Logo
Logo
×

শেষ পাতা

রাজধানীর মিরপুরে ছয় দুর্বৃত্তের হামলা

প্রকাশ্যে গুলি করে ২২ লাখ টাকা ছিনতাই

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

প্রকাশ্যে গুলি করে ২২ লাখ টাকা ছিনতাই

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মিরপুরে ফাঁকা গুলি ও ছুরি মেরে মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ীর নগদ ২২ লাখ টাকা ও ডলার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত হয়েছেন টাকা বহনকারী জাহিদুল হক চৌধুরী। তিনি মাহমুদ মানি এক্সচেঞ্জের মালিক রাসেল রানার ভগ্নীপতি। মঙ্গলবার সকালের এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এদিকে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে লিটন হাওলাদার নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে। 

মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় মাহমুদ মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি রাসেল রানার। তিনি (রাসেল) মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের ৪ নম্বর লেনের একটি ফ্ল্যাটে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। প্রতিদিন ব্যবসার টাকা রাতে বাসায় নিয়ে যান এবং সকালে প্রতিষ্ঠানে নিয়ে আসেন। টাকা বহনের সময় তিনি তার ভগ্নীপতি জাহিদুল হককে সঙ্গে রাখেন। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে স্টেডিয়াম সুইমিংপুল ও ফায়ার সার্ভিসের মাঝামাঝি আব্দুল বাতেন সড়কের মাথায় পৌঁছলে দুটি মোটরসাইকেলে ছয়জন দুর্বৃত্ত এসে তাদের পথরোধ করে। তারা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জাহিদ আহত হন। তাকে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ও পরে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে তাকে বাসায় নিয়ে আসা হয়েছে।

ঘটনার পর র‌্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট ঘটনাস্থলে আসে। তারা ছায়াতদন্ত শুরু করে।

ডিএমপির মিরপুর বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান জানান, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে দুর্বৃত্তদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এরই মধ্যে সন্দেহভাজন একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত আছে। 

আহত জাহিদ জানান, শ্যালক রাসেল মানি এক্সচেঞ্জ থেকে বাসায় টাকা আনা-নেওয়ায় তিনি সহযোগিতা করেন। মঙ্গলবার সকালে আমি রাসেলের বাসায় যাই। বাসা থেকে ১০টার দিকে আমরা টাকার ব্যাগ নিয়ে মানি এক্সচেঞ্জ অফিসের দিকে রওয়ানা হই। আব্দুল বাতেন সড়কের মাথায় পৌঁছলে দুটি মোটরসাইকেলে করে ছয়জন দুর্বৃত্ত এসে আমাদের ঘিরে ধরে। দুজন আমার মাথার দুপাশে পিস্তল ঠেকায়। আর ছুরি-চাপাতি হাতে 

আমার পেছনে ছিল দুজন, সামনে দুজন। একজন টাকার ব্যাগ ধরে টান দেয়। আমি টাকার ব্যাগ ছাড়তে চাইনি। তখন পেছন থেকে আমার শ্যালক রাসেল বলে দুলাভাই ব্যাগ ছেড়ে দিন। আমি ব্যাগ ছেড়ে দিলে একজন ব্যাগটি নিয়ে মোটরসাইকেলে ওঠে। আশপাশে অনেক প্রত্যক্ষদর্শী ছিল। তারা কেউ তখন এগিয়ে আসেনি। আমি চিৎকার করে বলি আমাদের টাকার ব্যাগ ছিনতাই করে নিয়ে গেছে। তখন একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলে ধরেন। আমি তখন টাকার ব্যাগটি আবার ধরি। এ সময় একটি গুলির আওয়াজ শুনতে পাই এবং আমার কোমরের বামপাশে আঘাত লাগে। এরপর এরা মোটরসাইকেল নিয়ে মিরপুর-২ নম্বরের দিকে পালিয়ে যায়। তিনি বলেন, পরে আমি দেখি আমার পেছনে কোমরে আঘাত লেগেছে, রক্ত ঝরছে। আমাকে প্রথম নেওয়া হয় আলোক হাসপাতালে। সেখান থেকে সোহরাওয়াদী হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক জানান, গুলি নয়-এটি ধারালো অস্ত্রের আঘাত। সেখানে চিকিৎসা নিয়ে এখন বাসায় অবস্থান করছি। মাহমুদ মানি এক্সচেঞ্জের মালিক রাসেল জানান, ব্যাগে ২২ লাখ টাকা ও ৩৫৫০ ডলার ছিল। দুর্বৃত্তরা সব নিয়ে গেছে। 

মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাজ্জাদ রোমান বলেন, জাহিদ গুলিবিদ্ধ হননি, সম্ভবত ধারালো কিছু দিয়ে তাকে আঘাত করা হয়েছে এবং আতঙ্ক সৃষ্টি করতে দুর্বৃত্তরা ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। একটি গুলির খোসা জব্দ করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ এবং অন্যান্য বিষয় পর্যবেক্ষণ করে তদন্ত করা হচ্ছে। একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। 

যা দেখা গেল ফুটেজে : ঘটনার প্রায় ১৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, আব্দুল বাতেন সড়কের মাথায় দুটি মোটরসাইকেলে করে এসে অস্ত্রধারীরা ঘিরে ধরে ভিকটিম জাহিদকে। অস্ত্র উঁচিয়ে ব্যাগ ছিনতাইয়ের একপর্যায়ে ফাঁকা ফায়ার ও জাহিদের ওপর হামলা করা হয়। এ সময় তিনি রাস্তায় পড়ে যান। এরপর দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেলে করে চলে যায়।


মিরপুর গুলি ছিনতাই

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম