তজুমদ্দিনে ৪ লাখ টাকা চাঁদা দাবি
গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, স্বামীকে নির্যাতন
ভোলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ভোলার তজুমদ্দিনে ৪ লাখ টাকা চাঁদা দাবিতে এক ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে আহত এবং স্ত্রীকে আটকে রেখে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা শ্রমিক দলের যুগ্মসম্পাদক মো. ফরিদ উদ্দিন, মো. আলাউদ্দিন, মো. রাসেল ও সবুজ গ্রুপের বিরুদ্ধে। ৯৯৯ কলে পুলিশ রোববার রাতে ভিকটিমকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহব্বত খান জানান, এমন কোনো ঘটনার কথা তার জানা নেই। সেভাবে অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তজুমদ্দিন সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অরিত সরকার বলেন, ঘটনার সঙ্গে ওই ব্যবসায়ীর দ্বিতীয় স্ত্রী জড়িত থাকার বিষয় রয়েছে। তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযোগ নেওয়া হয়েছে। মামলা নেওয়া হবে।
ঘটনার পর বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে উপজেলা বিএনপি নেতারা ঘটনা ধমাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম মোস্তফা মিন্টু বলেন, বিষয়টি তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখেছেন। এর বেশি কিছু তিনি জানেন না। উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব ওমর আসাদ রিন্টু বলেন, এমন ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের শাস্তি দাবি করছি। বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
অভিযোগকারী ব্যবসায়ীর বাড়ি উপজেলার শম্ভুপুর ইউনিয়নে। তিনি ঢাকায় ব্যবসা করেন। ১৫ দিন আগে বাড়ি আসেন। তার দ্বিতীয় স্ত্রীই শনিবার রাতে প্রথম ডেকে নেন। এরপর শ্রমিক দলের নেতা ফরিদের নেতৃত্বে নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। তজুমদ্দিন সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. রাসেল বলেন, এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত নন। তার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে অপপ্রচার করা হচ্ছে। তবে ঘটনার সঙ্গে একটি গ্রুপ জড়িত রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
হামলার শিকার ব্যবসায়ী জানান, শনিবার রাতে তার দ্বিতীয় স্ত্রী তাকে ফোন করে কামারপট্টিতে আসতে বলেন। যাওয়ার পরই ফরিদ, রাসেল, আলাউদ্দিনসহ ৫-৭ জন তার কাছে ৪ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাকে পাইপ দিয়ে মারতে শুরু করেন। তারা বলতে থাকেন তোর দ্বিতীয় স্ত্রী তোর সঙ্গে আর থাকবে না। এজন্য টাকা দিবি। একপর্যায়ে তার প্রথম স্ত্রীকে টাকা নিয়ে এসে স্বামীকে ছাড়িয়ে নিয়ে যেতে বলে। রাত বেশি হওয়ায় ওই রাতে আর প্রথম স্ত্রী না আসায় রাতভর তার ওপর চলে নির্যাতন। রোববার বেলা ১১টার দিকে প্রথম স্ত্রী আসেন। এত টাকা কোথায় পাবে বললে ফের মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে অটোচালককে দিয়ে বাড়ি থেকে ১০ হাজার টাকা এনে দেন তাদের হাতে। টাকা কম দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে ফরিদ ও রাসেল। বেলা ১২টার দিকে আহত ব্যবসায়ীকে চা খাওয়ানোর কথা বলে ৩-৪ জন বাইরে নিয়ে যায়। এ সুযোগে প্রথম স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। বাড়ি এসে প্রথম স্ত্রী দুইবার আত্মহত্যা করতে যান। পাশের বাড়ির লোকজন তাকে উদ্ধার করে। এরপর রাতে ৯৯৯ নম্বরে কল দিলে পুলিশ ভিকটিমকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
