সিইসির সঙ্গে এনসিপির বৈঠক
শাপলা প্রতীক না পেলে রাজনৈতিক লড়াই হবে
থাকছে নৌকা, শাপলার বিষয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নেই-ইসি মাছউদ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রতীকের তালিকা থেকে নৌকা বাদ এবং শাপলাকে অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির নেতারা বলছেন, দলীয় প্রতীক হিসাবে তারা শাপলা চান, এর বিকল্প নেই। পাশাপাশি বর্তমান নির্বাচন কমিশনেরও পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছেন এনসিপি নেতারা। রোববার রাজধানীর নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেন দলটির পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল। বৈঠকের পর এনসিপি নেতারা এসব দাবির কথা জানান।
গতকাল বেলা ১১টায় এ বৈঠক শুরু হয়। দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলে বৈঠকটি। এতে অংশ নেন এনসিপির পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল। তারা হলেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, যুগ্ম সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম মূসা ও যুগ্ম আহ্বায়ক খালিদ সাইফুল্লাহ। এ সময় নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ ও ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। দলীয় প্রতীকের বিষয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, শাপলা প্রতীকের বিকল্প নেই। শাপলা প্রতীক পেতে আইনি কোনো বাধা নেই। যদি বাধা দেওয়া হয় সেটা আমরা রাজনৈতিকভাবে লড়াই করব। আর অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম মূসা বলেন, জাতীয় প্রতীক হচ্ছে ভাসমান শাপলা, ধানের শীষ, তারা, পাটপাতা। চারটি উপাদানের মধ্যে ধানের শীষ এখন বিএনপির প্রতীক। তারকা একটি ও সোনালি আঁশ আরেকটি দলের প্রতীক। জাতীয় ফল কাঁঠালও একটি দলের রয়েছে। তিনি বলেন, জাতীয় প্রতীক আসলে শাপলা নয়, এটাকে মিসব্রান্ডিং করা হচ্ছে। জাতীয় প্রতীক চারটি আলাদা আলাদা উপাদানের সমন্বয়ে একটি চিহ্ন। এর রং, ব্যাসার্ধ সবই বিধিমালায় আছে। আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর পরও নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার তফসিল সংশোধনের দাবি জানায় এনসিপি।
আবারও নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবি জানিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, নির্বাচনের আগে ইসি পুনর্গঠন করতে হবে। এটা স্টেট ফরোয়ার্ড। আগের আইনটা (নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন) পরিবর্তন করতে হবে। ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী ইসিসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে যারা ভালো কাজের পরিচয় দিয়েছে তাদের রাখা যেতে পারে। অনেকে তাদের ব্যক্তিগত জায়গা থেকে একটা দলের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ১১৫টি প্রতীকের তালিকা যুক্ত করে নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা সংশোধনোর জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে ইসি। ওই ১১৫টি প্রতীকের মধ্যে শাপলা প্রতীক নেই। যদিও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের প্রস্তাবে শাপলা প্রতীক ছিল। নির্বাচন কমিশনাররা তা বাদ দিয়েছেন। প্রতীকের তালিকায় দাঁড়িপাল্লা যুক্ত করা হয়েছে এবং নিবন্ধন স্থগিত থাকলেও নৌকা প্রতীক বহাল রয়েছে।
সিইসির সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে ব্রিফিংয়ে অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম মূসা বলেন, আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত থাকাবস্থায় ‘নৌকা’কে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়নি। আমরা এ বিষয়টি ইসির নজরে এনেছি। আইনগতভাবে নৌকা প্রতীক তালিকায় রাখতে পারে না ইসি। যতক্ষণ আওয়ামী লীগের বিষয়ে সরকারের অন্য কোনো সিদ্ধান্ত বা আদালতের কোনো নির্দেশনা না আসবে ততক্ষণ পর্যন্ত নৌকা প্রতীক তালিকায় রাখা যাবে না বলে জানান তিনি।
থাকছে নৌকা, শাপলার বিষয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নেই-ইসি মাছউদ : নিবন্ধন স্থগিত থাকা আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তফশিলভুক্ত তালিকায় আপাতত থাকবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত শাপলার বিষয়ে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। রোববার রাতে কয়েকটি গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন তিনি।
নির্বাচন কমিশনার বলেন, আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত হলেও নির্বাচনি প্রতীকের তফশিলে নৌকা প্রতীক আপাতত থাকবে। কারণ নৌকা নির্বাচন কমিশনের তফশিলভুক্ত প্রতীক। নির্বাচন কমিশন সেখান থেকে প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে একটি প্রতীক বরাদ্দ দিয়ে থাকে। এ প্রতীকগুলো ইসির সংরক্ষিত।
শাপলা প্রতীক যুক্ত হচ্ছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজ পর্যন্ত এ বিষয়ে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ভবিষ্যতে হয় কি না, সেটি পরে দেখা যাবে।
