চরমোনাইয়ে রাত কাটালেন নাহিদসহ এনসিপি নেতারা
আকতার ফারুক শাহিন, বরিশাল
প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসাবে দ্বীপ জেলা ভোলা যাওয়ার পথে বরিশালে চরমোনাই দরবার শরিফে রাত কাটালেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। বরিশালের ঐতিহ্যবাহী দাওয়াত ও মেহমানদারির অংশ হিসাবে তারা দরবার শরিফে আসেন এবং আতিথেয়তা গ্রহণ করেন। বিষয়টিকে রাজনীতির সম্ভাব্য টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে দেখছেন ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমীর শায়েখে চরমোনাই মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম।
দক্ষিণাঞ্চলের পিরোজপুর, ঝালকাঠী, পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলা সফর শেষে সোমবার রাত ১০টায় ধর্মীয় স্থান বরিশালের চরমোনাই দরবার শরীফে পৌঁছেন নাহিদ-সারজিসসহ এনসিপি নেতারা। তাদের স্বাগত জানান ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র মহাসচিব মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ আবুল খায়েরসহ দলটির সিনিয়র নেতারা। পরে সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জুলাই পদযাত্রায় দেশের যেসব জেলায় যাচ্ছি সেগুলোর ঐতিহ্যপূর্ণ ও ধর্মীয় স্থানগুলো পরিদর্শন করছি আমরা। সেই ধারাবাহিকতায় আজ চরমোনাই দরবার শরীফে এসেছি। কেননা এটি বরিশালের একটি ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় স্থাপনা ও ইসলাম শিক্ষার প্রসিদ্ধ স্থান।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিকভাবে ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ তো আগে থেকেই রয়েছে। তাদের অফিসে আমরা গিয়েছি, নানা বিষয়ে তাদের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগও রয়েছে।’ সংবাদ সম্মেলনে মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, ‘গত বছরের জুলাই মাসে আন্দোলন শুরু হওয়ার পর ৫ জুলাই আমরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে থাকার ঘোষণা দিয়েছিলাম। এরপর থেকে আমরা একসঙ্গেই আছি। কারণ আমাদের দুই দলের বক্তব্য এবং চাওয়া অনেকটাই এক। আমরা সবাই চাঁদামুক্ত, বৈষম্যমুক্ত, স্বৈরাচারমুক্ত দেশ চাই।’ সংবাদ সম্মেলনের পর ইসলামী আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন এনসিপি নেতারা।
মতবিনিময় শেষে এনসিপির পুরুষ সদস্যরা কওমি মাদ্রাসা ভবনের মেহমানখানা এবং মেয়েরা মহিলা মাদ্রাসা ভবনের মেহমানখানায় অবস্থান করেন। সেখানে খাওয়াদাওয়ার পর বরিশাল শহরে চলে আসেন নারী সদস্যরা। তবে চরমোনাইতে অবস্থান করেন নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলমসহ এনসিপির পুরুষ নেতারা। মঙ্গলবার সকালে বরিশাল থেকে ভোলা জেলার পদযাত্রায় অংশ নিতে রওনা হন তারা। এনসিপি নেতাদের এই সফর সম্পর্কে জানতে চাইলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম বলেন, ‘এটি আমাদের অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী দাওয়াত ও মেহমানদারির একটি অংশ। তারা আমাদের মেহমান। আমরা চেষ্টা করেছি তাদের বরিশালের মানুষের পক্ষ থেকে আপ্যায়ন করতে।’ এই সফরকে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখা যাবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হতেও পারে এটা চলমান রাজনীতির একটি টার্নিং পয়েন্ট। তারা যেহেতু আমাদের মেহমান হিসেবে এসেছেন, তাই এটিকে রাজনীতির সঙ্গে মেশাতে চাইছি না।’ আগামী নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে এনসিপির জোট হওয়ার সম্ভাবনা জানতে চাইলে বলেন, ‘জোট নয়, আমরা ঐক্যের দিকে বেশি জোর দিচ্ছি। ইসলাম, দেশ এবং মানবতা- এই ৩ মূলনীতির ভিত্তিতে যে কারও সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক ঐক্য হতে পারে। তাছাড়া এমনিতেও দেশের সিংহভাগ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নব্য ফ্যাসিবাদ ঠেকানোর অঘোষিত ঐক্য রয়েছে। আমরা সবাই চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিমুক্ত একটি দেশ গড়তে চাই। যেখানে নতুন করে আর কোনো ফ্যাসিবাদ আমাদের ঘাড়ে চেপে বসবে না। সেই প্রশ্নে কেবল এনসিপি নয়, হাতে গোনা ২-১টি দল ছাড়া সবার সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক ঐক্য রয়েছে।’
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের ফোনে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি।
