Logo
Logo
×

শেষ পাতা

উখিয়া-টেকনাফে পানিবন্দি ৬০ হাজার পরিবার

Icon

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

উখিয়া-টেকনাফে পানিবন্দি ৬০ হাজার পরিবার

কক্সবাজারে টানা বৃষ্টিতে উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার অন্তত ৭০টি গ্রামের প্রায় ৬০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের বরাতে জানা গেছে, উখিয়ার অন্তত ২০টি এবং টেকনাফের প্রায় ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। উখিয়ার ৩টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।

গত চার দিন ধরে কক্সবাজারে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সোমবার বেলা ১২টা পর্যন্ত ৩০ ঘণ্টায় ২২৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুল হান্নান। তিনি জানান, রোববার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ১৪৬ মিলিমিটার, এরপর সকাল ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত আরও ৮০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়।

টেকনাফ উপজেলা জনপ্রতিনিধিদের তথ্য মতে, হোয়াইক্যং, হ্নীলা, বাহারছড়া, সাবরাং, টেকনাফ সদর ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার অন্তত ৫০টি গ্রামে কমপক্ষে ৫০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। হ্নীলা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জানান, ইউনিয়নের জালিয়াপাড়া, সাইটপাড়া, ফুলেরডেইল, আলী আকবর পাড়া, রঙ্গিখালী, আলীখালী, চৌধুরীপাড়া, পূর্ব পানখালী, মৌলভীবাজার, লামারপাড়া, ওয়াব্রাং, সুলিশপাড়া ও পূর্ব সিকদার পাড়াসহ ১২টি গ্রামের চার হাজারের বেশি পরিবার পানিবন্দি।

টেকনাফ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আবদুল্লাহ মনির জানান, কলেজপাড়া, শীলবুনিয়াপাড়া, ডেইলপাড়া, জালিয়াপাড়া, খানকারডেইল, চৌধুরীপাড়া, কেকে পাড়াসহ পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগে আছেন। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও চলাচলের রাস্তাও পানিতে তলিয়ে গেছে। সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপসহ ১০টি গ্রাম এবং হোয়াইক্যং ইউনিয়নের লম্বাবিল, উলুবনিয়া, আমতলি, মিনাবাজার, উনচিপ্রাং, কাঞ্চনপাড়া, কুতুবদিয়াপাড়া ও রইক্ষ্যং গ্রামও প্লাবিত হয়েছে।

পাহাড় ধসের শঙ্কা, আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত: টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহেসান উদ্দিন জানান, টানা বৃষ্টিতে বিভিন্ন গ্রামে মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পাশাপাশি পাহাড় ধসের ঝুঁকির কারণে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে সকাল থেকে সতর্ক করা হচ্ছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

টানা বর্ষণে উখিয়ার অন্তত ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পাহাড়ি ঢলের কারণে সবজি খেত, আমনের বীজতলা, পানের বরজসহ বিভিন্ন ফসলের মাঠ নষ্ট হয়ে গেছে। গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ প্রায় অচল হয়ে পড়েছে।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল হোসেন চৌধুরী জলাবদ্ধতা নিরসনে ভরাট ড্রেন পরিষ্কারসহ দ্রুত পানি নিষ্কাশনের কাজ তদারকি করছেন।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, পুকুরে পানি উঠে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ভেসে গেছে। দীর্ঘস্থায়ী বৃষ্টির কারণে জনজীবন চরমভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে।

উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মুস্তাক আহমদ জানান, হলদিয়া পালংয়ের রুমখা চৌধুরীপাড়া, কুলালপাড়া, চরপাড়া, পশ্চিম রত্না, সাদৃকাটা, জালিয়া পালংয়ের পাইন্যাশিয়া, সোনাইছড়ি, সোনারপাড়া, রেজু মোহনা, মনখালী, ছেপটখালী, রাজাপালংয়ের তুতুরবিল, পিনজিরকুল, মাছকারিয়া, হরিণমারা, হিজুলিয়া, পালংয়ের রহমতেরবিল, আঞ্জুমান পাড়া, ধামনখালীসহ বহু নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

গত রাতে থাইংখালী-মোছারখোলা সড়কে গাছ ভেঙে পড়ে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। উখিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. কাউসার হোসেন জানান, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা চিহ্নিত করতে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের তালিকা দিতে বলা হয়েছে।

এ ছাড়া কুতুপালংয়ের ৩টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দিন।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম