|
ফলো করুন |
|
|---|---|
২০১৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ সভায় বেকারত্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এবং যুব সম্প্রদায়ের জন্য অধিকতর আর্থ-সামাজিক পরিবেশ নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে দক্ষতা ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিবছর জুলাই মাসের ১৫ তারিখকে ‘বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস’ হিসাবে উদযাপনের সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। এরপর থেকে প্রতিবছর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও দিনটি যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে উদযাপন করে আসছে।
বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৮ অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করা হয়, যার কার্যক্রম শুরু হয়েছে ২০১৯ সালে। বাংলাদেশের দক্ষতা উন্নয়ন ও ইকোসিস্টেমের মৌলিক কাঠামো পরিবর্তনের লক্ষ্যে গঠিত প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বোর্ডের চেয়ারম্যান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন নীতি, কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করে এ প্রতিষ্ঠান। যুবকদের যুবশক্তিতে রূপান্তরই এ প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য।
এমডিজিতে বাংলাদেশের অর্জন ছিল ঈর্ষণীয়। সামনে লক্ষ্য হচ্ছে, ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন, ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন। জনশুমারি ২০২২ অনুসারে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার একটি বিশাল অংশ তরুণ-যুবক শ্রেণির। বাংলাদেশ বর্তমানে অনুকূল জনমিতিক সুবিধা ভোগ করছে, যা ২০৩৩ সাল পর্যন্ত বলবৎ থাকবে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।
২০২৩ সালে বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবসের প্রতিপাদ্য হলো-‘পরিবর্তনশীল আগামীর জন্য দক্ষতা’। প্রতিবছর দেশের প্রায় ২২ লাখ কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী শ্রমবাজারে যুক্ত হচ্ছে। সরকার যুবকদের দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য তৃণমূল পর্যায়ে যুব উন্নয়ন, পল্লী উন্নয়ন বোর্ড, মহিলা বিষয়ক, সমাজসেবা, কৃষি, মৎস্য, প্রাণিসম্পদসহ অনেকগুলো দপ্তরের মাধ্যমে যুবকদের প্রশিক্ষণ, প্রণোদনা এবং স্বল্পসুদে ঋণ প্রদানের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্মার্ট নাগরিক গঠনে যুবকদের উদ্ভাবনী ধারণায় টেকনোলজি জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এ সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার জন্য প্রতিটি জেলায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে স্মার্ট কর্মসংস্থান মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। বিশ্বায়নের এ যুগে উন্নয়নে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে দক্ষ যুবশক্তি গড়ে তোলার বিকল্প নেই। টেকনোলজিভিত্তিক নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকার আইটি পার্ক গড়ে তোলার কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।
বিবিএসের জরিপে ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) দেশে বেকারত্বের হার ৩.৫১ শতাংশ। জলবায়ু পরিবর্তনে বিভিন্ন পেশা-শ্রেণির মানুষ কর্মসংস্থান হারাচ্ছে। আবার কারও কারও কর্মসংস্থান পরিবর্তন হচ্ছে। এক্ষেত্রে পরিবর্তিত বিশ্বে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষ যুবকদের কর্মসংস্থান বিস্তারে টেকনোলজিভিত্তিক কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সরকারের পাশাপাশি টেকনোলজি খাতে বিদেশি বিনিয়োগকারী, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসতে হবে।
মো. বেলায়েত হোসেন : সহকারী তথ্য অফিসার, রামগড়, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা
belayethussain42@gmail.com
