একটি বদলির জন্য এক কোটি টাকা অফার এসেছিল: শিক্ষা উপদেষ্টা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
শিক্ষার দুর্নীতিচিত্র তুলে ধরতে গিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার জানিয়েছেন, ব্যক্তিগতভাবে তাকে একটি বদলির জন্য এক কোটি টাকা ঘুসের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। বুধবার আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষা ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। শিক্ষাব্যবস্থা স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত করতে জিরো টলারেন্স নীতিতে অবস্থানের কথা উল্লেখ করে তিনি এসব কথা বলেন। উদাহরণ দিয়ে চৌধুরী আবরার বলেন, একটি বড় পদের পদায়নের জন্য আমার কাছে তদবির এসেছিল। এর জন্য প্রথিতযশা একজন বুদ্ধিজীবী তদবির করেছিল। পরে তার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখি তিনি ওই পদের জন্য যোগ্য নন। তখন আমরা তাকে প্রত্যাখ্যান করি। পরবর্তী সময়ে তিনি অন্য মাধ্যমে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন এবং আমাকে একটা অ্যামাউন্ট অফার করেন। টাকাও আমি বলে দিই-এক কোটি টাকা অফার করেছিলেন। তিনি যাকে দিয়ে বলেছিলেন, তিনি আমার পরিচিত। তিনিও একটি প্রতিষ্ঠানে রয়েছেন। আমি আর বিস্তারিত বলতে চাচ্ছি না। আমি বোঝাতে চাচ্ছি, আমার সহকর্মী যারা আছেন, তারা যেন নৈতিক অবস্থানে স্থির থাকেন। আমি পদে থাকা অবস্থায় কোনো দুর্নীতি সহ্য করব না।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ এখন শিক্ষাব্যবস্থার সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। প্রযুক্তিকে এমনভাবে কাজে লাগাতে হবে যেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীরাও মানসম্পন্ন শিক্ষা ও শিক্ষক সুবিধা পান। শিক্ষকদের মর্যাদা ও সম্মানজনক বেতন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ চলছে বলেও জানান তিনি। উপদেষ্টা বলেন, আগামী জুলাই থেকে কলেজ পর্যায়ে অনলাইনে শিক্ষকদের বদলি প্রক্রিয়া চালু করা হবে। এ প্রক্রিয়া হবে স্বচ্ছ ও তথ্যভিত্তিক। পাঠ্যবইয়ের ভুল নিয়ে সরকার সতর্ক অবস্থানে আছে। সামান্য ভুল নিয়েও শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিতে মন সায় দেয় না। তাই আমরা নির্ভুল বই তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছি।
সিআর আবরার বলেন, আমরা এমন একটি শিক্ষাব্যববস্থা গড়তে চাই, যা প্রতিটি শিশুকে জীবনের জন্য প্রস্তুত করে। কেবল পরীক্ষার জন্য নয়। আমাদের অগ্রাধিকার হলো মৌলিক শিক্ষার নিশ্চয়তা, প্রান্তিক শিক্ষার্থীদের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক সহায়তা এবং এমন একটি শিক্ষাক্রম, যা বাস্তব জীবনের সঙ্গে সংযুক্ত। আমরা প্রযুক্তিকে শিক্ষার পরিপূরক হিসাবে ব্যবহার করতে চাই, প্রতিস্থাপক হিসাবে না। আমরা চাই প্রযুক্তি এমনভাবে ব্যবহার হোক, যাতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীও ভালো শিক্ষক, ভালো উপকরণ ও সমর্থনের নাগালে আসে।
বেকারত্ব হ্রাসে কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, চামড়া, ওষুধ, সিরামিকসহ বিভিন্ন শিল্পের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে কার্যকর কারিগরি শিক্ষা পরিকল্পনা করা হচ্ছে। নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতেও বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের, কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলাম, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দোকার এহসানুল কবিরসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
