Logo
Logo
×

শেষ পাতা

ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে গভর্নর

অর্থ পাচারে অভিযুক্তদের সঙ্গে ‘সমঝোতার’ কথা ভাবা হচ্ছে

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

অর্থ পাচারে অভিযুক্তদের সঙ্গে ‘সমঝোতার’ কথা ভাবা হচ্ছে

ফাইল ছবি

বিদেশে অর্থ পাচারে অভিযুক্ত ধনকুবেরদের সঙ্গে আর্থিক সমঝোতায় সরকার পৌঁছতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে তিনি বলেন, অপেক্ষাকৃত কম গুরুতর মামলাগুলোর ক্ষেত্রে আর্থিক সমঝোতা ‘অন্যতম বিকল্প’ হিসাবে বিবেচিত হতে পারে।

সম্প্রতি ঢাকায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আহসান এইচ মনসুর বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কথিত কার্যকলাপের প্রকৃতির ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপ নির্ভর করবে। তিনি বলেন, ‘আমরা লিটিগেশন ফান্ডিংয়ের দিকে নজর দিচ্ছি এবং এ নিয়ে খুবই ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি। আমরা চাই-যতটা সম্ভব অর্থ এ উৎস থেকে জোগাড় করা।’

সরকারের সম্পদ পুনরুদ্ধার কার্যক্রমে নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর মনসুর আরও বলেন, ‘যদি আইন লঙ্ঘনের প্রকৃতি তুলনামূলকভাবে হালকা ধরনের হয়... তবে আমরা দেওয়ানি মামলা করব এবং সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে আর্থিক সমঝোতার কথা বিবেচনা করা হবে।’ তবে সম্ভাব্য কোন ব্যক্তি এ প্রক্রিয়ার আওতায় আসতে পারেন-সে বিষয়ে তিনি কোনো উদাহরণ দেননি। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কাছ থেকে অর্থ পুনরুদ্ধারে ভবিষ্যৎ আন্তর্জাতিক মামলা পরিচালনায় তিনি ১০ কোটি ডলার পর্যন্ত অর্থ সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন। মামলা পরিচালনায় খরচের মধ্যে আছে-আইনজীবীর ফি, সংস্থাগুলোর ব্যয় ইত্যাদি। ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবদনে বলা হয়, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত আগস্টে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার বলছে-বিগত সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দেশ থেকে বহু বিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন। সরকারের নির্দেশনায় তৈরি ও গত ডিসেম্বর মাসে প্রকাশিত অর্থনৈতিক শ্বেতপত্রে অনুমান করা হয়-শেখ হাসিনার শাসনামলে দেশ থেকে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন (২৩ হাজার ৪০০ কোটি) ডলার পাচার হয়েছে। আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) সাবেক কর্মকর্তা আহসান মনসুর ও অন্যসব সরকারি কর্মকর্তা অভিযোগ করেছেন-সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মিত্ররা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ দখল করে জাল ঋণ নিয়ে অথবা সরকারি অবকাঠামোগত প্রকল্প থেকে আত্মসাৎ করে দেশের বাইরে অর্থ পাচার করেছেন।

শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন ইতোমধ্যে শেখ হাসিনার পরিবারসহ আগের সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী পরিবারগুলোর বিরুদ্ধে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ১১টি তদন্ত শুরু করেছে। বর্তমান প্রশাসন কিছু অভ্যন্তরীণ ব্যাংক অ্যাকাউন্টও জব্দ করেছে এবং শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে দেশ থেকে পাচার করা সম্পদ পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টায় বিদেশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা করছে। পাচার করা অর্থ শনাক্ত ও পুনরুদ্ধারে এ ধরনের প্রচেষ্টা এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে মুহাম্মদ ইউনূস লন্ডন সফরকালে যুক্তরাজ্য সরকারের কাছ থেকে আরও ‘উৎসাহব্যঞ্জক সহযোগিতা’ কামনা করেন। ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন, ‘এটা চুরি হওয়া অর্থ। আইনগতভাবে এবং আমি বলব নৈতিকভাবেও যুক্তরাজ্য সরকারের উচিত এ অর্থ শনাক্ত করতে সহায়তা করা।’

এদিকে, শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের সমর্থকদের অভিযোগ-বিগত সরকারের কথিত দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযানের নামে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করছে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম