Logo
Logo
×

শেষ পাতা

কারামুক্ত এটিএম আজহারকে সংবর্ধনা

দেশের প্রয়োজনে একপথে হাঁটব: জামায়াত আমির

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

দেশের প্রয়োজনে একপথে হাঁটব: জামায়াত আমির

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। ছবি: যুগান্তর

কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর এটিএম আজহারুল ইসলামকে সংবর্ধনা দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। বুধবার সকালে তাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। এ সময় জামায়াত আমির বলেন, দেশ-জাতির প্রয়োজনে একপথে হাঁটব এবং সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে সামনে এগিয়ে যাব। অনুভূতি জানিয়ে সদ্য কারামুক্ত জামায়াতের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, প্রায় ১৪ বছর কারাগারে থাকার পর মুক্ত হলাম। আমি এখন মুক্ত, এখন স্বাধীন। স্বাধীন দেশে একজন স্বাধীন নাগরিক। আদালতকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন। এতদিন ন্যায়বিচার ছিল না; আদালতকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করা হয়েছে। আশা করি সামনের দিনগুলোতে আদালত জনগণের আশাআকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী যথাযথ ভূমিকা পালন করবেন।

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত এটিএম আজহারুল ইসলামকে খালাস দিয়ে মঙ্গলবার রায় দেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। বুধবার সকালে রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের প্রিজন সেল থেকে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। পরে শাহবাগ মোড়ে অস্থায়ীভাবে নির্মিত মঞ্চে তার জন্য সংক্ষিপ্ত সংবর্ধনার আয়োজন করে জামায়াতে ইসলামী। সংবর্ধনার পর তিনি মগবাজারস্থ জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেন। এরপর বেলা সোয়া ১১টার দিকে মগবাজার আল-ফালাহ মিলনায়তনে এটিএম আজহারুল ইসলামকে নিয়ে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুমের সঞ্চালনায় শাহবাগে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ও ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আবদুল হালিম, মোয়ায্যম হোসাইন হেলাল, এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নেতা সাইফুল আলম খান মিলন, মতিউর রহমান আকন্দ, নূরুল ইসলাম বুলবুল, মো. সেলিম উদ্দিন, ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের সভাপতি জসিমউদ্দীন সরকার, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, উত্তরের ড. রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য শামিউল হক ফারুকি ও মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদী, মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে ব্যারিস্টার নাজিবুর রহমান মোমেন, আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের ছেলে আলী আহমাদ মাবরুর, এটিএম আজহারুল ইসলামের ছেলে তাসনিম আজহার সুমন, আব্দুল কাদের মোল্লার ছেলে হাসান জামিল প্রমুখ।

জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করি। যে মানুষটাকে সুদীর্ঘ ১৪টি বছর ঘাড়ের ওপর মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়ে জুলুম করা হয়েছে, আল্লাহ তাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। মহান রব তাকে আমাদের বুকে ফিরিয়ে দিয়েছেন।

এটিএম আজহারুল ইসলাম আইনজীবীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, যতদূর সংবাদ মাধ্যমে জানতে ও বুঝতে পেরেছি অত্যন্ত সাবলীল-সুন্দর যুক্তিতর্কের মাধ্যমে আমার মামলার অসাড়তা দূরদর্শিতার সঙ্গে সবকিছু প্রকাশ করতে পেরেছেন। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত যে, এই মামলার মাধ্যমে আগের সরকার কীভাবে নির্মমভাবে আমাদের নেতাদের হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে দুনিয়া থেকে বিদায় করেছে। আরও ধন্যবাদ জানাতে চাই, যাদের কারণে আজকে মুক্ত হওয়ার সুযোগ পেয়েছি; সেই ৩৬ জুলাই অর্থাৎ ৫ আগস্টের মহাবিপ্লবী নায়কদেরকে। ছাত্রসমাজই রাজপথে নেমে রক্ত ঢেলে বিগত সাড়ে ১৫ বছরের ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী যারা জনগণের পক্ষ নেওয়ার কারণে আজ আমরা স্বাধীন হয়েছি, তাদেরও ধন্যবাদ। এটিএম আজহার পূর্বসূরিদের অন্যায়ভাবে জুডিশিয়াল কিলিংয়ের মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, আল্লাহ তাদের সবার শাহাদত কবুল করুন, আমিন। তিনি আরও বলেন, যারাই এসব হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যেখানে যে পর্যায়ে জড়িত, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় এনে বিচার করা হোক। তা না হলে এই খারাপ সংস্কৃতি চালু থাকবে। এখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম