Logo
Logo
×

শেষ পাতা

পাটগ্রাম থানায় হামলা করে ২ আসামি ছিনতাই

Icon

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

পাটগ্রাম থানায় হামলা করে ২ আসামি ছিনতাই

লালমনিরহাটের পাটগ্রামে পাথরবাহী ট্রাক থেকে টাকা আদায়ের দায়ে দুজনকে কারাদণ্ডের ঘটনায় থানায় হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। পুলিশের দাবি ‘দুষ্কৃতকারীরা’ এ ঘটনা ঘটিয়ে দণ্ডিত দুজনকে ছিনিয়ে নিয়েছে। তবে কোয়ারির ইজারাদাররা বলছেন, ঘুসের টাকা না পেয়ে দুজনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেওয়া হয়েছে। তাদের দেখতে গেলে এক ইজারাদারসহ অপর ব্যবসায়ীকে বেধড়ক মারধর করে পুলিশ। খবর পেয়ে অন্যান্য ব্যবসায়ী ও লোকজন থানায় গেলে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, পাটগ্রাম উপজেলার ৯টি মৌজায় সরকার সম্প্রতি সনাতনী পদ্ধতিতে পাথর-বালু উত্তোলনে ইজারা দেওয়া হয়। দরপত্রের মাধ্যমে পাঁচটি পেয়েছেন জাহাঙ্গীর মোস্তাজির চপল আর চারটি পেয়েছেন মাহমুদ হোসেন।

ইজারা দেওয়ার পর থেকে পাথরবাহী ট্রাক থেকে প্রতিদিন অবৈধভাবে ‘চাঁদা’ আদায়ের অভিযোগ ওঠে। বুধবার রাতে উপজেলার সরেওর বাজার এলাকায় পাথরবাহী ট্রাক থেকে টাকা আদায়ের সময় সোহেল রানা ও বেলাল হোসেন নামের দুজনকে আটক করে পুলিশ। পরে তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করা হয়। আদালত প্রত্যেককে এক মাস করে কারাদণ্ড দেন।

পুলিশ জানায়, ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম শেষে রাত সোয়া ১১টার দিকে দণ্ডপ্রাপ্ত দুজনকে পুলিশের গাড়িতে থানায় আনা হয়। এরপরই বেশ কিছু লোক থানায় হামলা করে দুজনকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় ভাঙচুরও করে তারা। এ ঘটনায় আহত হয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থানার উপপরিদর্শক সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন বৃহস্পতিবার বলেন, ‘ইউএনও স্যারের হুকুম তামিল করতে অন্য কনস্টেবলসহ দণ্ডিত দুজনকে থানায় নিয়ে আসামাত্রই হামলা চালিয়ে আমাদের মারধর করে তাদের (দণ্ডিত) ছিনিয়ে নিয়ে যায়।’

পুলিশ আরও জানায়, বেশকিছু লোকজন থানায় এসে দুজনকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য বাগবিতণ্ডা শুরু করে। একপর্যায়ে বিভিন্ন কক্ষের আসবাবপত্র, ল্যাপটপ, পুলিশের গাড়ি ও মোটরমাইকেল ভাঙচুর করে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় পুলিশসহ অন্তত ২০ জন আহত হন।

পাটগ্রাম থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ‘কয়েকশ লোক আকস্মিকভাবে থানায় ঢুকে ভাঙচুর চালিয়ে দণ্ডিত দুজনকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। এ সময় পুলিশ সদস্যদের মারধর করা হয়।’

পুলিশের রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক এইচএম রকিব হায়দার ও পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম বৃহস্পতিবার দুপুরে পাটগ্রাম থানা পরিদর্শন করেন। পরে ডিআইজি সাংবাদিকদের বলেন, ‘সিসি ক্যামেরার ফুটেজ আমরা সংগ্রহ করেছি। ফুটেজ দেখে অপরাধীদের শনাক্ত করা হবে। কোনো দলীয় পরিচয় এখানে থাকবে না। দুষ্কৃতকারী যে দলেরই হোক; তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এদিকে এ ঘটনা নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে বালু-পাথরমহাল ইজারাদারদের একজন মাহমুদ হোসেন সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি বলেন, ‘থানায় আনা কোয়ারির দুই কর্মীকে দেখতে গেলে ওসি আমাকে ও অপর ইজারাদার বাদশা জাহাঙ্গীর মোস্তাজির চপলকে শারীরিকভাবে আহত করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ব্যবসায়ী মহলের লোকজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা থানার সামনে জড়ো হলে ওসির নির্দেশে পুলিশ নির্বিচারে গুলি-টিয়ারশেল ছোড়ে।’ তিনি বলেন, ‘সদ্য যোগদানকারী ইউএনও ও ওসি দাবিকৃত ১৫ লাখ টাকা ঘুস না পেয়ে আমাদের দুই কর্মীকে ধরে এনে কারাদণ্ড দিয়েছেন।’

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম