বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়ান
শেখ একেএম জাকারিয়া
প্রকাশ: ২০ মে ২০২২, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সুনামগঞ্জ জেলাসহ সিলেট অঞ্চলের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। গত বুধবার থেকে সুনামগঞ্জ জেলার সুরমা, যাদুকাটা, কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জানিয়েছেন, ভারতের আসাম-মেঘালয় সীমান্তে অত্যধিক বৃষ্টির কারণে সুরমা, কুশিয়ারা ও অন্যান্য নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।
এদিকে পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতের কারণে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার, ছাতক ও ধর্মপাশা উপজেলার নিুাঞ্চল। বন্যা ও বৃষ্টির কারণে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ফসলি জমির মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।
পানির কারণে ছাতক-সুনামগঞ্জ-সিলেট, তাহিরপুর-বিশ্বম্ভরপুর-সুনামগঞ্জ এবং সুনামগঞ্জ-হালুয়াঘাট-মঙ্গলকাটা সড়কে যান চলাচল বন্ধ আছে। সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের গোবিন্দগঞ্জ এলাকার বিভিন্ন স্থানে পানি ওঠায় যান চলাচলে ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে সিলেট-ঢাকাগামী যাত্রীদের।
এছাড়া সুনামগঞ্জ পৌর শহরের বড়পাড়া, সাহেববাড়ী, মধ্যবাজার, মাছবাজার, জেলরোড, লঞ্চঘাট, উকিলপাড়া, কাজির পয়েন্ট, ষোলঘর, নবীনগরসহ বিভিন্ন পয়েন্টে পানি প্রবেশ করায় ভোগান্তিতে পড়েছেন শহরের মানুষ। অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানির কারণে ঘর থেকে বের হতে পারছেন না।
অসময়ে বন্যার কারণে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় পুকুর থেকে মাছ ভেসে যাওয়ায় মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন মৎস্যচাষিরা। এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ জেলা মৎস্য বিভাগ জানায়, পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে সুনামগঞ্জের সদর, বিশ্বম্ভরপুর, ছাতক, দোয়ারাবাজারসহ উপজেলার ২২০টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। বাস্তবে এ সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে জানিয়েছেন মৎস্যচাষিরা।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর জানায়, পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জ জেলার মোট ২১৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে ২৮টি সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। আবার কিছু বিদ্যালয়ে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পানি নেমে গেলেই এসব বিদ্যালয়ে পাঠদান শুরু হবে। এছাড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বন্যার কারণে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার প্রায় ৭২০ হেক্টর বোরো জমির ধান তলিয়ে গেছে।
পাশাপাশি এসব উপজেলায় ৪০ হেক্টর আউশ ধানের বীজ নষ্ট হয়েছে। স্থানীয় কৃষকরা জানান, ১০-১২ দিন ধরে তাদের ঘরে কাঁচা ধান আছে। রোদ না থাকায় শুকাতে দিতে পারছেন না। অধিকাংশ ধানের মধ্যে চারা গজিয়েছে। এই ধান এখন ফেলে দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। অকাল বন্যার কবল থেকে সুনামগঞ্জবাসীকে রক্ষার জন্য সরকারের সহযোগিতা খুবই জরুরি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সরকারের পক্ষ থেকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য নগদ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও ১৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
শেখ একেএম জাকারিয়া : সভাপতি, সুনামগঞ্জ সাহিত্য সংসদ
