Logo
Logo
×

শেষ পাতা

মুরাদনগরে ধর্ষণকাণ্ড: মাস্টারমাইন্ড শাহ পরান গ্রেফতার

Icon

কুমিল্লা ব্যুরো

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

মুরাদনগরে ধর্ষণকাণ্ড: মাস্টারমাইন্ড শাহ পরান গ্রেফতার

প্রতীকী ছবি

কুমিল্লার মুরাদনগরে সংখ্যালঘু নারীকে ধর্ষণ ও বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনার মাস্টারমাইন্ড ফজর আলীর ভাই শাহ পরানকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। বৃহস্পতিবার বিকালে বুড়িচং উপজেলায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার শাহ পরান ধর্ষণ মামলার মূল আসামি ফজর আলীর ছোট ভাই এবং ওই নারীকে মারধর ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনার মূলহোতা বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে তাকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লার র‌্যাব-১১-এর সিপিসি-২-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাহমুদুল হাসান। তিনি বলেন, ঘটনার পর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন শাহ পরান। বৃহস্পতিবার বিকালে বুড়িচং উপজেলা সদরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছে ধর্ষণের ঘটনার ছবি ও ভিডিওসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার মূলহোতা এই শাহ পরান। পরে সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।

মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান বলেন, ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় শাহ পরানের সম্পৃক্ততার বিষয়টি পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে। ভুক্তভোগী নারীর করা মামলার এজাহারভুক্ত এই আসামিকে ইতোমধ্যে গ্রেফতারের বিষয়টি আমাদের জানিয়েছে র‌্যাব। থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

ডাক্তারি পরীক্ষা ও জবানবন্দি নিয়ে অনিশ্চয়তা : মুরাদনগরে ধর্ষণের শিকার নারীর মেডিকেল পরীক্ষা এবং আদালতে জবানবন্দি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ওই নারীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে ডাক্তারি পরীক্ষা ও আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি এখনো নিতে পারেননি তদন্ত কর্মকর্তা। ভিকটিম মেডিকেল পরীক্ষা করাতে আগ্রহী নন মর্মে চিকিৎসকদের কাছে লিখিত দিয়েছেন। এতে বিধি অনুসারে বিচার কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি হতে পারে বলে মতামত দিয়েছেন আইনজীবীরা। এদিকে ভিকটিমকে নির্যাতন এবং বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের ঘটনায় জড়িত ৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। তারা হলেন ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি মোহাম্মদ আলী সুমন, সহযোগী রমজান, নারীকে বিবস্ত্রকারী আনিক ও আরিফ। বৃহস্পতিবার দুপুরে আমলি আদালত-১১ এর বিচারক মমিনুল হক তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রুহুল আমিন ওই চার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। জানা গেছে, চাঞ্চল্যকর ওই ধর্ষণ মামলার আসামি ফজর আলী চিকিৎসাধীন থাকায় তাকেও আদালতে তোলা যায়নি। মুরাদনগরের বাহেরচর গ্রাম, যেখানে ঘটে যায় নারীর ওপর পাশবিক নির্যাতনের ভয়াল ঘটনা। ধর্ষণের পর নিপীড়নের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হয় সামাজিক মাধ্যমে। যা দেখে স্তব্ধ হয়ে পড়ে গোটা দেশ। ঘটনার পর পুলিশের তদন্তে উঠে আসে ধর্ষণ মামলার আসামি ফজর আলীকে শায়েস্তা করতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নিয়ে একটি পরিকল্পনা সাজায় তার ছোট ভাই শাহপরান। ঘটনার দিন তারাই ফজর ও ভিকটিমকে মারধর করে ভিডিও ছড়িয়ে দেয়। ধর্ষণ মামলায় ফজর ও পর্নোগ্রাফি আইনে চারজনকে গ্রেফতার করা হলেও এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে শাহপরান। কুমিল্লা জজ কোর্টের সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট তাহমিনা বেগম বলেন, এখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাফিলতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভিকটিমকে যে কোনোভাবেই মেডিকেল পরীক্ষা করানোর জন্য উদ্বুদ্ধ করা দরকার ছিল। কারণ মেডিকেল পরীক্ষা ছাড়া আইনি প্রক্রিয়ায় শেষ পর্যন্ত বিচার করতে সমস্যা হবে। পুলিশের দাবি, ভুক্তভোগী রাজি না হওয়ায় ডাক্তারি পরীক্ষা করা যাচ্ছে না। মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান বলেন, ভিকটিমকে ডাক্তারি পরীক্ষা করার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি রাজি হননি। এ মর্মে ডাক্তারের কাছে তিনি লিখিত দিয়ে এসেছেন।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম