Logo
Logo
×

অল্পকথা

এশিয়াটিক সোসাইটির তিন কাল

Icon

মাহমুদ নাসির জাহাঙ্গীরি

প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

এশিয়াটিক সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয় কলকাতা সুপ্রিমকোর্টের গ্রান্ড জুরির কক্ষে ১৭৮৪ সালের ১৫ জানুয়ারি। গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির প্রস্তাব করেন ব্রিটিশ সিভিলিয়ান ও আইনজীবী উইলিয়াম জোন্স। এশিয়ার জনজীবন ও প্রকৃতি নিয়ে গবেষণা পরিচালনা করা হবে-এ অর্থে এশিয়াটিক সোসাইটি। ৩০ জন ব্রিটিশ নাগরিককে নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় এ সোসাইটি। ১৭৮৪-১৮২৮ সাল পর্যন্ত সোসাইটিতে এ দেশীয়দের কোনো প্রবেশাধিকার ছিল না। ১৮২৯ সালে প্রবেশাধিকার লাভ করেন দ্বারকানাথ ও প্রসন্নকুমার ঠাকুর। ব্রিটিশের প্রতি আনুগত্য পোষণ এবং কলকাতায় প্রথম ইউনিয়ন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পরই ইংরেজ ক্লাবে সদস্য হওয়ার উপযুক্ত হয়ে ওঠেন দ্বারকানাথ ঠাকুর। ১৮৩২ সালে এশিয়াটিক সোসাইটির নামকরণ করা হয় এশিয়াটিক সোসাইটি অব বেঙ্গল। দ্বারকানাথের মৃত্যুর পর রাজেন্দ্রলাল মিত্র ১৮৪৬ সাল থেকে সোসাইটিতে লাইব্রেরিয়ান হিসাবে প্রবেশাধিকার পান। লাইব্রেরিয়ান ও সহকারী সেক্রেটারি হিসাবে ১০ বছর কাজ করার পর সেক্রেটারি ও সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৮৮৫ সালে প্রথম সোসাইটির সভাপতির দায়িত্ব লাভ করতে সক্ষম হন তিনি। ভারতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার পর এ পরিবর্তন আসে।

কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার পর সোসাইটিতে যে কর্মোদ্দীপনার সঞ্চার হয়, বঙ্গভঙ্গের পর তাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যায় বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯০৫ সালে দীনেশচন্দ্র যোগ দেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য প্রতিষ্ঠিত বাংলা বিভাগে। বঙ্গভঙ্গ রদ ও প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর বাংলা বিভাগ ও সোসাইটির কার্যক্রমে আসে গতিশীলতা। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী সোসাইটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন ১৯১৯-১৯২০ সালে। ১৯১৯ সালে চন্দ্রকুমার দে’কে নিয়োগ দিয়ে দীনেশচন্দ্র সেন শুরু করেন মৈমনসিংহ গীতিকা সংগ্রহের কাজ। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেওয়ার পর তার স্থলাভিষিক্ত হন আশুতোষ মুখোপাধ্যায়। দেশভাগের পর ১৯৫১ সালের ১ জুলাই কলকাতার একটি ভবনে সোসাইটিকে পুনরুজ্জীবিত করে এর নামকরণ করা হয় এশিয়াটিক সোসাইটি। ১৯৫২ সালের ৩ জানুয়ারি পূর্ব পাকিস্তানে এর নামকরণ করা হয় এশিয়াটিক সোসাইটি অব পাকিস্তান। এর পুনর্গঠনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যক্ষ ও প্রফেসর ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ এবং ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক আহমদ হাসান দানী।

স্বাধীনতার পর পুনর্গঠিত সোসাইটির নামকরণ করা হয় এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশ। এর পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন প্রফেসর এবিএম হাবিবউল্লাহ, ড. আহমদ শরীফ, সৈয়দ মুর্তজা আলী, কামরুদ্দিন আহমদ, প্রফেসর সিরাজুল হক প্রমুখ।

ড. মাহমুদ নাসির জাহাঙ্গীরি : প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, বাংলা বিভাগ, মিরপুর কলেজ

mahmoodnasirjahangiri@gmail.com

 

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম