Logo
Logo
×

শেষ পাতা

আবাসিক হোটেলে লাশ : গ্রেফতার ১

যাত্রাবাড়ীতে ক্ষুধার্ত শিশুকে পাশবিক নির্যাতনে হত্যা

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

যাত্রাবাড়ীতে ক্ষুধার্ত শিশুকে পাশবিক নির্যাতনে হত্যা

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর আবাসিক হোটেল আনোয়ারা থেকে ১৪ জুলাই ১২ বছর বয়সের এক শিশুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই শিশুর পরিচয় এখনো শনাক্ত হয়নি। লাশ পড়ে আছে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে। তবে এ ঘটনায় হওয়া হত্যা মামলা তদন্তে রোমহর্ষক তথ্য পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। হত্যায় জড়িত আল-আমিন নামের এক ব্যক্তিকে শুক্রবার গাজীপুরের টঙ্গী থানার স্টেশন রোড এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই। পিবিআই তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, অজ্ঞাতনামা ওই শিশু মা-বাবার সঙ্গে অভিমান করে বরিশাল থেকে ঢাকায় আসে। রাজধানীর কোনো এক খাবার হোটেলে কাজ নেয়। কিন্তু সেখানে বনিবনা না হওয়ায় কাজ ছেড়ে দেয়। বাড়িতে ফিরে যেতে আসে কমলাপুর রেলস্টেশনে। তার কাছে কোনো টাকা না থাকায় তীব্র ক্ষুধা লাগলেও কিছু খেতে পারছিল না। একদিন না খেয়ে থাকার পর রেলস্টেশনেই আল-আমিন ও সাদ্দাম নামের দুই ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হয় শিশুটির। তারা শিশুটিকে খাবার কিনে দেয়। নতুন জামা ও স্যান্ডেল কিনে দিয়ে কৌশলে আবাসিক হোটেল আনোয়ারাতে নিয়ে দুদিন ধরে পাশবিক নির্যাতন করে হত্যা করে শিশুটিকে। পিবিআই তদন্তে নেমে শুক্রবার অভিযুক্ত আল-আমিন নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে। শনিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেয় আল-আমিন। অপর আসামি সাদ্দাম এখনো পলাতক রয়েছে।

গ্রেফতার আল-আমিন পিবিআইকে জানিয়েছে, ১২ জুলাই সকাল ১০টার দিকে কমলাপুর রেলস্টেশনে অজ্ঞাতনামা ওই শিশুর সঙ্গে পরিচয় হয় আল-আমিন ও সাদ্দামের। শিশুটি তাদের কাছে জানতে চায় বরিশালের ট্রেন কখন ছাড়বে। আল-আমিন জানায়, বরিশালে ট্রেন যায় না। পরিচয়ের একপর্যায়ে শিশুটি তাদের জানায় সে গত একদিন যাবৎ কিছুই খায়নি। তখন আল-আমিন শিশুটিকে রেলস্টেশনের পাশ থেকে খাবার কিনে দেয় এবং জামা ও জুতা কিনে দেয়। শিশুটিকে সারাদিন তাদের সঙ্গেই রাখে। সন্ধ্যার পরে শিশুটিকে আল-আমিন যাত্রাবাড়ী থানার আনোয়ারা (আবাসিক) হোটেলের ২৬৫ নম্বর কক্ষে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরে সাদ্দাম হোটেলে যায় এবং দুইজন শিশুটিকে পাশবিক নির্যাতন করে। এ সময় অসুস্থ হয়ে পরে শিশুটি। পরে ১৩ জুলাই সকালে আল-আমিন ও সাদ্দাম ফের শিশুটিকে নির্যাতন করতে চাইলে সে বাধা দেয়। তখন আসামি আল-আমিন ও সাদ্দাম তাকে কোমরের বেল্ট দিয়ে পেটায়, একপর্যায়ে মাথা ও মুখে ঘুষি মারে। শিশুটিকে শারীরিক নির্যাতন করে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

পিবিআই ঢাকা মেট্রো (দক্ষিণ)-এর পুলিশ সুপার মো. শাহাদাত হোসেন যুগান্তরকে বলেন, ‘পাশবিক নির্যাতন করে শিশুটিকে হত্যা করা হয়। গ্রেফতার আল-আমিন আদালতে খুনের কথা স্বীকার করেছে।’

তিনি বলেন, হত্যার শিকার শিশুটির পরিচয় আমরা এখনো জানতে পারিনি। তার পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। তবে গ্রেফতার আল-আমিন জানিয়েছে, শিশুটির বাড়ি বরিশালে।

যাত্রাবাড়ী থানায় হওয়া হত্যা মামলাটি ১৭ জুলাই পিবিআই-এর শিডিউলভুক্ত হয়। পিবিআই-এর এসআই মো. কবির হোসেনকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য, ভিডিও ফুটেজ ও অজ্ঞাতনামা আসামির মোবাইল ফোনের প্রযুক্তিগত সহায়তায় আসামিদের শনাক্ত করা হয়।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম