Logo
Logo
×

অল্পকথা

নিরাপদ খাদ্য ও সচেতনতা

Icon

প্রদীপ সাহা

প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

অনেক সময় সঠিকভাবে খাদ্য তৈরি ও সংরক্ষণের অভাবে আমরা খাদ্যবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হই এবং এতে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। অথচ একটু সচেতন হলেই আমরা সহজে এ সমস্যার সমাধান করতে পারি। অনেক খাদ্য যেমন ফলমূল, শাকসবজি প্রভৃতি স্বাভাবিক অবস্থায় নিরাপদ নয়। কাঁচা খাদ্য যেমন লেটুস, ধনে পাতা, গাজর, টমেটো প্রভৃতি ভালোভাবে ধুয়ে সহজেই খাওয়া যায়। স্বাভাবিক অবস্থায় যেসব খাদ্য খাওয়া যায়, সেসব খাদ্য ভালোভাবে ধুয়ে তারপর খেতে হবে। তবে কাঁচা দুধ রান্না করা ছাড়া নিরাপদ নয়। অনেক কাঁচা খাদ্য, বিশেষ করে মুরগি বা অন্যান্য মাংস এবং জ্বাল দেওয়া দুধ কখনো কখনো ক্ষুদ্র জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়। রান্নার মাধ্যমে এসব জীবাণু মরে যায়। তবে তা যেন অবশ্যই খাদ্যের সব অংশে কমপক্ষে ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রান্না হয়। যখন রান্না করা খাদ্য ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় থাকে, তখন বিভিন্ন অণুজীব এতে আশ্রয় নেয়। যত সময় ধরে খাওয়ার অপেক্ষা করা হবে, খাদ্যে ততই ঝুঁকি বাড়তে থাকবে। তাই রান্নার সঙ্গে সঙ্গে গরম অবস্থায় খেয়ে নেওয়াই নিরাপদ।

খাদ্য যদি কখনো রেখে দেওয়ার প্রয়োজন হয়, তবে তা গরম (সর্বোচ্চ ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) অথবা ঠান্ডা (সর্বনিম্ন ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) উভয় অবস্থায় রাখা উচিত। এ নিয়ম প্রযোজ্য হবে যদি সেসব খাদ্য ৪-৫ ঘণ্টার বেশি সময় পরে খেতে চান। রান্না করা খাদ্য রেখে দিলে বা সংরক্ষণ করা হলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে অণুজীবগুলো এতে বাসা বাঁধতে পারে। তাই খাওয়ার আগে ওইসব খাদ্য পুনরায় কমপক্ষে ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় গরম করে খেতে হবে। নিরাপদ রান্না করা খাদ্য কাঁচা খাবারের সঙ্গে সামান্য সংস্পর্শের মাধ্যমে দূষিত হতে পারে। এই দূষিত সরাসরি হতে পারে, যেমন কাঁচা বা অল্প রাঁধা মুরগির মাংস যদি রান্না করা খাবারের সংস্পর্শে আসে। যে পাত্রে কাঁচা মাংস রাখা হয়, সেই পাত্রে মাংস রাখা এবং যে ছুরি দিয়ে মুরগি কাটা হয় সেই ছুরি দিয়ে রান্না করা ঠিক নয়। এতে রোগজীবাণুর বিস্তার ঘটতে পারে।

কাঁচা খাদ্য যেমন মাছ, মাংস প্রভৃতি রান্নার পর ভালো করে হাত ধুয়ে নিতে হবে। বাড়ির পোষা পশু-পাখি হাত দিয়ে নাড়াচাড়া করে বা ধরে ভালোভাবে হাত না ধুয়ে খাদ্য তৈরি করা উচিত নয়। এতে রোগজীবাণু খাদ্যের মধ্যে বিস্তার ঘটাবে। যেসব ন্যাকড়া দিয়ে রান্নাঘর ধোয়ামোছা করা হয়, পরবর্তী সময়ে সেগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার করে ব্যবহার করতে হবে। রান্নার কাজে ব্যবহৃত পাত্রগুলোও প্রতিদিন ব্যবহারের ক্ষেত্রে গরম পানিতে ভালো করে ধুয়ে নেওয়া উচিত। মেঝে পরিষ্কারের ন্যাকড়াও প্রতিদিন পরিষ্কার করা উচিত।

পোকামাকড়, ইঁদুর ও অন্যান্য প্রাণী খুব সহজেই খাদ্যে রোগজীবাণু ছড়াতে পারে। কাজেই খাদ্য রাখার পাত্রগুলো ভালোভাবে ঢেকে রাখতে হবে যেন পোকামাকড় বা অন্যান্য প্রাণী খাদ্যের ওপর বসতে না পারে এবং মুখ দিতে না পারে। পান করার জন্য যেমন বিশুদ্ধ পানি দরকার, তেমনই খাদ্য তৈরির জন্যও বিশুদ্ধ পানি গুরুত্বপূর্ণ। সরবরাহকৃত পানির ব্যাপারে সন্দেহ হলে রান্নার আগে তা অবশ্যই ফুটিয়ে বা সেদ্ধ করে নিতে হবে। বিশেষ করে শিশুদের খাবার তৈরির ক্ষেত্রে বিশুদ্ধ পানি ব্যবহারের প্রতি অবশ্যই সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। আসুন, খাদ্য নিরাপদ রাখতে নিজেরা সচেতন হই এবং অন্যকেও সচেতন করে তুলি।

প্রদীপ সাহা : প্রাবন্ধিক

pradipsaha509@gmail.com

 

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম