Logo
Logo
×

অল্পকথা

ফুসফুসের রোগ সিওপিডি

Icon

ডা. এসএম আবদুল্লাহ আল মামুন

প্রকাশ: ১৫ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সিওপিডি বা ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ হলো ফুসফুসের তীব্র প্রদাহজনিত রোগ; যার ফলে ফুসফুসে ঠিকমতো বায়ু পরিবাহিত হতে পারে না। সিওপিডির প্রধান কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ধূমপান ও বায়ুদূষণ। এছাড়া ফুসফুসে দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণের ফলে সিওপিডি হতে পারে। যদিও সিওপিডির মূল কারণ হিসাবে ধূমপানকে দায়ী করা হয়; তবে গবেষণায় দেখা গেছে, সিওপিডি আক্রান্ত প্রতি চারজনের একজন কখনো ধূমপান করেননি।

সারা বিশ্বে মৃত্যুহার বৃদ্ধি এবং রোগ উপসর্গের একটি প্রধান কারণ হলো সিওপিডি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সারা বিশ্বে সাড়ে ৬ কোটি মানুষ সিওপিডি রোগে মাঝারি থেকে গুরুতরভাবে আক্রান্ত।

সিওপিডির সাধারণ উপসর্গগুলো হলো-শ্বাসপ্রশ্বাসে অসুবিধা, কফসহ দীর্ঘস্থায়ী কাশি এবং অবসাদবোধ করা। এ লক্ষণগুলো সময়ের সঙ্গে দ্রুত খারাপ হতে পারে। তাই এগুলোকে বলা হয় একিউট এক্সারবেশন। এগুলো সাধারণত কয়েকদিন স্থায়ী হয় এবং প্রায়ই অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের প্রয়োজন হয়। সিওপিডি আক্রান্ত ব্যক্তিরা অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার ক্ষেত্রে উচ্চ ঝুঁকিতে থাকে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে-ফুসফুসের সংক্রমণ যেমন-ফ্লু বা নিউমোনিয়া, ফুসফুসের ক্যানসার, হার্টের সমস্যা, দুর্বল পেশি ও ভঙ্গুর হাড়, বিষণ্নতা ও উদ্বেগ।

সিওপিডি নির্ণয়ে স্পাইরোমেট্রি নামক একটি সাধারণ শ্বাসপ্রশ্বাসের পরীক্ষা করা হয়। সিওপিডির চিকিৎসার পদক্ষেপগুলো হলো-১. ধূমপান ত্যাগ করা : সিওপিডি চিকিৎসার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো ধূমপান বন্ধ করা। বাড়িতে ও কর্মক্ষেত্রে তামাকের ধোঁয়া এবং অন্যান্য বায়ুদূষণের মাত্রা কম রাখা ও এড়িয়ে চলা। ২. পর্যাপ্ত ওষুধ : কাশি বা শ্বাসকষ্টের মতো লক্ষণগুলো ব্রঙ্কোডাইলেটর, স্টেরয়েড ও অ্যান্টিবায়োটিকের মতো ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা যেতে পারে। ৩. পালমোনারি রিহ্যাবিলিটেশন এক ধরনের চিকিৎসা প্রোগ্রাম; যাতে ফার্মাকোলজিক্যাল চিকিৎসা, শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম, পুষ্টি সহায়তা, টিকা এবং দৈনন্দিন জীবনমান উন্নত করতে কাউন্সেলিং করা হয়ে থাকে। ৪. ফুসফুসের সংক্রমণ প্রতিরোধ ও চিকিৎসা : সিওপিডি পরীক্ষা। প্রতিবছর একবার ফ্লু শট এবং নিউমোনিয়া ভ্যাকসিন, বিশেষ করে সিওপিডি শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য সে অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করা উচিত। ৫. সম্পূরক অক্সিজেন: কোর পালমোনারি বা হার্ট ফেইলিউর হওয়ার আশঙ্কা থাকলে অক্সিজেন দেওয়ার জন্য একটি বহনযোগ্য অক্সিজেন ট্যাংকের প্রয়োজন হতে পারে।

এ রোগ কখনো সম্পূর্ণ সারে না। কিন্তু সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা করালে সিওপিডি আক্রান্ত ব্যক্তিও সুস্থভাবে জীবনযাপন করতে পারেন।

ডা. এসএম আবদুল্লাহ আল মামুন : সিনিয়র কনসালটেন্ট, রেসপিরেটরি মেডিসিন, এভারকেয়ার হসপিটাল, ঢাকা

 

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম