শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) এক ছাত্রীকে মেসে ডেকে নিয়ে অচেতন করে দলবদ্ধ ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলেছে, ধর্ষণের ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।

জানা যায়, প্রায় দেড় মাস আগের ওই ধর্ষণের ঘটনায় শুক্রবার সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী ছাত্রী।

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত তারা আদনান ও স্বাগত দাস পার্থ। তাদের মধ্যে শান্ত ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন এবং জুলাই আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার অভিযোগে করা মামলার আসামি। অন্যদিকে পার্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যবিষয়ক সংগঠন দিক থিয়েটারের কোষাধ্যক্ষ। কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউল হক বলেন, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টায় অভিযুক্ত দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একজনকে ক্যাম্পাস থেকে এবং অপরজনকে সুরমা আবাসিক এলাকা থেকে আটক হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আপাতত তাদের পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। তাদের আদালতে তোলা হবে। মামলার এজাহার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ২ মে সুরমা আবাসিক এলাকার একটি মেসে ওই ছাত্রীকে ডেকে নিয়ে যায় শান্ত ও পার্থ। পরে তাকে অচেতন করে ধর্ষণ করে। এ সময় তারা ভিডিও ধারণ করে রাখে। পরে তা অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে বিষয়টি গোপন রাখতে বাধ্য করে। ভুক্তভোগী ছাত্রী শুক্রবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০-এর ৯(৩) ধারা ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২-এর ৮(১)/৮(২) ও ৮(৩) ধারায় মামলা করেন। এতে শান্তকে এক নম্বর ও পার্থকে দুই নম্বর আসামি করা হয়। এছাড়া দুই থেকে তিনজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ইসমাঈল হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর বরাবর ধর্ষণের লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। অভিযোগ পাওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যেই ডিজিটাল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে অভিযুক্তদের শনাক্ত করে প্রক্টর অফিসে হাজির করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে আমরা ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সহায়তায় পরবর্তী প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় শুক্রবার বিকালে ক্যাম্পাসে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সহপাঠী ও বিভিন্ন সংগঠনের শিক্ষার্থীরা।