Logo
Logo
×

শেষ পাতা

ডাকসুর নির্বাচন কমিশনকে স্বাগত জানিয়েছেন ছাত্রনেতারা

Icon

মাহাদী হাসান

প্রকাশ: ১৮ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ডাকসুর নির্বাচন কমিশনকে স্বাগত জানিয়েছেন ছাত্রনেতারা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন করার জন্য নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিনকে নির্বাচন কমিশনের প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

ক্যাম্পাসের সক্রিয় ছাত্র সংগঠনগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে ডাকসু নির্বাচন কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসের পরিবেশ যাতে বিনষ্ট না হয় সেজন্য প্রশাসনকে আরও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

২০১৯ সালের মার্চ মাসে সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আর এই নির্বাচনের মেয়াদ এক বছর হওয়ায় ২০২০ সালের মার্চ মাসে শেষ হয় মেয়াদ। দীর্ঘ পাঁচ বছর অতিক্রম হলেও হয়নি নতুন নির্বাচন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর নতুন করে আলোচনায় আসে ডাকসু নির্বাচন।

এই নির্বাচন করার জন্য ইতোমধ্যে একটি টাইমলাইনও প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আর এরই অংশ হিসাবে গত সোমবার উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিনকে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এটাকে নিয়ে ছাত্র সংগঠনগুলো যুগান্তরকে তাদের প্রতিক্রিয়া জানান।

ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, আমরা প্রথম থেকেই ডাকসু নির্বাচন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সহযোগিতা করে আসছি। বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনের জন্য যে কমিশন গঠন করেছে সেটাকে আমরা স্বাগত জানাই। ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংস্কারের জন্যও অনেক সংস্কার প্রস্তাবনা দিয়েছি। তার কিছু তারা রেখেছে আবার অনেক কিছুই রাখেনি। ছাত্রদল গণতান্ত্রিক উপায়ে ছাত্রপ্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য সব সময়ই ইতিবাচক। নির্বাচন কমিশনের কাছে আমাদের প্রত্যাশা হচ্ছে পরবর্তী যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সব স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে যাতে আলোচনা করা হয়।

নির্বাচনি পরিবেশ নিয়ে তিনি আরও বলেন, ডাকসু নির্বাচনের আগে ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচারের আওতায় আনতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে। কারণ আমরা দেখতে পাচ্ছি যারা ফ্যাসিস্টদের হাত শক্তিশালী করেছে সেই শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এখনো বহালতবিয়তে আছে। এরাই তো ডাকসু নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করবে। সেক্ষেত্রে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। এছাড়াও হলগুলোতে ছাত্রলীগের পদধারীরা এখনো অবস্থান করছে। তাদের বিরুদ্ধেও কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ফলে ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ছাড়া নির্বাচন করা কঠিন হয়ে যাবে।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) ঢাবি শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান পরবর্তী দ্রুত সময়ের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন হওয়া উচিত ছিল। আমরা দেখেছি বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই নির্বাচন দিতে প্রথম থেকেই উদাসীন। তবে এই নির্বাচন কমিশনকে আমরা স্বাগত জানাই। আশা করি অতি দ্রুত সময়ের মধ্যেই তারা নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবে।

ঢাবি ছাত্রশিবিবের সভাপতি এস এম ফরহাদ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ডাকসু নির্বাচনের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। সেই প্রেক্ষাপটে নির্বাচন কমিশন গঠনকে আমরা নির্বাচনের পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাওয়াকে বুঝি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নির্বাচনের জন্য গঠনতন্ত্র সংস্কার করেছে সেটি আরও ইনক্লুসিভ হওয়া দরকার ছিল। ডাকসু নির্বাচন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে আরও সতর্কভাবে আগাতে হবে। নির্বাচন বানচালের জন্য যাতে ক্যাম্পাসের পরিবেশ কেউ ঘোলাটে করতে না পারে সেজন্য প্রশাসনকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।

ছাত্র অধিকার পরিষদের সভপাতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, আমরা দীর্ঘদিন আন্দোলনের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করেছে। এটাকে স্বাগত জানাই। তবে এই নির্বাচন কমিশনকে ছয় কার্যদিবসের মধ্যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার আলটিমেটাম দিয়েছি। আশা করি এবার নির্বাচনের তারিখের জন্য আমাদের কোনো আন্দোলন করতে হবে না। এটা ছাড়াই কমিশন তারিখ ঘোষণা করবে।

তিনি আরও বলেন, একটি পক্ষ ডাকসু নির্বাচন পেছানোর জন্য নানা ধরনের টালবাহানা করছে। নির্বাচন কমিশন ঘোষণার দিন পতিত সরকারের লোকজন ক্যাম্পাসের পাশে মিছিল ও ককটেল ফুটিয়েছে। ক্যাম্পাসের ভেতরেও ককটেল পাওয়া যায় ওই দিন। যারা নির্বাচনকে পেছাতে চান তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বুলেটকে উপেক্ষা করে হাসিনা সরকারকে হটিয়েছে। তাই তাদের ভয় দেখিয়ে ডাকসু নির্বাচন পেছানো যাবে না।

নির্বাচন সম্পর্কে জানতে চাইলে ডাকসুর প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, আমরা এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাইনি। চিঠি পেলে সব স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে আলোচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পরামর্শে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করব।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম