Logo
Logo
×

শেষ পাতা

ট্রাম্পের ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ পাশ

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ট্রাম্পের ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ পাশ

ছবি: সংগৃহীত

ইলন মাস্কের হুমকি সত্ত্বেও অবশেষে পাশ হয়ে গেল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বহুল আলোচিত ‘বিগ বিউটিফুল বিল’। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার কংগ্রেসের রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে মাত্র ৪ ভোটে কর হ্রাস ও সরকারি ব্যয়ের বিশাল এ প্যাকেজ পাশ হয়। এর আগে মঙ্গলবার কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে কোনো রকমে উতরে যায় বিলটি। মাত্র এক ভোটের ব্যবধানে পাশ হয় বিলটি। পক্ষে ভোট পড়ে ৫১টি আর বিপক্ষে ৫০টি। বিলটির পক্ষে ৫১তম ভোটটি দেন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স। বিলটির বিপক্ষে ভোট দেওয়াদের বেশির ভাগই ডেমোক্র্যাট। তবে, তিন রিপাবলিকানও ট্রাম্পের বিগ বিউটিফুল বাজেটের বিপক্ষে ভোট দেন। বিবিসি, আলজাজিরা, সিএনএন।

প্রতিনিধি পরিষদে ২১৮-২১৪ ভোটের ব্যবধানে পাশ হয়েছে বিলটি। পরে এতে স্বাক্ষর করেন স্পিকার মাইক জনসন। এখন ট্রাম্প স্বাক্ষর করলেই এটি আইনে পরিণত হবে। কংগ্রেসে এই বিলটির পাশ হওয়াকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্য বড় জয় হিসাবে দেখা হচ্ছে। কারণ, বিলটি নিয়ে ট্রাম্পের নিজ দলেই তুমুল বিরোধিতা ছিল। শেষ পর্যন্ত সেটি পাশ হওয়ায় রিপাবলিকান পার্টির জ্যেষ্ঠ সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

কী আছে বিলটিতে : এই বিলে কর কমানো, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে বরাদ্দ কমানো, সেনাবাহিনীর সক্ষমতা বাড়ানো ও অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে খরচ বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। বিলটি ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট হিসাবে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদকালে দেওয়া কর ছাড়েরই সম্প্রসারিত রূপ।

বিলে কম আয়ের মার্কিন নাগরিকদের জন্য মেডিকেইড নামের স্বাস্থ্য কর্মসূচি ও খাদ্যসহায়তা কর্মসূচির খরচ থেকে প্রায় ৯৩ হাজার কোটি ডলার কাটছাঁটের কথা বলা হয়েছে। এতে লাখ লাখ আমেরিকান স্বাস্থ্যবিমার বাইরে চলে যাবেন। এছাড়াও, এই বিলটি পরবর্তী ১০ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের বাজেট ঘাটতি ৩.৩ ট্রিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে বলে অনুমান করছে কংগ্রেশনাল বাজেট অফিস (সিবিও)।

এই বিলের মাধ্যমে ধনী ব্যক্তি ও বড় করপোরেটদের জন্য আয়কর কমানো হয়েছে। ২০১৭ সালে ট্রাম্পের আমলে যে কর ছাড় আইন পাশ হয়েছিল, এটি সে আইনের স্থায়ী রূপ দিচ্ছে। টিপস, ওভারটাইম ও ব্যবসা খাতের গবেষণা ও উন্নয়নের (আরঅ্যান্ডডি)-এ ২০২৮ সাল পর্যন্ত কিছু অস্থায়ী কর ছাড় আনা হয়েছে। স্টেট ও লোকাল ট্যাক্স ডিডাকশনের সীমা অস্থায়ীভাবে ৪০ হাজার ডলার করা হয়েছে। এতে উচ্চ করের রাজ্যগুলোতে বসবাসকারী ধনীরা উপকৃত হবে। চাইল্ড ট্যাক্স ক্রেডিট আরও ২০০ ডলার বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে

প্রস্তাবিত বিলটিতে সীমান্ত অবকাঠামো সম্প্রসারণের জন্য ৪৬.৫ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এই বিলের আওতায় ডিটেনশন সেন্টারগুলোতে ১ লাখ অতিরিক্ত শয্যা যুক্ত করা হচ্ছে। পাশাপাশি আরও ১০ হাজার ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) অফিসার নিয়োগের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এছাড়াও সীমান্ত অতিক্রমের চেষ্টাকারী বা আশ্রয় সংক্রান্ত নিয়ম লঙ্ঘনকারীদের জন্য নতুন জরিমানা ও শাস্তির বিধান করা হয়েছে।

মেডিকেইড ও এসএনএপি (ফুড স্ট্যাম্প) কর্মসূচির অর্থায়নে বড় ধরনের ছাঁটাই করা হয়েছে। ৬৫ বছরের নিচের কর্মক্ষম, কিন্তু সন্তানহীন ব্যক্তিদের জন্য কঠোর কর্মসংস্থান শর্ত আরোপ করা হয়েছে। এর ফলে প্রায় ১ কোটি ৭০ লাখ মানুষ স্বাস্থ্যবিমা হারাতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গ্রাম এলাকার হাসপাতালগুলোর সহায়তায় ৫০ বিলিয়ন ডলারের একটি ফান্ড তৈরি করা হয়েছে। তবে সমালোচকেরা বলছেন, এই তহবিল সামগ্রিক ক্ষতির সিকি ভাগও নয়। প্রতিরক্ষা খাতে ১৫০ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে, যার মধ্যে ‘গোল্ডেন ডোম’ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য বরাদ্দ ২৫ বিলিয়ন ডলার। আর মহাকাশ গবেষণায় ১০ বিলিয়ন ডলার রাখা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের (আইএসএস) কার্যকারিতা শেষ হলে একে ৩২৫ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এছাড়াও, বিলটিতে নবজাতকদের জন্য ‘ট্রাম্প অ্যাকাউন্টস’ নামে একটি নতুন ১ হাজার ডলারের সঞ্চয় কর্মসূচি চালু করার কথা বলা হয়েছে। অন্যদিকে, আর্থিকভাবে সচ্ছল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এনডোউমেন্টের (স্থায়ী তহবিল) ওপর নতুন করে কর দিতে হবে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম