শুধু হাসিনা নয় আ.লীগেরও বিচার হওয়া উচিত: মির্জা ফখরুল
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
মির্জা ফখরুল
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
গণহত্যার জন্য শুধু শেখ হাসিনা নয়, আওয়ামী লীগেরও বিচার হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, দেশকে যত দ্রুত নির্বাচনের ট্র্যাকে উঠানো যাবে ততই মঙ্গল। বুধবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। এর আগে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক আবদুল কুদ্দুস ও অধ্যাপক সিরাজ উদ্দিন আহমেদকে দেখতে যান তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ হাসিনা, তিনি এককভাবে, আমি মনে করি দ্য রেসপন্সিবল ফর দ্য কিলিং অব দ্য থাউজেন্ডস অব পিপল। তার বিচার শুরু হয়েছে। আমরা আশাবাদী তার এবং সেই সঙ্গে যারা গণহত্যা ও ফ্যাসিস্ট আক্রমণের সঙ্গে জড়িত, তাদের প্রত্যেকেরই বিচার হবে।
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের বিষয়ে একটি মহলের বিরোধিতা নিয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় শক্তি যদি কেউ থাকে, সেটা হচ্ছে বিএনপি। সবচেয়ে বেশি লড়াই যদি করে গণতন্ত্রের জন্য, সেটা বিএনপি করেছে। বাংলাদেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে বিএনপি নিয়ে এসেছে বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং পরবর্তীকালে সংসদীয় গণতন্ত্র। দেশটাকে সবাই মিলে বাঁচাতে হবে। প্রতিটি রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব হচ্ছে, দেশকে সঠিক ট্র্যাকে উঠানো এবং যত দ্রুত সেটাকে উঠানো যাবে, ততই মঙ্গল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, যারা মনে করেন নির্বাচন প্রয়োজন নেই, আমার মনে হয় তারা আবার চিন্তা করবেন। নির্বাচন প্রয়োজন জনগণের জন্য। একটা নির্বাচিত সরকার দরকার, যে সরকারের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক থাকবে। সে কারণেই আমরা বলছি যে সংস্কারগুলো, সেই সংস্কারে আমরা অংশ নিচ্ছি। প্রত্যেকটি সংস্কারের দাবি আমরাই তুলেছি। সুতরাং সংস্কার এবং নির্বাচনের মধ্যে কোনো সাংঘর্ষিকতা নেই, দুটি একসঙ্গে চলবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে নির্যাতন-হত্যা-গুম-খুনের সবচেয়ে বড় ভিকটিম আমাদের দল বিএনপি। আমার নিজের বিরুদ্ধেও ১১২টি মামলা এবং আমাকে ১৩ বার জেলে যেতে হয়েছে। আমরা সব সময় মনে করি, যেসব রাজনৈতিক দল ফ্যাসিবাদের পক্ষে থাকবে, যারা ফ্যাসিবাদের পক্ষে কাজ করবে, বিশেষ করে আওয়ামী লীগ কাজ করেছে, তাদের প্রতিটি ব্যক্তির শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা উচিত এবং শাস্তি হওয়া উচিত।
একই দিন দুপুরে মহাখালীর ইউনির্ভাসেল মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালে (আয়শা মেমোরিয়াল হসপিটাল) চিকিৎসাধীন শিল্পী ফরিদা পারভীনকে দেখতে যান বিএনপি মহাসচিব। এ সময় লালনগীতি শিল্পী ফরিদা পারভীনের শারীরিক অবস্থা ভালো নয় উল্লেখ করে তার সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হস্তক্ষেপ কামনা কামনা করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, লালন সংগীতে ফরিদা পারভীন অদ্বিতীয় এবং গোটা বাংলাদেশের মানুষের কাছে লালন সংগীতের প্রিয় শিল্পী তিনি। দীর্ঘকাল ধরে তিনি সংগীত জগতে তার যে একচ্ছত্র প্রভাব সেটা অক্ষুণ্ন রেখেছেন। তিনি অসুস্থ হয়ে এখানে এসেছেন অত্যন্ত ক্রিটিক্যাল কন্ডিশনে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ডাক্তাররা তার যথেষ্ট কেয়ার নিচ্ছেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শিল্পীর শয্যা পাশে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে চিকিৎসকদের কাছ থেকে তার চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেন এবং করণীয় জানতে চান।
বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, বিএনপি মহাসচিব এই বরণ্যে শিল্পীর সর্বোচ্চ চিকিৎসার জন্য সরকারের দুই উপদেষ্টার সঙ্গে হাসপাতাল থেকেই টেলিফোনে কথা বলেছেন। তিনি সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এবং আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন এবং শিল্পীর চিকিৎসার জন্য তাদের ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। বিএনপি মহাসচিব শিল্পী পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন এবং দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে বিশেষ সহযোগিতা প্রদান করেন।
এ সময় বিএনপির সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন উজ্জ্বল, সহসাংস্কৃতিক সম্পাদক সাঈদ সোহরাব, জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা জাসাসের সভাপতি হেলাল খান, সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন রোকন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
