Logo
Logo
×

শেষ পাতা

মতবিনিময় সভায় আলী রীয়াজ

ঐকমত্য হবে না এমন বিষয়ও প্রকাশ হবে

সংবিধানে হাত দেওয়া উচিত হবে না : মুনীরুজ্জামান

Icon

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৬ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ঐকমত্য হবে না এমন বিষয়ও প্রকাশ হবে

ফাইল ছবি

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, তা জানানো হবে। পাশাপাশি যেসব বিষয়ে সমঝোতা হয়নি, স্বচ্ছতার স্বার্থে সেটাও প্রকাশ করা হবে। রোববার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে জাতীয় ঐকমত্যের বিষয়ে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অধ্যাপক আলী রীয়াজ এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক বিষয়ে যেমন ঐকমত্য হয়েছে, তেমনই কিছু মৌলিক বিষয়ে তা সম্ভব হয়নি। দলগুলোর আদর্শিক অবস্থানের কারণে মতপার্থক্য থাকবে, সব বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে না, এটাই বাস্তব।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, আমরা বারবার বলেছি, জাতীয় ঐকমত্য গঠনে কেবল রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা যথেষ্ট নয়। নাগরিক সমাজের মধ্যেও এ বিষয়ে একধরনের ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা দরকার। তাই নাগরিক সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণ সংস্কার কর্মসূচি থেকে বাদ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, ঐকমত্য কমিশন চেষ্টা করবে, যে জাতীয় সনদ তৈরি হচ্ছে তার পাশাপাশি যে প্রতিবেদন তৈরি করা হবে, সেখানে যেন আপনাদের (সুশীল সমাজ) এ মতামতগুলো থাকে।

আলী রীয়াজ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ নিয়ে যোগাযোগ করেছেন। দলগুলো তাদের মতামত দিয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে তারা ৩৩টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, আমরা একটা মাহেন্দ্রক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি। অমিত সম্ভাবনা তৈরি করেছি; কিন্তু যে কোনো সম্ভাবনা যেমন চ্যালেঞ্জ তৈরি করে, এ পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জগুলো অত্যন্ত কঠিন।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ ছাড়াও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান, মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনায় সুশীল সমাজের ১১ প্রতিনিধি অংশ নেন। তারা হলেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. আবদুল মতিন, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) আ ন ম মুনীরুজ্জামান, সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং ও ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক একেএম ওয়ারেসুল করিম, ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো মির্জা এম হাসান, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিরা দেওয়ান, নারী প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা আশরাফুন নাহার মিষ্টি, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর ও মানবাধিকারকর্মী সুলতানা রাজিয়া।

আলোচনায় অংশ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের রাষ্ট্র সংস্কার উদ্যোগে সমর্থন জানালেও সংবিধানের মতো বিষয়ে হাত দেওয়াকে অনুচিত বলে মত দেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের সভাপতি ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল আ ন ম মুনীরুজ্জামান। তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, সংবিধানে হাত দেওয়া উচিত হবে না। সংবিধান শুধু পরিবর্তন করতে পারে জনপ্রতিনিধি বা যারা নির্বাচিত হয়ে আসবেন। তিনি বলেন, যেটুকু আমাদের করা সম্ভব, সেটুকু শুধু করা উচিত তার বাইরে এমন কিছুতে হাত দেওয়া উচিত না। বর্তমানে আমরা যে জটিল পরিস্থিতিতে আছি, সেটা আরও জটিলতর হবে।

নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোকে ৩৩ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সামিনা লুৎফা। তিনি বলেন, প্রতিটি আন্দোলনে নারীরা সামনে থেকে ভূমিকা রেখেছেন। এবারই দেখা গেছে, তরুণ প্রজন্মের নারীরা প্রবল আগ্রহ এবং আকাঙ্ক্ষা নিয়ে রাজনীতিতে আসতে চাইছেন। এ পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলোকে বার্তা দেওয়া প্রয়োজন যে, নারীদের সুযোগ করে দিতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতরে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

ঐকমত্য

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম