Logo
Logo
×

শেষ পাতা

দেশ জাতি ও মুসলিম উম্মাহর কল্যাণে বিশেষ মোনাজাত

ত্যাগের মহিমায় ঈদুল আজহা উদযাপিত

বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে উপচে পড়া ভিড়

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ত্যাগের মহিমায় ঈদুল আজহা উদযাপিত

ছবি: সংগৃহীত

যথাযোগ্য মর্যাদা, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য এবং ত্যাগের মহিমায় দেশে ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে। মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। কুরবানির ঈদ হিসাবেও সমাদৃত। শনিবার সকালে সারা দেশে মুসল্লিরা নিজ নিজ এলাকার ঈদগাহ বা মসজিদে ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেন। নামাজের আগে খতিবরা খুতবায় কুরবানির তাৎপর্য তুলে ধরেন। ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাই নামাজ আদায় ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। ঈদের নামাজ শেষে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে সামর্থ্যবান মুসলমানরা পশু কুরবানি করেন।

রাজধানী ঢাকায় ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় হাইকোর্টসংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। সকাল সাড়ে ৭টায় অনুষ্ঠিত ঈদের এই জামাতে অংশ নেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সুপ্রিমকোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, রাজনৈতিক নেতা, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। নামাজে ইমামতি করেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আবদুল মালেক। নামাজ শেষে দেশ ও জাতির এবং মুসলিম উম্মাহর কল্যাণে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

মোনাজাত শেষে খতিব মুফতি মোহাম্মদ আবদুল মালেক প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কোলাকুলি করে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। পরে উপদেষ্টাদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। এরপর প্রধান উপদেষ্টা সবাইকে ঈদ মোবারক জানান। তিনি নিরাপত্তা বলয়ের মধ্য দিয়ে সবার উদ্দেশে হাত নাড়তে নাড়তে ময়দান ছাড়েন। এ সময় জনতার মধ্য থেকে বলতে শোনা যায়, ‘স্যার আপনাকে ৫ বছর চাই।’

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৭টায়। এরপর পর্যায়ক্রমে দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টায়, তৃতীয় জামাত সকাল ৯টায়, চতুর্থ জামাত সকাল ১০টায় এবং পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হয়। এবার উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ ও দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ঈদগাহ ময়দান কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়ায় ঈদুল আজহার ১৯৮তম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৯টায় জামাত শুরু হয়। জামাতে ইমামতি করেন ইমাম মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। এছাড়া দিনাজপুর গোর-এ-শহীদ বড় ময়দানে বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ বিশিষ্টজনরা ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।

ঈদের নামাজ শেষে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে সামর্থ্যবান মুসলমানরা পশু কুরবানি করেন। এবার কুরবানির পশু হিসাবে গরু, ছাগল, মহিষ ও উটসহ বিভিন্ন পশু কুরবানি দেন মুসলমানরা। রাজধানীর পাশাপাশি গ্রামগঞ্জেও আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের মধ্যে কুরবানির মাংস ভাগাভাগি করে নেওয়ার দৃশ্য ছিল চোখে পড়ার মতো। অনেকেই অসহায় ও দরিদ্রদের মধ্যে মাংস বিতরণ করে ঈদের আনন্দকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দেন।

এবার ঈদের টানা ১০ দিন ছুটি থাকায় অনেকেই পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে রাজধানী ছাড়েন। ঈদের দিনও দেশের মহাসড়কগুলোতে ঘরমুখো মানুষের দেখা মিলেছে। ফলে ঢাকা অনেকটা ফাঁকা হয়ে যায়। তবে যারা ঢাকায় ঈদ করেন ছুটির সময়ে তারা মাতেন ঈদ আনন্দে। ঈদের ছুটির দিনগুলোতে ভিড় জমিয়েছেন জাতীয় চিড়িয়াখানা, জিয়া উদ্যান ও নভোথিয়েটারসহ বিভিন্ন পার্কে। দীর্ঘ ছুটিতে চষে বেড়াচ্ছেন পরিবার-পরিজনদের নিয়ে ঢাকার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত। কোথাও কোথাও কিছুটা ভোগান্তি পোহাতে হলেও, মেনে নিয়েছেন সবাই। বলেছেন ঈদের আনন্দই মুখ্য।

ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো ঈদ উপলক্ষ্যে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করছে। ঈদের দিন সরকারিভাবে হাসপাতাল, কারাগার, এতিমখানা ও শিশু সদনে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়। এদিকে এবারের ঈদে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাহিনীগুলোর কঠোর নজরদারিতে ছিল। এছাড়া কুরবানির পশুর বর্জ্য দ্রুত অপসারণে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলো বিশেষ কর্মসূচি নেয়।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম