিক মিনিস্টার মেহেদী হাসান, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ, কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের সচিব কাজী এনামুল হাসান এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মফিদুর রহমান।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট : ছাত্র-জনতার ওপর গুলির নির্দেশদাতা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা হলেন-উজ্জ্বল কুমার হালদার, অমিত কুমার সাহা, শামসুজাহান কনক, সোনিয়া হোসেন জিসান, আরিফ জাহান, শরীফ মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, অংমাচিং মারমা, সায়েম ইমরান, সাদিয়া আক্তার, মাহমুদুল হাসান রাসেল, মো. জাকির হোসেন ও শাইখা সুলতানা।
