চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের কমিশনার জাকির বরখাস্ত
এনবিআরের আরও ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে দুদক
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সরকারের নির্দেশ অমান্য করে নির্ধারিত দিনে অফিস বন্ধ রাখায় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের কমিশনার (চলতি দায়িত্ব) মো. জাকির হোসেনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ সময় তিনি বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন। মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুর রহমান খান-এর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এদিকে, দুর্নীতির অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আরও পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার দুদকের জনসংযোগ দপ্তরের সহকারী পরিচালক তানজির আহমেদ এ তথ্য জানান। এই পাঁচজনের তিনজন এনবিআরের শাটডাউন কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতাধীন কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন ২১ ও ২৮ জুন এনবিআর ও এর অধীনস্থ কাস্টমস এবং ভ্যাট ও আয়করসহ রাজস্ব আদায়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্যান্য সব দপ্তর খোলা রাখার নির্দেশনা অমান্য করেছেন। ২৮-২৯ জুন যথাক্রমে শনি ও রোববার কাস্টম হাউজ, চট্টগ্রাম বন্ধ রেখে আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করে সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ক্ষতি করেছেন। এ কারণে তার বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক বিভাগীয় কার্যধারা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি চাকরি (শৃঙ্খলা) বিধিমালা, ২০১৮ এর ধারা ৩৯(১) অনুযায়ী তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়ে লিখিত ব্যাখ্যা চেয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে এই ব্যাখ্যা দাখিল করতে বলা হয়েছে। জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এদিকে, এর আগে রোববার দুদক এনবিআরের ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরুর কথা জানায়। তাদের মধ্যে পাঁচজনও এনবিআর আন্দোলনে নেতৃত্ব পর্যায়ের বলে জানা গেছে। নতুন করে যাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তারা হলেন-এনবিআরের অতিরিক্ত কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সদস্য আব্দুল রশীদ মিয়া, সদস্য লুতফুল আজীম, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, উপকর কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ শিহাবুল ইসলাম এবং যুগ্ম কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সদস্য মো. তারেক হাছান।
দুদক জানিয়েছে, এনবিআরের কিছু অসাধু সদস্য ও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুসের বিনিময়ে করদাতাদের কর ফাঁকির সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক ও এনবিআরের কর্মকর্তারা নিজেরা লাভবান হতে করের পরিমাণ কমিয়ে দিতেন বলেও অভিযোগ আছে। এক্ষেত্রে প্রতিবছর সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা ঘুস না পেয়ে কর ফাঁকি দেওয়ার মিথ্যা মামলা করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিককে হয়রানি করেন।
এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে এক সপ্তাহের কলমবিরতি, অবস্থান কর্মসূচি ও সবশেষ দুদিনের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ চলাকালে রোববার এনবিআরের ছয় কর্মকর্তার দুর্নীতির অনুসন্ধানের ঘোষণা দেয় দুদক। এরপর সোমবার থেকে কাজে ফেরেন আন্দোলনকারীরা।
