|
ফলো করুন |
|
|---|---|
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এসে মলিন হয়ে গেল পুষ্পর মুখ। চোখের রেটিনায় ধরা পড়ল উত্তাল সময়ের দৃশ্যপট। জীবন্ত হয়ে উঠল পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যেতে থাকা মিছিল। সেই মিছিলে অন্য মেয়েদের মতো সে-ও দুঃসাহসী হয়ে উঠেছিল। অথচ প্রেস ক্লাবে ঢোকার মুখে এখন দেখল একটি ব্যানার। তাতে লেখা আছে, ‘গণ-অভ্যুত্থানের নারীদের সংলাপ, নারীরা কোথায় গেল।’
লড়াই করেছিলাম কিছু পাওয়ার আশায় নয়, সরকার পতনের বিষয়টাও মাথায় ছিল না। মেধার বৈষম্যের প্রতিবাদে প্রত্যেকের মাথায় ছিল বৈষম্যনাশী চেতনা। আরও ছিল তার উত্তাল জোশ, অপ্রতিরোধ্য আবেগের প্লাবন।
‘নারীরা কোথায়?’ এ প্রশ্ন এলো কেন?
নিজের বোধের সঙ্গে প্রশ্নটা মিলছে না। প্রশ্নটা নিয়ে ভাবেওনি। কেবল মনে হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার সুষ্ঠুভাবে দেশ চালাক। সব প্রতিষ্ঠানের বৈষম্য দূর হোক। এ মুহূর্তে সেসব চিন্তা দাবিয়ে দিয়ে বারবার উড়ে উড়ে প্রশ্ন ঢুকতে লাগল, নারীরা কোথায়? গণ-আন্দোলনের নারীরা কোথায়?
নারীরা কি নেতৃত্ব আর সম্মান অর্জনের আশায় রাজপথে নেমেছিল? কেউ কেউ নামতে পারে! পরে বুঝতে পারলেও এখন বুঝটা আরও প্রকট হয়ে উঠল। তবু হেঁটে যাচ্ছে সে ভেতরে। অনুষ্ঠান কক্ষের প্রবেশপথে এসে থমকে গেল। একটা বেদির ওপর সাজানো রয়েছে কয়েকজন নারীর ছবি। বেদিতে ফুল। নামও লেখা আছে ছবির নিচে : রিয়া গোপা, নাঈমা সুলতানা, লিজা আক্তার, মায়া ইসলাম, মেহেরুন নেসা, নাজমা বেগম, তানহা, সুমাইয়া আক্তার, নাফিসা হোসেন ও মারওয়া। আন্দোলনের সময় ওরা শহিদ হয়। ওদের ছবি দেখে বুকটা হাহাকার করে উঠল। কোথাও ওদের নাম তেমন প্রচার হয়েছে বলে মনে পড়ছে না। সেও এখানকার দু-চারজনের কথা জানত। অনেকের কথাই শোনেনি। নিজেকে খুব ছোট আর স্বার্থপর মনে হলো। কেবল সহযোদ্ধা কাছের মানুষ ফারহানের জন্য সে ভেবে ভেবে আকুল হয়েছে। অথচ আরও কত কত প্রাণ শহিদ হয়ে গেল, মনে রাখেনি তাদের কথা। আচমকা বুকের ভেতর গুমরে উঠল :
‘মুক্তির মন্দির সোপান তলে
কত প্রাণ হলো বলিদান,
লেখা আছে অশ্রুজলে ॥’
‘ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই ছিল দুঃসাহসী সংগ্রাম। ভিনদেশি দখলদারদের বিরুদ্ধে বিপ্লবীরা আত্মত্যাগ করেছিলেন বলেই ব্রিটিশরা ভারত ছাড়তে বাধ্য হয়। তাদের সবার নাম খোদিত নেই। তাদের মধ্য থেকে মাস্টারদা আর ক্ষুদিরাম বসুর নামই বেশি স্মরণ করে সাধারণ মানুষ।’
মনের তারে গানের কলিগুলোর বাজনা থেমে যাওয়ার পরপরই ঐতিহাসিক কথাটা শুনল পুষ্প। প্রথমে দিশেহারা হলেও বুঝতে পারল নিজের মস্তিষ্কে স্থায়ী আসন পাওয়া ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহিদ ফারহানের অনুভব-তরঙ্গই নাড়া দিয়েছে নিজের পুরো সত্তা।
সঙ্গে সঙ্গে বলল, ‘এই মুহূর্তে এসব কথা বলার অর্থ কী, ফারহান?’
‘কোনো অর্থ কি নেই? তুমি মোহিনী চৌধুরীর সেই বিখ্যাত গানটা অনুভব করেছিলে। তার পেছনের ইতিহাসটা তুলে ধরলাম।’
‘এটা বোঝাতে চাইলে যে চব্বিশের গণ-আন্দোলনের সব শহিদের কথা মনে রাখার দরকার নেই? কেবল সাঈদ-মুগ্ধকে মনে রাখলেই হবে? পাঠ্যপুস্তকে কেবল তাদের নাম থাকলেই ইতিহাস শুদ্ধ হয়ে যাবে?’
“না, তা না। সবাই থাকবে ‘গণ’ শব্দের মধ্যে। তবে উজ্জ্বল তারকা তো তারাই হবে।”
‘হোক। আমি চাই ফারহানও উঠে আসুক সেই কাতারে।’
‘এটাও তোমার ক্ষুদ্রতা! স্বজনপ্রীতি।’
‘স্বজনপ্রীতি হোক। তবে ক্ষুদ্রতা নয়। আরও চাইব নারী শহিদদের নামও খোদিত হোক।’
‘বিভাজন করলে না এখানে?’
“আমি করিনি, ওই যে ব্যানারগুলো আমি পড়ছি, স্বেচ্ছাসেবী দল, এমপাওয়ারিং আওয়ার ফাইটার্স ও লড়াকু ২৪ সংলাপের আয়োজন করেছে। এরা নারীদের কথা শোনানোর জন্য এ অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করেছে। তারাই প্রশ্ন তুলেছে ‘আন্দোলনের নারীরা কোথায়’? কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছে উত্তরবঙ্গ থেকে সরকারে উপদেষ্টা নেই কেন? চট্টগ্রাম আর কুমিল্লা থেকে এত উপদেষ্টা নেওয়া হলো কেন?”
‘ঠান্ডা মাথায় খেয়াল করো আমরা তো মেধার প্রশ্নে কোটা সংস্কার আন্দোলন করেছিলাম! নয় কি? তোমার এ অভিযোগ আর প্রশ্নের মধ্যে কোটার আধিপত্যের কথাই জাহির হচ্ছে না? উপদেষ্টা নিয়োগে ব্যক্তির যোগ্যতা আর গণ-আন্দোলনে যাদের অবদান ছিল প্রশ্নাতীত, জোরালো, তারাই স্থান পেয়েছে। আমার মনে হয় না প্রধান উপদেষ্টা নিজ এলাকাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। মনে মনে হয়তো তিনি ভেবেছেন এদের নিয়ে তিনি ভালোভাবে অন্তর্বর্তী সরকার চালাতে পারবেন আর বৃহত্তর অর্থে বলেছেন তিনিই উত্তরবঙ্গের উপদেষ্টা!’
‘দেখো প্রশ্ন আমার নয়। প্রশ্ন অনেকের।’
‘হোক অনেকের। তোমাকে ইতিবাচক দিকটাও দেখতে হবে। বলছি না তুমি ইতিবাচক নও। অবশ্যই তুমি ইতিবাচক। মিছিলে তোমার সেই দুঃসাহসিক এক্সপ্রেশনে দেখেছি। জীবনের মায়া তুচ্ছ করে কীভাবে পুলিশের সঙ্গে তর্কবিতর্ক করেছ, দেখেছি। মনে পড়ে না বাঁধভাঙা সেই মিছিলের স্রোতের কথা?’
চুপ হয়ে গেল পুষ্প।
নিজের প্রশংসা শুনতে আগ্রহী নয়। আর তাই শান্ত মনে ধীরে ধীরে হেঁটে সভাকক্ষের পেছনে গিয়ে বসল।
নেতাদের ব্যস্ততা দেখতে লাগল। সবার চেহারার মধ্যে বিপ্লব আর দ্রোহের আগুন দেখতে পারছে। বুঝতে পারছে এ নেতৃত্ব ভবিষ্যতে যে কোনো বৈষম্য আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে। ভাবতে ভাবতে মগ্ন হয়ে ছুটে বেড়াতে লাগল মিছিলের সময়টাতে-সবাইকে মুগ্ধের পানি খাওয়ানোর সেই দৃশ্যটা মনে পড়ছে। টিয়ারগ্যাস আর সাউন্ড গ্রেনেডের সেই ভয়াল দৃশ্যও। রক্তাক্ত আহত ছেলেমেয়েদের দুঃসাহসী মুখও ভেসে উঠছে, পুলিশের সঙ্গে তর্কাতর্কি, লাঠিপেটা এবং হেলমেট বাহিনীর নির্মম সহিংসতার দৃশ্যও। আর সঙ্গে সঙ্গে হঠাৎ দৃশ্যমান হয়ে গেল পুলিশের ব্যারিকেড উড়িয়ে দেওয়ার সেই জনস্রোত। একই সঙ্গে বুকের ভেতর থেকে গেয়ে উঠল :
‘কারার ঐ লৌহ-কপাট
ভেঙে ফেল, কর রে লোপাট’
‘কে গাইলেন?’
‘তুমি কি জানো এটা কার কবিতা, কার গান?’
‘জানব না কেন? আমাদের মিছিলে এ গানই ছিল শক্তি-সাহসের প্রধান হাতিয়ার। এ গানের প্রতিটা শব্দ আমাদের বুকের দরজা খুলে দিয়েছে। প্রচণ্ড সাহস ও জ্বালানি ঢুকিয়ে দিয়েছে বুকের গহিনে। আমরা ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে গেছি, জীবন তুচ্ছ করে লড়েছি। আর এর রচয়িতাকে চিনব না? কিন্তু তুমি কে? কীভাবে আসন নিয়েছ আমার মাথায়? আমার মনের ভেতর কীভাবে ঢুকলে?’
‘আমি এ গানের রচয়িতা।’
‘ও! তুমিই নজরুল! তুমিই বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম, আমাদের জাতীয় কবি? দুখু, সেই ছেলেবেলার দুরন্ত দুখু?’
‘আমাকে দেওয়া তোমার বিশেষণগুলো সরিয়ে ফেল। বাকি যা থাকে তা আমি।’
‘রাখ তোমার বিনয়। তুমি বলপ্রয়োগকারী ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়েছ। শব্দঝড় তুলে ভারতবর্ষ থেকে তাদের হটিয়েছ। অচেতন ভারতবাসীর মনের ভেতর প্রতিরোধের জ্বালানি ঢুকিয়ে দিয়েছ। তোমার সেই অগ্নিঝরা গানগুলো এখনো আমাদের সমকালে একই ঝড় তোলে। আমরাও সরকারকে হটিয়ে দিয়েছি তোমার গানের শব্দ-অস্ত্রের আঘাতে। তুমি কেবল সেই কালের নও। তুমি একালেরও জেন-জি। তুমি সর্বকালের বঞ্চিত, শোষিত মানুষের পাশে অতন্দ্র প্রহরী। হে দুরন্ত দুখু শুনে নিশ্চয়ই খুশি হবে জাতীয় কবি হিসাবে পরিচিতি থাকলেও সরকারিভাবে তোমার সেই স্বীকৃতির গেজেট প্রকাশিত হয়েছে!’
পুষ্পের খুশির ঝড়ো বয়ানে চুপ হয়ে গেলেন কবি। তার বিদ্রোহীসত্তা এ প্রজন্মের মধ্যে সঞ্চারিত হয়ে গেছে দেখে পরম ভালো-লাগায় শান্তি পেলেন।
“চুপ হয়ে গেলে কেন, বিদ্রোহী? তুমি কি এ প্রজন্মের বুকে নেই! আমরা তোমাকে ভুলিনি। তুমি সফল। ঠিকই বলেছিলে, ‘আমি চিরতরে দূরে চলে যাব তবু আমারে দেব না ভুলিতে’!”
ভাবনার জগৎ থেকে বাস্তবে ফিরে এলো। অনুষ্ঠানের গুরুতে হাই ভলিউমে বেজে উঠল ভাঙার গান :
... নাচে ঐ কাল-বোশেখি,
কাটাবি কাল বসে কি?
দে রে দেখি
ভীম কারার ঐ ভিত্তি নাড়ি!
লাথি মার, ভাঙ রে তালা!
যত সব বন্দি-শালায়?
আগুন জ্বালা,
আগুন জ্বালা, ফেল উপাড়ি।
গান শুনে পুষ্পের বুকের রক্ত উথালপাথাল বইতে লাগল দেহজুড়ে।
‘নারীরা লড়েছেন সমান তালে, এখন কেন আড়ালে’-ব্যানারে এমন শিরোনাম থাকলেও আন্দোলনের মাহাত্ম্য কেবল নারীদের গৌরবগাথা নিয়ে সংকুচিত হলো না। বরং নজরুলের গানের মধ্য দিয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিশালত্ব ছড়িয়ে যেতে লাগল হলজুড়ে কয়েকশ উপস্থিতির মনে। সে অনুভবের শিহরণ বুকে নিয়ে পুষ্প বলতে লাগল, “দেখলে তো বিদ্রোহী, যদিও তুমি কেবল বিদ্রোহী নও, প্রেমেরও কবি, তোমাকে ভুলে গেছি? তোমার দাবি কি পূরণ হয়নি? তোমার বিদ্রোহীসত্তা কি আমাদের বুকজুড়ে আসন পায়নি? জনস্রোত যখন হাজারো কণ্ঠে তোমার ‘ভাঙার গান’ গেয়ে ছুটে যচ্ছিল, তখন কি ক্ষমতার মসনদ উড়ে যায়নি? শক্ত প্রাচীরের উঁচু দেওয়াল কি আমরা ডিঙোতে পারিনি? স্লোগানমুখর কণ্ঠের শোরগোলে কি ওই প্রাচীরের দরজার কঠিন তালা ভেঙে যায়নি? বুঝতে পারছ, তুমি কত বড় কবি? ব্রিটিশ ভারতের মাটিতে বসে লেখা তোমার শব্দঝড় কি কেবল তোমার কালেই আছে? মহাকালের অনন্ত আকাশে কি তা টগবগ করে ছুটছে না? তুমি শুনতে পারছ না গাজনের সেই বাজনা? কে মালিক কে সে রাজা? আমরা কি জয়ী হইনি? কে কাকে সাজা দিয়েছে, বিদ্রোহী কবি?”
দুই
‘কী পুষ্প, কী হয়েছে? আজ তোমার মন এত খুশি কেন?’
‘ও! দেখে ফেলেছ, বিদ্রোহীরাজা?’
‘দেখলাম প্রসন্ন আছ। সকালের শীতটাকে জড়িয়ে ভোরের কচি রোদের দিকে তাকিয়ে আছ আর মিটিমিটি হাসছ। কারণ কী?’
‘বলব না তোমাকে।’
‘না-বললেও আমি জানি। তোমার মস্তিষ্কের কোষের ভেতর আলোর ঝলক দেখতে পাচ্ছি। আর তা আমাকে দেখিয়ে দিচ্ছে তুমি নারী আন্দোলনকারীদের মর্যাদার চিত্র দেখতে পেয়ে খুশি হয়েছ!’
‘ঠিক বলেছ। ঠিক ধরেছ, বিদ্রোহী! আন্দোলনকারী ছাত্রনেতারা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেই বৈঠকে অংশগ্রহণ করেছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সামনের কাতারের দুঃসাহসী কয়েকজন তরুণীও। তাদের অংশীদারত্ব দেখে ভালো লাগছে আর প্রধান উপদেষ্টাও সবার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে ন্যায্যতার ভিত্তিতে তার সমাধানের কথা সমস্বরে জানিয়েছে ছাত্রনেতারা। সেখানে নারীদের প্রতিনিধিত্ব ছিল।’
‘ঠিক বলেছ। শান্তির জন্য সমস্যার সমাধান হওয়া জরুরি কিন্তু সমস্যা উৎস সূত্র কোথায়? নিজেদের দ্বন্দ্ব আগে মিটিয়ে ফেলতে হবে। সব দল একত্র হয়ে এক ঐতিহাসিক বৈঠকে বসেছে-এটাও ভালো দিক। সবাইকে এক থাকা উচিত। কেবল ধর্মীয় জনগোষ্ঠী নিয়ে বিভেদ নয়, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সৌহার্দ থাকাটাও গুরুত্বপূর্ণ। নিজেদের বিভেদ মিটিয়ে ফেলতে না-পারলে দেশের সম্মিলিত শক্তি জোরালো হবে না। অন্য দেশের পতাকা অবমাননা করলে নিজেদের ছোট করা হয়, নিজেকেও অপমান করা হয়-বুঝতে হবে সংশ্লিষ্ট সবাইকে। যদিও অশোভন কাজটা করেছে কয়েকজন কিন্তু তা দুদেশের মানুষকে কষ্ট দিয়েছে তাও বুঝতে হবে।’
‘এজন্য তো তুমি মানবতার কবি, কেবল বিদ্রোহী নও। এজন্য তুমি প্রেমের কবিও, কেবল আগুনঝরা শব্দ সৃজন করোনি, তোমার অন্তরের ভালোবাসা মানুষের জন্য নিবেদিত হয়েছে, এখনো তা শব্দের ভেলায় চড়ে ছুটে চলেছে, এখনো মানবতার গান গাচ্ছ তুমি।’
‘এসব কথা রাখ বরং নিজেরা নিজেদের সাজা দিয়ো না। নিজেদের মালিক কে? একবার খুঁজে দেখ কে সাজা দেয়? তাকে খোঁজ।’
‘চোখ বন্ধ করে পুষ্প অনুভব করতে লাগল নিজেকে। বুঝল নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-ষড়যন্ত্র লুকিয়ে থাকলে নিজেরাই সাজা পেতে হবে। অহংকারী হওয়া চলবে না। অহংকারীকে মহান আল্লাহ ক্ষমা করেন না। অহংকারীর পতন ঘটিয়ে থাকেন সৃষ্টিকর্তাই।’
ভাবতে ভাবতে চুপ হয়ে গেল পুষ্প আর তার অন্তরে বাজতে লাগল ‘কে মালিক কে সে রাজা’... ‘আজ যে রাজা কাল সে ফকির’। বুঝল অহংকার ধুয়ে ফেলতে হবে, দ্বন্দ্ব মেটাতে হবে। দলে দলে বিভাজন তৈরি করা যাবে না, ধর্মীয় সম্প্রীতিও মর্যাদার সঙ্গে ধরে রাখতে হবে। সবাইকে এক থাকতে হবে দেশের উন্নতির জন্য।
‘আমি খুব খুশি, পুষ্প। খুবই খুশি। তোমার অনুভবের আলো ছড়িয়ে যাক, বৈষম্য দূর হোক। লাঞ্ছিত-বঞ্চিত আর শোষিতের জয়গাথা রচিত হোক।’
