রাজধানীর কুরবানি হাট
পর্যাপ্ত পশু বাড়ছে বিক্রি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
রাজধানীর কুরবানি পশুর হাটগুলোতে বিক্রি বেড়েছে। বুধবার সরকারি অফিস ছুটি হওয়ায় বৃহস্পতি ও শুক্রবার পশু বিক্রির ধুম পড়বে বলে মনে করছেন বিক্রেতারা। হাটগুলোতে দেশি জাতের পর্যাপ্ত গরু উঠেছে। এছাড়া পর্যাপ্ত সংখ্যক বিদেশি প্রজাতির মাঝারি ও বড় ধরনের গরুও রয়েছে। ছাগল ও মহিষও পাওয়া যাচ্ছে পর্যাপ্ত পরিমাণে।
যাত্রাবাড়ী প্রতিনিধি জানান, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর শনিরআখড়া দনিয়া কলেজ মাঠে কুরবানির অস্থায়ী পশুর হাট বসেছে। দেশের বিভিন্ন জেলার খামারিরা ট্রাকভর্তি পশু হাটে এনেছেন। এ হাট শনিরআখড়া, জিয়া সরণি, মৃধাবাড়ী, রায়েরবাগ, কাজলারপাড়, বর্ণমালা স্কুল রোডসহ আশপাশের প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত হাটে কিছুটা বিক্রি হলেও বিকালে বৃষ্টির কারণে বিক্রিতে ভাটা পড়ে। বৃষ্টিতে হাটের পশু কষ্টের শিকার হচ্ছে। বেপারিরাও পড়েন চরম ভোগান্তিতে।
সুবজবাগ প্রতিনিধি জানান, বিক্রি বেড়েছে রাজধানীর শাজাহানপুর কুরবানির পশু হাটে। এই হাটে গরু আমদানি বেড়েছে। ক্রেতাসমাগমে জমে উঠেছে হাট। মঙ্গলবার শাহজাহানপুর হাটে সরেজমিনে দেখা যায়, ট্রাক, পিকআপ ভরে আসছে পশু। রাজশাহী থেকে ১৬টি গরু নিয়ে ওই হাটে এসেছেন মনির মিয়া নামে এক বেপারি। তিনি বলেন, গত দুই দিনে পাঁচটি গরু বিক্রি হয়েছে। সোমবার বাজার ঠান্ডা ছিল। মঙ্গলবার কাস্টমারদের ভিড় বেড়েছে।
সিরাজগঞ্জ থেকে গরু নিয়ে এসেছেন মতিউর রহমান। তিনি জানান, ২ লাখের নিচে গরুর চাহিদা বেশি। চারটি গরু বিক্রি করেছেন; সবগুলোর দাম ১ লাখ ২০ হাজার থেকে ১ লাখ ৮০ হাজারের মধ্যে। তবে মানুষ ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার মধ্যে গরু বেশি খুঁজছেন বলে জানান তিনি। মিরপুর প্রতিনিধি জানান, রাজধানীর গাবতলী কুরবানির হাটে জমে উঠেছে বেচাকেনা। ছোট, বড় ও মাঝারি সব আকারের গরু রয়েছে এ হাটে। পাশাপাশি উট, ছাগল, মহিষ ও দুম্বা পাওয়া যাচ্ছে। মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, গাবতলী হাট কানায় কানায় ভরে গেছে পশুতে। পশু রাখার ছাউনিগুলো ফাঁকা নেই। ক্রেতা বিক্রেতাদের পদভারে মুখরিত হাট। সকাল থেকে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে ১ নম্বর হাসিল ঘরের পাশে ছাগল রাখার ছাউনিগুলোতে। হাটে পুরুষের পাশাপাশি নারী ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। এখানে সব আকারের গরু বিক্রি হচ্ছে। আড়াই থেকে ৩ মন ওজনের গরু ৮০ থেকে ১ লাখ। ৪ থেকে ৫ মন ওজনের গরু ২ থেকে আড়াই লাখ এবং ১০ থেকে ১২ মন ওজনের গরু ৪ লাখে কিনছেন ক্রেতারা।
নেত্রকোনা থেকে গাবতলী হাটে একটি বড় গরু নিয়ে এসেছেন গৃহিণী শেফালি। তিনি বলেন, গরু বাড়িতে পালা। ছোট থেকে লালন পালন করে বড় করেছি। নাম দিয়েছি লাল মাস্তান। এখন মাস্তানের ওজন ১ হাজার ২০০ কেজি। ১৫ লাখ টাকা হলে ছেড়ে দিব। শ্যামলী রিং রোডের বাসিন্দা ফয়েজ আহমেদ জানান, প্রতিবছর এতিমখানায় গরু দান করেন। সকালে হাটে এসে বেশি ঘুরতে হয়নি। কমদামে পছন্দসই একটি লাল গরু কিনেছেন। দাম পড়েছে ১ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। ওজন সাড়ে ৫ মনের কাছাকাছি।
সাভারের ভিশন এগ্রো ফার্মের ম্যানেজার রেজোয়ান বলেন, খামারের ৬০টি গরু হাটে এনেছি। সকাল থেকে ৩টি গরু বিক্রি হয়েছে। লোকজন আসছে প্রচুর। বনিবনা হলে ছেড়ে দিচ্ছি। লাভ বেশি রাখছি না। গাবতলী পশুর হাটের ইজারাদারের প্রতিনিধি সামি জানান, সোমবার রাতেও হাটে শত শত পশুবোঝাই ট্রাক ঢুকেছে। গাবতলীর হাট গরু ছাগলে ভরে গেছে। বুধবার থেকে বিক্রি আরও বাড়বে।
