কারিগরি শিক্ষায় গুরুত্ব বাড়াতে হবে
মো. শাহ্ নেওয়াজ মজুমদার
প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বর্তমানে প্রযুক্তির সান্নিধ্যে থেকে বাস্তবধর্মী ও হাতে-কলমের শিক্ষাই হলো কারিগরি শিক্ষা। এ শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীকে তথ্যপ্রযুক্তি, শিল্প, কৃষি ও কলকারখানার যন্ত্রপাতি ব্যবহারের জন্য আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মতভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আমাদের শ্রমবাজারকে আধুনিকায়নের মাধ্যমে দক্ষ শ্রমিকে রূপান্তর এবং দেশের শিল্পায়নের পথে কারিগরি শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বর্তমান চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে আমাদের দেশে কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব আরও বেড়েছে। আমাদের এখন প্রয়োজন দক্ষ কারিগর ও অপারেটর। সবার বিএ, এমএ পাশ করার দরকার নেই। কারণ এসব ডিগ্রির সার্টিফিকেটধারীকে চাকরি দেওয়ার সুযোগ আমাদের দেশে কম এবং বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত না হলে বিদেশেও চাকরির সুযোগ নেই বললেই চলে। বর্তমান বিশ্বে চাকরির বাজারে উৎপাদনশীল খাতই সবচেয়ে বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে থাকে। বর্তমানে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে শিল্পায়নের ফলে নতুন নতুন শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠছে আর তাতে বিনিয়োগ করছে পৃথিবীর বড় বড় পণ্য ও সেবা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। এসব কারণেই বর্তমানে কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব প্রতিনিয়ত বাড়ছে।
আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থায় উন্নত দেশগুলো কারিগরি শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে উৎপাদনমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে দেশের উৎপাদনক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আধুনিক যন্ত্রপাতি এবং উপকরণ ব্যবহার ও কৌশল প্রয়োগ করে শিল্প ও কৃষিতে বিপ্লব ঘটিয়েছে। কারিগরি শিক্ষা একটি উৎপাদনভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা, যা দেশের জাতীয় আয় বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। কারিগরি শিক্ষা শ্রমিকের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে। এতে করে শ্রমিক সহজেই দেশীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে প্রবেশ করে বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ বৃদ্ধি করে। কারিগরি শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পায়, প্রয়োজনীয় মুলধন অর্জন করে জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব হয়। কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে চীন তার বিশাল জনগোষ্ঠীকে মানবসম্পদে রূপান্তর করে শিল্পায়নে ইউরোপের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে। দারিদ্র্য বিমোচনে, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে, আত্মকর্মসংস্থান, উদ্যোক্তা উন্নয়ন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম।
কারিগরি শিক্ষায় প্রয়োজনীয় ও পরিকল্পিত বিনিয়োগের মাধ্যমে আমাদের দেশের জনগোষ্ঠীকেও জনসম্পদে রূপান্তর করা সম্ভব। বস্তুত প্রশিক্ষিত মানবসম্পদের জোগান দেওয়াই হলো কর্মমুখী ও কারিগরি শিক্ষার মূল লক্ষ্য। সর্বোপরি কারিগরি ও প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষার মাধ্যমেই দেশে শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি সম্ভব। কারিগরি শিক্ষায় বিনিয়োগে রেইট অব রিটার্ন সব সময়ই বেশি।
মো. শাহ্ নেওয়াজ মজুমদার : হেড অব অপারেশন ও সহযোগী অধ্যাপক, ড্যাফোডিল ইনস্টিটিউট অব আইটি, চট্টগ্রাম
mshahnewazmazumder@gmail.com
