মুরাদনগরে পুলিশ হেফাজতে বিএনপি কর্মীর মৃত্যু
শরীরজুড়ে আঁচড় ও ক্ষতচিহ্ন
কুমিল্লা ব্যুরো
প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
কুমিল্লার মুরাদনগরের বাঙ্গরা থানায় ইয়াবাসহ আটকের কয়েক ঘণ্টা পর ‘পুলিশ হেফাজতে’ মারা যাওয়া বিএনপি কর্মী শেখ জুয়েলের শরীরে বেশ কিছু ক্ষত ও আঁচড়ের চিহ্ন দেখা গেছে। লাশের প্রাথমিক সুরতহালে এ চিহ্ন শনাক্ত হয়। তার মৃত্যুতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। অপরদিকে পরিবারের দাবি-পুলিশের নির্যাতনে জুয়েলের মৃত্যু হয়েছে। এতে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে পুলিশের পক্ষ থেকে অস্বাভাবিক মৃত্যু ও মাদক উদ্ধারের পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে বাঙ্গরা থানা সদরে অভিযান চালিয়ে শেখ জুয়েলসহ ৫ জনকে আটক করে পুলিশ। আটকের কয়েক ঘণ্টা পর রাতে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার মৃত্যু হয়।
পরিবার জানায়, জুয়েল ইন্টারনেটের ব্যবসা করতেন। তিনি মাদকের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। পুলিশ ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাকে গ্রেফতার করে নির্যাতন করেছে। পুলিশের নির্যাতনে মারা যাওয়ার পর তাকে মাদক ব্যবসায়ী বানানোর চেষ্টা চলছে। হত্যাকাণ্ডকে আড়াল করতে তার বিরুদ্ধে মাদকের তকমা দেওয়া হচ্ছে। পরিবারের পক্ষ থেকে ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করা হয়েছে। এদিকে পুলিশ বলছে, লাশের ময়নাতদন্তের মাধ্যমেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। পুলিশের পক্ষ থেকেও বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। মুরাদনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাকিব হাছান খান জুয়েলের লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। এতে বড় ধরনের কোনো জখমের কথা উল্লেখ করা হয়নি। বলা হয়েছে, জুয়েলের ডান হাতের কবজির ওপরে দুটি আঁচড়ের দাগ, পিঠের ডান দিকে আঘাতের চিহ্ন, কোমরের বাঁ-পাশে আঁচড়, বাম পায়ে হালকা রক্তাক্ত ক্ষত ও পেছনে আঁচড়ের দাগ রয়েছে। পুলিশ বলেছে, জুয়েলকে গ্রেফতার ও থানা থেকে হাসপাতালে নেওয়া হয় গাড়িতে। এ সময় তার শরীরে এসব আঁচড় ও ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। এগুলো নির্যাতনের নয়।
মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, জুয়েল বিএনপির একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তার ভাই শাহ পরান বাঙ্গরা পূর্ব ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক। জুয়েলকে পরিকল্পিতভাবে নির্যাতনে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের শাস্তি দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে কুমিল্লার পুলিশ সুপার (এসপি) নাজির আহমেদ খান বলেন, ‘পুলিশ হেফাজতে জুয়েলকে নির্যাতন করা হয়নি। তিনি হার্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। তার বুকে ব্যথা শুরু হলে হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি (জুয়েল) মারা যান।’
