Logo
Logo
×

সাহিত্য সাময়িকী

দক্ষিণ বাংলার লেখকদের গ্রন্থ উৎসব ২০১৮

Icon

মেহেদী হাসান

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০১৮, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ঢাকা বাংলা সাহিত্যের রাজধানী। এ কথাটি আল মাহমুদ বলেছিলেন। তখন কথাটি বেশ আলোচনা তৈরি করে। আল মাহমুদ পশ্চিমবঙ্গের লেখকদের ছোট করার জন্য বলেননি। উভয় দেশের ভাষা সংস্কৃতির প্রতিকূল অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতেই তিনি বলেছিলেন। বাংলাদেশে বাংলা ভাষার প্রতি অবহেলাটি অনেকটাই অসচেতনতাবশত। অন্যদিকে কলকাতায় বাংলা ভাষার প্রতি অবহেলাটি মূলত প্রয়োজনের হিসেব-নিকেশ থেকে। ওখানে বাংলা পড়া হয় বলতে গেলে শুধু সাহিত্যের জন্যই। নতুন প্রজন্ম ইংরেজি শিখছে প্রধান ভাষা হিসেবে। বিশ্বায়নের তাগিদ এবং কর্পোরেট দুনিয়ায় সাফল্যের মূল মন্ত্রের দিকে লক্ষ রেখেই তারা ইংরেজির প্রতি বেশি জোর দিয়েছে। দুই দেশেই রাষ্ট্রীয়ভাবে বাংলা অবহেলিত। বাংলাদেশ যেহেতু ভাষাভিত্তিক দেশ, তাই এখানে বাংলার প্রতি রাষ্ট্রীয় অবহেলাটি দায়িত্বহীনতা এবং অসচেতনতাবশতই বলা যায়। সে কারণেই আশা করা যে, বাংলাদেশে সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলন একদিন হবেই। বাংলা সাহিত্যের গুরুত্ব এদেশে আরও বাড়বে। কারণ এখানে যে প্রজন্মটি ইংরেজি শিখছে- তারা মূলতই চাকরির চিন্তা করে শিখছে। এবং তাতে যতটুকু শেখা হচ্ছে সেটাকে ভাষাশিক্ষা বলা সম্ভব না। সাহিত্য সংস্কৃতির নির্যাস নিতে হলে এদের অবশ্যই বাংলা থেকে নিতে হবে। ভাষার প্রসারে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে সেই ভাষার সাহিত্য-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানাদি। বাংলা সাহিত্যের প্রধান কবি জীবনানন্দের জন্ম বরিশালে। কিংবদন্তি সাহিত্য সম্পাদক এবং বিশিষ্ট কবি আহসান হাবিবের জন্মও এই বরিশালে। এরকম অনেক বড় বড় সাহিত্যিক সাংস্কৃতিক ব্যক্তির জন্ম বরিশালে। তাই বারিশালের মানুষের সাহিত্যের প্রতি ভালোবাসাটি ভিন্নরকমের হওয়াই স্বাভাবিক। ভৌগোলিক এবং প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যও এখানকার সাহিত্যের ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা রাখে। হয়ত সে কারণেই কবি শফিক আমিনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হল একটি চমৎকার আয়োজন ‘দক্ষিণবাংলা গ্রন্থ উৎসব ২০১৮’। ২০১৮ সালে প্রকাশিক বৃহত্তর বরিশালে জন্মগ্রহণ করা লেখকদের বই নিয়ে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। আপাতদৃষ্টিতে আঞ্চলিকতা দেখা গেলেও, এভাবেই খণ্ড খণ্ডভাবে সাহিত্যের সৌন্দর্যের চর্চা ছড়িয়ে যেতে পারে সারা বাংলায়। বরিশালের এ উদ্যোগকে অভিনন্দন জানাতেই হয়।

অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিল লেখক ও বই পরিচিতি। পেশাগত কারণে সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা বৃহত্তর বরিশালের লেখকরা একে অন্যের সঙ্গে পরিচিত হয়। লেখক-পাঠকদের সঙ্গে পরিচিত করা হয় ২০১৮ সালে প্রকাশিত তাদের বইয়ের। এরপর অনুষ্ঠানসুচি অনুযায়ী সাহিত্য আড্ডা, কবিতা পাঠ এবং নৌ ভ্রমণ এবং সম্মাননা প্রদানের মধ্য দিয়ে শেষ হয় দক্ষিণবাংলা গ্রন্থ উৎসব ২০১৮।

এমন একটি মহতী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা উল্লেখযোগ্য কয়েকজন- ছড়াকার তপংকর চক্রবর্তী, কবি শাহীন রেজা, আল হাফিজ, সাইফুল্লাহ নবীন, ডা. ভাস্কর সাহা, আবিদ আজম, আলম রায়হান, সাইদ তপু, লায়লা কবীর, মিনতি রানী দাস, আফরোজা বেগম, মীম ওমর ফারুক, জান্নাতুল ফেরদাউস শিশির, শমরিতা শর্মী, মিনা গাঙ্গুলী, স্নিগ্ধা নীলিমা, আলোক মিত্র, গাজী হানিফ, মাহমুদা খানম, প্রিন্স বিশ্বাস, শামিমা সুলতানা, হোসনেয়ারা বেগম, জেসমিন আক্তার, দীপ্তি ইসলাম, ইয়াসীন হীরা, জাহাঙ্গীর হোসাইন মানিক, রাজিব আহমেদ, বশিরুজ্জামান বশির, হিমেল রহমান, ওবায়দুল ইসলাম, মাসুদ আলম বাবুল, শাহরিয়ার, আফরোজা বেগম রোজি, অর্নব আশিক, মাসুদ আলম বাবুল, মুস্তফা হাবিব, মুহম্মদ মহসিন, আনোয়ার হোসেন বাদল, আবদুল গাফ্ফার খান, বাহাউদ্দিন গোলাপ, গাজী লতিফ কথাসাহিত্যিক মাহবুব লাভলু, নাট্যজন আবদুল হাকিম প্রমুখ। হ

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম