Logo
Logo
×

অল্পকথা

নারীর ক্ষমতায়নে তথ্যপ্রযুক্তি

Icon

ঐশি আলম পৃথ্বি

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে। রাজনীতি, অর্থনীতি, সরকারি-বেসরকারি চাকরিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে। নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে নারীর অর্থনৈতিক মুক্তি। একজন নারী যখন স্বাবলম্বী হবে, তখন ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক-সব ক্ষেত্রে তাদের মতামত ও অংশগ্রহণ সহজ হবে। বর্তমানে বাংলাদেশে নারীর অর্থনৈতিক মুক্তিতে বিশেষভাবে প্রভাব রাখছে প্রযুক্তি। প্রযুক্তির কল্যাণে নারীরা ঘরে বসে দেশ-বিদেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ পাচ্ছে। সেক্ষেত্রে তাদের কাজকে ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। কারণ কাজের গণ্ডি মোটেও ছোট নয় বরং বৃহৎ পরিসরে তারা কাজ করতে পারছে। দেশ ও দেশের বাইরে বিভিন্ন রকম ওয়েবসাইটে নারীদের জন্য কাজের দরজা উন্মুক্ত হচ্ছে। ডেটা এন্ট্রি, অনলাইন টিউটর, অনুবাদ ইত্যাদি সার্ভিস প্রদান করে ঘরে বসেও অনলাইনে কাজ করা সম্ভব। সব মার্কেটপ্লেসেই দেখা যায় এসব কাজের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসা, মার্কেটিং, ডিজাইনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীরা কাজের সুযোগ পাচ্ছে।

বেসরকারি সমীক্ষা বলছে, দেশে ৩ কোটি ৫৮ লাখেরও বেশি ফেসবুক ব্যবহারকারী রয়েছে। ফেসবুক বর্তমানে অন্যতম শক্তিশালী একটি যোগাযোগ মাধ্যম। এটি যেমন গণমাধ্যমের কাজ করছে, ঠিক তেমনিভাবে কাজ করছে মার্কেটিংয়ের জন্যও। হাতে হাতে স্মার্টফোন ও ফেসবুক থাকায় খুব সহজেই মানুষ এর দ্বারা নিজের কাজ পৌঁছে দিতে পারছে। এর ফলে গড়ে উঠছে ফেসবুকভিত্তিক ক্ষুদ্র ব্যবসা। বর্তমানে দেখা যায়, জামা-কাপড়, প্রসাধনী, গয়না, গেজেট ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের পণ্য অনলাইনে বিক্রি হচ্ছে। তরুণ প্রজন্মের নারীরা খুব সহজেই কাজে লাগাতে পারছে এ প্রযুক্তিকে। প্রযুক্তি যেহেতু পৌঁছে গেছে আমাদের ঘরে ঘরে, তাই গৃহিণীরাও বসে নেই; তারাও প্রযুক্তির সুফল ভোগ করছে। তারা তাদের রান্না অথবা সেলাইকে চার দেওয়ালের মধ্যে বন্দি করে না রেখে বরং একে কাজে লাগিয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে নারীরা নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারছে। ডিজিটাল মার্কেটিং, কনটেন্ট ক্রিয়েটিং, ডেটা এন্ট্রি, ই-মেইল রাইটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইনসহ বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারছে। বর্তমান অনলাইনভিত্তিক বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কল্যাণে নারী একই সঙ্গে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারছে এবং এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতাসহ বিভিন্ন রকম কাজের সুযোগ পাচ্ছে।

নারী যাতে পিছিয়ে না থাকে, কর্মদক্ষ হয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ পায়, এজন্য বর্তমান সরকার বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করছে, যা নারীর ক্ষমতায়নে যেমন প্রভাব রাখছে, তেমনই তা প্রশংসারও দাবিদার। নারীদের কর্মদক্ষ করে তুলতে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর নারীদের কম্পিউটার, গ্রাফিক্স, টেইলারিং, নার্সারি, মাশরুম চাষ, বিউটিফিকেশন প্রভৃতি বিষয়ে প্রশিক্ষণের কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যাতে নারী দক্ষতার সঙ্গে বিভিন্ন কাজের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে। দেশজুড়ে নারী যত দ্রুত কর্মদক্ষ হয়ে উঠবে, নারী ক্ষমতায়নের হার তত বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি আইটি সেক্টরে দক্ষতা নারীর বর্তমান প্রযুক্তির সুফল ভোগে সহায়তা করবে এবং নারীর অগ্রযাত্রাকে কয়েক ধাপ এগিয়ে নেবে।

ঐশি আলম পৃথ্বি : বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী

 

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম