কঠোর নিরাপত্তায় ঢাকায় স্বস্তির ঈদ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ঘটনা ছাড়া নিরাপদেই ঈদ উদযাপন করেছেন রাজধানীবাসী। এবারের ঈদুল আজহায় রাজধানীর নিরাপত্তায় পুলিশ, র্যাব, আনসারসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পুলিশ ও র্যাবের সাড়ে ৭০০ টহল টিম, শতাধিক চেকপোস্ট, গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার সদস্য দায়িত্ব পালন করেন। সেনাবাহিনীর সদস্যরা মাঠে সার্বক্ষণিক টহল দিয়েছেন। এক হাজারের বেশি আনসার সদস্য নিরাপত্তার কাজ করেছেন। সবমিলিয়ে এবার রাজধানীর নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। ঈদ ঘিরে আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিজেও।
এ বছর ৫ থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত ১০ দিন সরকারি ছুটি। ঈদুল আজহার ছুটিতে রাজধানী ঢাকা ছেড়ে গ্রামে গেছেন বহু মানুষ। এতে অনেকটা ফাঁকা হয়ে পড়ে রাজধানী। সম্প্রতি নগরীতে খুন-ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় ফাঁকা ঢাকার নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত ছিলেন রাজধানীবাসী। এ কারণে ঢাকাকে নিরাপদ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও ছিল কঠোর সতর্কতা।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ঈদ ঘিরে আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি সন্তোষজনক ছিল। বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া রাজধানীসহ অন্যান্য স্থানে কোনো উল্লেখযোগ্য অঘটন ঘটেনি। তাই ঈদের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে আমি মোটামুটি খুশি। সোমবার দুপুরে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। ঈদুল আজহা ও ঈদ-পরবর্তী ছুটিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাজধানীর বিভিন্ন থানা পরিদর্শন করে নিরাপত্তাব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিতে সুইপিং, আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে চেক করা হয়। আবাসিক এলাকায় পুলিশের মোবাইল পেট্রল বাড়ানো হয়েছে। সুষ্ঠু লেনদেনের জন্য বিভিন্ন ব্যাংক ও এটিএম বুথের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ চেকপোস্ট, তল্লাশি ও গাড়ি চেকিং কার্যক্রম জোরদার করে। শপিংমল, কোরবানির পশুর হাট, লঞ্চ-বাস-ট্রেন স্টেশনে মলম পার্টি, ছিনতাইকারী ও জাল নোট কারবারিদের প্রতিরোধে কঠোর অবস্থানে ছিল আইনশৃঙ্খল বাহিনী। বিজিবি সদস্যরা সীমান্ত ছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিতে দায়িত্ব পালন করেছেন।
রাজধানীর নিরাপত্তা নিয়ে ৬ জুন ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, পবিত্র ঈদুল আজহায় রাজধানী ঢাকার একটি ঈদ জামাতও নিরাপত্তার বাইরে থাকবে না।
ফাঁকা ঢাকার নিরাপত্তা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাতের নিরাপত্তায় ৫০০ পেট্রল টিম আর দিনে ২৫০টি টিম থাকবে। পাশাপাশি গাড়ি, ফুট পেট্রল ও মোবাইল পেট্রল থাকবে। আমরা সবাইকে সজাগ করছি, যেসব অফিসার অফিসে থাকেন, বাইরে কম বের হন-তাদেরও দায়িত্ব বণ্টন করে দেওয়া হয়েছে। তারা তদারকি করার জন্য মাঠে থাকবেন। আশা করি কোনো সমস্যা হবে না। এছাড়া সড়কে চেকপোস্ট তল্লাশি থাকবে।
ডিএমপি উপকমিশনার (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান মঙ্গলবার বলেন, ঈদের ছুটিতে রাজধানীজুড়ে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। নিয়মিত টহল ছাড়াও বিশেষ নজরদারি ছিল। যেভাবে প্রত্যাশা করা হয়েছে, দু-একটি ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবেই ঈদ উদযাপিত হয়েছে।
