সত্যের সন্ধানে নির্ভীক
মো. এমদাদুর রহমান উদয়
প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সংবাদপত্রকে বলা হয় জাতির আয়না। সত্য ও সুন্দরের পথে দেশকে পরিচালনা করতে পত্রিকাই প্রধান চালিকাশক্তি হিসাবে কাজ করে। আর এই গুরুদায়িত্বকে ব্রত হিসাবে গ্রহণ করেই এগিয়ে চলেছে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ও জনপ্রিয় পত্রিকা যুগান্তর। পত্রিকাটি দেশের অন্যতম বাংলা দৈনিক হিসাবে স্বীকৃত।
‘সত্যের সন্ধানে নির্ভীক’ স্লোগান সামনে রেখে ২০০০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি যুগান্তরের যাত্রা শুরু হয়। হাঁটিহাঁটি পায়ে এগিয়ে চলতে চলতে এ বছর দুই যুগ পেরিয়ে ২৫ বছরে পদার্পণ করেছে এ দৈনিক। তবে সৃষ্টিলগ্নে এর যাত্রার পথটি সহজ ছিল না। এ শতাব্দীর শুরুতে যখন পত্রিকাটির যাত্রা শুরু হয়, তখন এদেশে পত্রিকা পাঠকের সংখ্যা ছিল খুবই অল্প। তাই মানুষকে পত্রিকা পাঠে আগ্রহী করে তোলা ছিল বিরাট চ্যালেঞ্জ। এমন বিরুদ্ধ পরিস্থিতিতেই জাতির মেধা ও মননের বিকাশে এবং জ্ঞান বিস্তারের লক্ষ্যে একটি দৈনিক পত্রিকা প্রকাশের কথা ভেবেছিলেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, বাঙালি উদ্যোক্তা এবং যমুনা গ্রুপের কর্ণধার নুরুল ইসলাম। তার বিচক্ষণতা, দূরদর্শিতা, বছরের পর বছর নিরন্তর প্রচেষ্টা ও সাধনা যুগান্তরকে আজকের পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছে। বর্তমানে যুগান্তর যমুনা গ্রুপের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
সাংগঠনিক দক্ষতায় পারদর্শী নুরুল ইসলাম যুগান্তরকে গড়ে তুলেছেন অত্যন্ত নিখুঁত ও পরিপক্বভাবে। বিশিষ্ট সাংবাদিক গোলাম সারওয়ারের হাত ধরে যাত্রা শুরু হয়েছিল যুগান্তরের। তিনি ছিলেন যুগান্তরের প্রতিষ্ঠাকালীন সম্পাদক। তিনি পরম যত্নে এ পত্রিকাকে পাঠকের কাছে পৌঁছে দেন। বর্তমানে পত্রিকাটির সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন বিশিষ্ট সাংবাদিক সাইফুল আলম। তিনি এ পত্রিকার ভাবমূর্তিকে এক অনন্য উচ্চতায় আসীন করেছেন। পত্রিকাটির প্রকাশনার দায়িত্বে আছেন নুরুল ইসলামের সহধর্মিণী এবং সাবেক মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সালমা ইসলাম।
সত্য প্রচারে আপসহীন এই দৈনিকটি প্রতিদিন পাঠকের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে দেশে-বিদেশে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনার তথ্য ও চিত্র। ফলে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এর সুখ্যাতি। সামাজিক নানা সমস্যা ও তার প্রতিকার, রাজনৈতিক চেতনা, ক্রীড়াঙ্গন, মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, বাংলা ও বাঙালির ঐতিহ্য-সবকিছুই এ পত্রিকায় তুলে ধরা হয় স্পষ্টভাবে। সত্য প্রচারের প্রশ্নে সর্বদা দৃঢ় ও অবিচল থাকার মানসিকতা যুগান্তরকে অনন্য বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত করেছে, যা স্থান করে নিয়েছে মানুষের হৃদয়ে।
সংবাদ পরিবেশনের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডেও যুগান্তর সক্রিয়ভাবে জড়িত রয়েছে। এটি পাঠক সংগঠন স্বজন সমাবেশের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন ও মাদকবিরোধী আন্দোলনসহ যুব উন্নয়নমূলক নানা কর্মসূচি পালন করে থাকে। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা, বই উৎসব, শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাসহ সমসাময়িক নানা কর্মসূচি পালন করে থাকে। প্রতিষ্ঠার সূচনালগ্নে শুধু মুদ্রিত পত্রিকা প্রকাশিত হলেও বর্তমানে মুদ্রণ ও অনলাইন উভয় সংস্করণ সহজলভ্য হওয়ায় বহির্বিশ্বে এর গ্রহণযোগ্যতা অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে।
পত্রিকা যে একটি দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে পারে, তার জ্বলন্ত উদাহরণ যুগান্তর। দুই যুগ ধরে পাঠকের মনের খোরাক, মেধা ও মননের বিকাশে একযোগে কাজ করে আসছে পত্রিকাটি। সত্যের পথ যত কণ্টকাকীর্ণই হোক, তা জনসমক্ষে তুলে ধরার দীপ্ত প্রয়াস নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে লাখো পাঠকের ভালোবাসায় যুগান্তর। তাই দুই যুগ পেরিয়েও সত্যের পথে আরও উজ্জীবিত হয়ে আপন গতিতে ছুটে চলেছে পত্রিকাটি। পাঠকের ভালোবাসাকে হৃদয়ে ধারণ করে সত্য ও সঠিক পথে অবিচল থাকুক যুগান্তর, ২৫ বছরে পদার্পণের এ সময়ে এটাই পাঠকের প্রত্যাশা।
মো. এমদাদুর রহমান উদয় : শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
