জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আরেকটা এক-এগারোর পাঁয়তারা চলছে। শুক্রবার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন। নাহিদ লেখেন, বাংলাদেশের রাজনীতিকে সকল প্রকার আধিপত্যবাদ থেকে মুক্ত করে স্বাধীন ও সার্বভৌমভাবে পরিচালনা করাই আমাদের লক্ষ্য। বাংলাদেশেকে দুর্বল করে রাখার লক্ষ্যে বারবার বিভাজিত করা হয়েছে। জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পর থেকে আবারও দিল্লি থেকে ছক আঁকা হচ্ছে। দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি করার, দেশকে বিভাজিত করার। গণতান্ত্রিক রূপান্তরকে বাধাগ্রস্ত করে আরেকটা এক-এগারোর বন্দোবস্তের পাঁয়তারা চলছে।

তিনি লেখেন, ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমিক, বাংলাদেশপন্থি ও ধর্মপ্রাণ ছাত্র-জনতাকে সার্বভৌমত্ব, সংস্কার ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। দেশপ্রেমিক সেনা অফিসার ও সৈনিকদের সার্বভৌমত্ব ও বাংলাদেশ রক্ষায় প্রস্তুত থাকতে হবে।

এদিন এনসিপির যুব উইং জাতীয় যুবশক্তির এক অনুষ্ঠানে নাহিদ বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নের পথে যত বড় শক্তিই বাধা হয়ে দাঁড়াক, তা মোকাবিলা করা হবে। জুলাইকে যত বেশি ধারণ করতে পারব, তত বেশি এগিয়ে যেতে পারব।

এদিকে, দেশের সমসাময়িক পরিস্থিতি নিয়ে এনসিপি আজ জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে। বাংলামোটরে দলটির কার্যালয়ে দুপুর ১২টায় সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম কথা বলবেন বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

ফেসবুক পোস্টে তিনি একগুচ্ছ দাবি জানিয়ে বলেন, ড. ইউনূসকে জনগণকে দেওয়া সংস্কার, বিচার ও ভোটাধিকারের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে হবে। তাকে দায়িত্বে থেকেই রাজনৈতিকভাবে সব সমস্যার সমাধান করতে হবে। জুলাই ঘোষণাপত্র নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই দিতে হবে। ঘোষিত টাইম ফ্রেমের মধ্যেই নির্বাচন হবে। নির্বাচনের আগে মৌলিক সংস্কারের জুলাই সনদ রচিত হবে। নির্বাচনের আগে জুলাই গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান হবে এবং বিচারের রোডম্যাপ আসতে হবে। নতুন সংবিধানের জন্য গণপরিষদ ও আইনসভার নির্বাচন একই সাথে দিতে হবে। দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর ফাঁদে পা না দিয়ে আমরা বরং ঐক্যবদ্ধ থাকব। জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবি বাস্তবায়নে যুবসমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নের পথে যত বড় শক্তিই বাধা হয়ে দাঁড়াক, আমরা তার মোকাবিলা করব। জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র শহীদ ও আহতদের উপহার হিসাবে দিতে যুবশক্তিকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

এনসিপির এই নেতা আরও বলেন, সবাই যখন রাষ্ট্র সংস্কার চাচ্ছে, তখন তরুণ নেতারা ক্ষমতার জন্য কাতর হয়ে উঠেছে। এ অবস্থায় দেশপ্রেমিক যুবসমাজকে একত্রিত করাই হবে আমাদের অন্যতম লক্ষ্য। যারা আগামীতে দেশকে রক্ষা করবে, নতুন প্রজাতন্ত্রের জন্য লড়াই করবে। যুবকদের মধ্যে সেই দেশপ্রেম ও মূল্যবোধ তৈরি করতে যুবশক্তিকে কাজ করতে হবে।

অনুষ্ঠানে জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী যুবশক্তির কর্মপন্থা ঠিক করে দিয়ে বলেন, সব পক্ষের অংশগ্রহণ না হলে যুবশক্তি মুখ থুবড়ে পড়বে। যুবশক্তিকে রাষ্ট্রের ভ্যানগার্ড হিসাবে কাজ করতে হবে। এতে নারী ও আলেম সমাজের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, জাতীয় যুবশক্তির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তারিকুল ইসলাম, জাতীয় যুবশক্তির সদস্য সচিব ডা. জাহেদুল ইসলাম ও জাতীয় যুবশক্তির মুখ্য সংগঠক ইঞ্জিনিয়ার ফরহাদ সোহেলসহ অন্য কেন্দ্রীয় নেতারা।