ষষ্ঠ দিনও উত্তাল লস অ্যাঞ্জেলেস, ফের কারফিউ
দুদিনের মধ্যেই নামছে ৭০০ মেরিন সেনা
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসনবিরোধী অভিযানের বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভের ষষ্ঠ দিনেও উত্তাল ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেস শহর। বুধবার রাতেও দ্বিতীয় দিনের মতো কারফিউ জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। আগের দিনের মতোই ডাউনটাউনের ১ বর্গ কিমি. এলাকায় রাত ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আগামী দুদিনের মধ্যেই ৭০০ মেরিন সেনা নামছে লস অ্যাঞ্জেলেসে। বুধবার এক বিবৃতিতে সেনা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, লস অ্যাঞ্জেলেসে মোতায়েনের জন্য প্রস্তুত ৭০০ মার্কিন মেরিন সেনা তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ শেষ করেছেন। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাদের মাঠে নামানো হবে। রয়টার্স, সিএনএন।
যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরাঞ্চলীয় কমান্ড বলেছে, মেরিনরা স্থানীয় ন্যাশনাল গার্ডের সঙ্গে মিলিত হয়ে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) অফিসারদের নিরাপত্তা দেবেন এবং যারা তাদের কাজে বাধা দেবে বা প্রতিবাদে হস্তক্ষেপ করবে তাদের আটক করতে পারবেন। এদিকে লস অ্যাঞ্জেলেসে ইতোমধ্যেই প্রায় ২ হাজার ন্যাশনাল গার্ড সক্রিয় দায়িত্বে আছেন। বৃহস্পতিবার আরও ২ হাজার গার্ড সদস্য দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত হবেন বলে জানিয়েছেন টাস্কফোর্সের প্রধান মেজর জেনারেল স্কট এম. শেরমান। তবে এই সিদ্ধান্ত ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসমের অনুমতি ছাড়াই নেওয়া হয়েছে। নিউসম বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ অপ্রয়োজনীয় এবং বেআইনি। এই নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলাও করেছে তিনি। বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে একটি মার্কিন ফেডারেল আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
শুক্রবার লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে ইমিগ্রেশন কাস্টমস অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) অভিযান (অবৈধ অভিবাসীদের ধরপাকড়) শুরু করলে এর প্রতিবাদে শহরজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। এর পরই আন্দোলন রূপ নেয় সহিংসতায়। ট্রাম্প ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের নির্দেশ দিলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে ১১ রাজ্যের ১৫টি শহরে। বুধবার পর্যন্ত টানা ষষ্ঠ দিনেও চলে সংঘর্ষ। গণগ্রেফতার অভিযান ও সেনা মোতায়েনের পরিপ্রেক্ষিতে এ দিন সন্ধ্যায় লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে বিক্ষোভ আরও তীব্র আকার ধারণ করে। সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটের দিকে ডাউনটাউন এলএ-তে শুরু হয় প্রথম ‘বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ’ আদেশ। এরপর এলএ পুলিশ ও কাউন্টি শেরিফ বাহিনী বিক্ষোভটিকে ‘অবৈধ সমাবেশ’ ঘোষণা করে রাবার বুলেট ছুড়তে থাকে। রাত গড়াতে থাকলে একপর্যায়ে ডাউনটাউন ঘিরে ফেলে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে আটক করে পুলিশ। অন্যদিকে শহরের রয়েল হাইটস এলাকায় বিক্ষোভের চিত্র ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। সালাজার পার্কে ছোট পরিসরে শুরু হওয়া প্রতিবাদে প্রায় ১০০ জন স্থানীয় বাসিন্দা অংশ নেন। সংগীত, নাচ ও স্লোগানের মাধ্যমে ফেডারেল ইমিগ্রেশন নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান তারা। বিক্ষোভ শুরুর পর থেকে গত কয়েকদিনে ৪০০ জনের বেশি বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে শনিবার ২৭ জন, রোববার ৪০ জন এবং সোমবার ১১৪ জন, এবং মঙ্গলবার প্রায় ২০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে এলএপিডি। এছাড়া বুধবার রাতে সিয়াটলে ৮ জন, টুকসন শহরে ৩ জন এবং লস অ্যাঞ্জেলেসের ডাউনটাউনে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
