সফল উদ্যোক্তা হতে হলে
মারুফ লিয়াকত, সৈয়দ রবিউস সামস
প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সফল উদ্যোক্তা হতে হলে প্রথমেই জানতে হবে উদ্যোগ কী এবং উদ্যোক্তা কে। সাধারণভাবে উদ্যোক্তাকে ব্যবসায়ীও বলা যেতে পারে। কিন্তু একজন উদ্যোক্তা আর ব্যবসায়ীর মধ্যে খানিকটা তফাৎ রয়েছে। সব উদ্যোক্তাই ব্যবসায়ী, কিন্তু সব ব্যবসায়ী উদ্যোক্তা নন। যেমন, একজন মুদি দোকানদার ব্যবসায়ী হলেও উদ্যোক্তা নন। তিনি উদ্যোক্তা তখনই হবেন, যখন তিনি মানুষের কোনো একটি সমস্যা গৎবাঁধা নিয়মে সমাধান না করে একটু উদ্ভাবনী উপায়ে সমাধান করবেন। আরও বিস্তারিতভাবে বললে, উদ্যোগ ও উদ্ভাবনী এ দুইয়ে মিলেই হয় উদ্যোক্তা। এক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। একটি হলো, উদ্যোক্তা হওয়ার কোনো বয়স নেই এবং উদ্যোক্তা হতে হলে আর্থিক সামর্থ্য থাকতেই হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। যে কেউ উদ্যোক্তা হতে পারেন। তবে এজন্য নিচের বিষয়গুলোর প্রতি অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।
প্রথমেই দরকার আত্মোৎসর্গিত মনোভাব। একজন উদ্যোক্তা তার উদ্যোগ গ্রহণ করে কঠিন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে। যে কোনো খারাপ পরিস্থিতি সামলে ওঠা ও ব্যর্থতার দায়ভার গ্রহণের সামর্থ্যও তার থাকতে হবে। ব্যর্থতার কথা চিন্তা না করে কাজে গভীরভাবে মনোনিবেশ করে সফল হওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। সেই সঙ্গে প্রথমেই সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে হবে। হতে পারে একজন ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে কোনো সমস্যায় পড়েছেন অথবা আশপাশে কেউ অনেকটা একই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন। অথবা সেটা কোনো সামাজিক সমস্যাও হতে পারে। মোটকথা, সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা এবং এর একটি উদ্ভাবনী সমাধান বের করা প্রয়োজন।
এর পরের কাজ হলো সমস্যার উদ্ভাবনী সমাধানের একটি ব্যবসায়িক মডেল দাঁড় করানো। মোটামুটি এতটুকু হয়ে গেলেই প্রারম্ভিক কাজ অনেকটা শেষ হয়ে যাবে। এরপর কাজটি এগিয়ে নেওয়া এবং এর একটি সফল পরিণাম দেওয়ার জন্য একটা টিম গঠন করতে হবে। এটি দুভাবে হতে পারে। প্রথমত, টিমের এক বা একাধিক কো-ফাউন্ডার থাকতে পারে। কো-ফাউন্ডার হচ্ছেন তারা, যারা সমস্যা নিয়ে ভাবেন। টিমে অবশ্যই ভিন্ন ভিন্ন সেক্টরের মানুষ থাকতে হবে। যেমন, কেউ বিপণন, কেউ প্রকৌশল, আবার কেউবা সামাজিক বিজ্ঞানের ছাত্র। এতে করে টিমে বৈচিত্র্য আসবে। দ্বিতীয়ত, কেউ চাইলে নিজেই উদ্যোগটি নিয়ে এগিয়ে যেতে পারেন। আর এজন্য একজন বিপণন কর্মকর্তা, হিসাববিজ্ঞান কর্মকর্তা এবং একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিয়ে টিম গঠন করে কাজ শুরু করতে পারেন। সমস্যার সমাধান হতে পারে কোনো পণ্য অথবা সেবা নিয়ে। সমাধান যা-ই হোক, তার জন্য প্রথমে একটা প্রটোটাইপ বানাতে হবে। প্রটোটাইপ হলো সমস্যা সমাধানের একটা বাস্তব মডেল, যা সমাধানকে চিত্রিত করবে।
একটা কথা বলে রাখা প্রয়োজন-কোনো ব্যবসা পরিচালনার জন্য অভিজ্ঞতা না থাকলে উচিত হবে কোথাও কাজ করে বা কোনো পার্টটাইম জব করে ব্যবসার খুঁটিনাটি বিষয়গুলো হাতে-কলমে শিখে নেওয়া। এতে করে নেটওয়ার্কিং বাড়বে, যা পরবর্তীকালে ক্লায়েন্ট বৃদ্ধি ও পণ্যের গুণগত মানোন্নয়নে সাহায্য করবে। উদ্যোক্তা হতে হলে অনেকের সঙ্গে কথা বলতে হবে। বিনিয়োগকারী, কাস্টমার এবং অন্যান্য উদ্যোক্তাসহ আরও অনেকের সঙ্গে। ভালো যোগাযোগ দক্ষতা না থাকলে বিষয়টি কঠিন। হয়তো কারও কাছে খুব ভালো আইডিয়া বা ভালো পণ্য আছে। কিন্তু সঠিকভাবে যোগাযোগ বা পণ্যের কার্যকারিতা বোঝাতে না পারলে খুব একটা লাভ হবে না। তাই একজন সফল উদ্যোক্তা হতে গেলে যোগাযোগে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। সেই সঙ্গে নেতৃত্বদানের গুণাবলীও অর্জন করতে হবে।
মারুফ লিয়াকত : সিইও, ইন্টেরিয়র স্টুডিও
সৈয়দ রবিউস সামস : সিইও, রদিয়া আইএনসি
