Logo
Logo
×

অল্পকথা

পথশিশুদের দুর্দশা কাটবে কবে?

Icon

রাহাত আহমেদ

প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

গতকাল ছিল বিশ্ব পথশিশু দিবস। আমরা যে শিশুদের দেখি রাস্তার পাশে ঘুমাতে, ছেঁড়া বস্ত্র গায়ে নগরীর অলিগলিতে ঘুরে বেড়াতে, কখনোবা টাকার জন্য হাত বাড়াতে, তারাই হলো পথশিশু। এ শিশুরা সবচেয়ে বেশি অবহেলিত ও দুর্দশাগ্রস্ত। এদের যত্ন নেওয়ার জন্য নেই কোনো অভিভাবক, নেই কোনো শিক্ষার ব্যবস্থা। খেলাধুলা করার বয়সে এরা নিয়োজিত হচ্ছে এক কঠিন জীবনযুদ্ধে। এদের দেখা যায় জোগালির কাজ করতে, ফুল বিক্রি করতে, হোটেলে কাজ করতে, কখনোবা ভিক্ষা করতে। নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে এরা ছুটে বেড়ায়। মানুষের লাথি, ঘুসি আর খাবারের উচ্ছিষ্ট অংশ খেয়ে এরা বেড়ে ওঠে। পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করাই যেন তাদের জীবনের সবচেয়ে বড় অপরাধ। চোর, ছিনতাইকারী, মাদক ব্যবসায়ীদের মতো দুষ্ট লোকদের সহবতে এরা বেড়ে উঠছে। ওইসব দুষ্ট লোক শিশুদের ব্যবহার করছে মাদক সরবরাহ ও ভিক্ষার কাজে, চুরির কাজে।

ঢাকায় প্রায়ই অনেক শিশুকে দেখা যায় মানুষের কাছে টাকা চাইতে; কিন্তু টাকার বদলে খাবার খাওয়াতে চাইলে তারা খেতে চায় না। তারা শুধু টাকা চায়। খাবার খাওয়াতে চাইলে দৌড়ে পালিয়ে যায়। তখনই বোঝা যায় তারা কোনো এক দুষ্ট চক্রের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এখন রাস্তায় বের হলেই দেখা যায় ছোট ছোট শিশুরা পকেট মেরে, ফোন টান দিয়ে চুরি করে পালাচ্ছে। কে এদের চুরি করা শেখালো? কে শেখালো পকেট মারার কৌশল?

পথশিশুরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে মাদকে। এক জরিপে দেখা গেছে, দেশের ৬০ শতাংশ পথশিশু মাদকাসক্ত। রাস্তায় বের হলে দেখা যায় ছোট ছোট ছেলেদের ‘ডেন্ডি’ খেতে। তাদের একজনকে ‘ডেন্ডি’ খাওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করলে সে বলে, ‘এটা খেলে ক্ষুধা লাগে না। শরীরে ব্যথাও করে না।’ আহ, কী জীবন! এভাবে তারা মারাত্মক সব রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ধাবিত হচ্ছে ধ্বংসের দিকে।

আমরা বুঝতে পারছি না, কেন তারা সরকারের এবং বড় বড় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নজরে পড়ছে না। এদের সঠিকভাবে যত্ন নেওয়া হলে এরা হয়ে উঠবে ‘নগরফুল’, যার সুবাসে উজ্জীবিত হবে গোটা নগর। গড়ে উঠবে মানবিক সমাজ। এদেশ হয়ে উঠবে সত্যিকারের সোনার বাংলাদেশ।

রাহাত আহমেদ : শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

 

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম