|
ফলো করুন |
|
|---|---|
মানবশিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর তাকে মা-বাবা, পরিবারের অন্য সদস্য ও স্বজনরা প্রতিপালন করেন। নবজাতক ক্রমান্বয়ে হাঁটা শেখে, কথা শেখে, পরিবেশ-প্রতিবেশ বুঝতে ও চিনতে শেখে। এসব তাকে শেখাতে হয়। পরিবার মানবশিশুর প্রথম পাঠশালা। সেখানে সে অনেক কিছু শিখতে পারে। তবে এখানেই শেষ নয়। জীবনযুদ্ধে নিজেকে তৈরি ও বেঁচে থাকার জন্য তাকে অনবরত জানতে হয়, শিখতে হয়।
এ কারণেই শিশুকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়। সাধ্য অনুযায়ী সে প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক, স্নাতকোত্তর, পিএইচডি ও পোস্ট ডক্টরাল ডিগ্রি অর্জন করে। তবে সার্টিফিকেটনির্ভর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা একজন মানুষের জন্য কখনো পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা নয়। তাকে সারাজীবন চোখ-কান খোলা রেখে, দেখে-শুনে-বুঝে নতুন নতুন বিষয়ে শিখতে হয়, যা সিলেবাস বা পাঠ্যবইয়ে থাকে না।
এই বাড়তি শিক্ষার নামই ‘সামাজিক সচেতনতা শিক্ষা’। বাংলাদেশ গ্রন্থসুহৃদ সমিতির সহযোগী প্রতিষ্ঠান বেরাইদ গণপাঠাগার পাঠকদের জন্য ‘সামাজিক সচেতনতা শিক্ষা’ কর্মসূচি পরিচালনা করে থাকে।
শিক্ষার উৎস : সামাজিক সচেতনতা অর্জন করতে হলে বেশকিছু উৎস বা মাধ্যমের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। যেমন : ১. সংবাদপত্র, ২. বেতার-টেলিভিশন, ৩. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ৪. বাড়তি বই ও ৫. প্রবীণদের পরামর্শ।
সংবাদপত্র : সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ বা আয়না। আমাদের চারপাশে তথা সমাজ, রাষ্ট্র ও বহির্বিশ্বে প্রতিদিন যা ঘটে, তা পত্রিকার পাতায় খবর হয়। প্রত্যেকের তা জানতে হয়। এজন্য পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত, কর্মস্থল, সভা-সমিতি-যেখানেই পত্রিকা রাখা হয়, তা সবার পড়া উচিত। প্রতিটি পরিবারেই খবরের কাগজ রাখা উচিত। এতে লোকসান হবে না, বরং লাভ হবে। বিশেষ করে পরিবারের ক্ষুদে সদস্যদের শৈশব-কৈশোর থেকেই পড়ার অভ্যাস গড়ে উঠবে।
বেতার-টেলিভিশন : চলমান ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকার জন্য বেতার-টেলিভিশন অন্যতম সংবাদমাধ্যম। তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে প্রতিমুহূর্তে নিজেকে খবরাখবর সম্পর্কে আপডেট (হালনাগাদ) রাখতে হয়। এজন্য সবারই উচিত খবর শোনা বা দেখা। তাহলে গুজব কখনো ডালপালা বিস্তার করে সমাজে অনাসৃষ্টি ঘটাতে পারবে না।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম : ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্য্যাপ, ইমু ইত্যাদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বলে পরিচিত। ভালো-মন্দ বহু বিষয়, উপকরণ ছড়িয়ে আছে এ মাধ্যমে। সতর্কতার সঙ্গে ভালো দিকগুলো বেছে নিতে না পারলে পদে পদে সমূহ বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। তাই অতি সাবধানে পথ চলতে হবে।
বাড়তি বই : পাঠ্যবই জ্ঞান আহরণের জন্য যথেষ্ট নয়। তাই একজন শিক্ষার্থী বা পাঠককে শিল্প-সাহিত্য, গল্প-উপন্যাস, ভ্রমণকাহিনি, জীবনী, বিজ্ঞান, সাধারণ জ্ঞান তথা নানা ধরনের বই পড়তে হবে। এতে জীবনের বিচিত্র সমস্যা অনুধাবন ও মোকাবিলা করা সহজ হবে।
প্রবীণের পরামর্শ : জীবনের প্রয়োজনীয় অনেক তথ্য বই-পুস্তকে পাওয়া যায় না। প্রবীণরা বাস্তব অবস্থা উপলব্ধি করে অনেক সমস্যার সমাধান দিয়ে থাকেন। তাদের এই অভিজ্ঞতা থেকে নবীনরা উপকৃত হতে পারে। তাই প্রবীণদের পরামর্শ জ্ঞান আহরণের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসাবে বিবেচিত হয়।
এমদাদ হোসেন ভূঁইয়া : সভাপতি, বাংলাদেশ গ্রন্থাগার আন্দোলন ও বেরাইদ গণপাঠাগার
