Logo
Logo
×

অল্পকথা

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুফল-কুফল

Icon

মো. সোহান হোসেন

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) বলতে বোঝায় মানুষের বুদ্ধি কৃত্রিম উপায়ে বিভিন্ন ধরনের কম্পিউটার প্রযুক্তি ব্যবহার করে উপস্থাপন করা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ গণিতজ্ঞ অ্যালান টুরিং প্রথম এ নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছিলেন। বর্তমানে কৃষিকাজ থেকে শুরু করে বিমান চালনা পর্যন্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে এআইর ব্যবহার লক্ষ করা যায়। কৃষি যন্ত্রপাতির ক্ষেত্রে খরচ কমানোর জন্য অটোমেটেড সিস্টেম আবিষ্কার হয়েছে, যেখানে এআইর প্রয়োগ ঘটানো হয়েছে। যে কোনো ধরনের অ্যালগরিদম, ফ্লোচার্ট অথবা প্রমোশন লেটার, রিজাইন লেটার, ডেটা এনালাইসিসসহ সব ধরনের অফিসের কাজ এআইর মাধ্যমে করা সম্ভব। শিক্ষা, গবেষণা, চিকিৎসাসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে এআইর ব্যবহার শুরু হয়েছে। ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনার জন্য অল্প সময়ে যে কোনো ধরনের তথ্য চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করে পেয়ে যাচ্ছে। কোনো আবেদনপত্র, সিভি লেখার জন্য আর দীর্ঘ সময় কম্পিউটারের দোকানে বসে থাকার প্রয়োজন নেই। এক নিমিষে চ্যাট জিপিটির মাধ্যমে লেখা সম্ভব। বর্তমানে গবেষণা করার জন্য চ্যাট ব্যবহার করা হচ্ছে, যা আগে কল্পনাও করা যায়নি। এছাড়া বিনোদনের ক্ষেত্রেও ব্যবহার হচ্ছে এআই। এমনকি ছোটদের ছবি আঁকার ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হচ্ছে এআই।

বর্তমানে এআই ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের আধুনিক যন্ত্র এমনভাবে ডেভেলপ করা সম্ভব হচ্ছে, যা হুবহু মানুষের মতো কাজ করতে পারে। এটি বিজ্ঞানের জগতে এক অনন্য আবিষ্কার। ধরুন আপনি একজন চাকরিজীবী। অফিসে যাতায়াতের জন্য আপনার গাড়ি প্রয়োজন, কিন্তু আপনি গাড়ি চালাতে পারেন না। বর্তমানে এ সমস্যার সমাধানও এআই দিয়ে করা সম্ভব। আধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে এমন সব গাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে, যেখানে চালকের প্রয়োজন নেই। এআই ব্যবহারের মাধ্যমে চালকবিহীন গাড়ি চালানো সম্ভব।

এআই ব্যবহারে রয়েছে নানাবিদ সুবিধা। কিন্তু অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে তৈরি হচ্ছে আসক্তি। এতে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ। এর মধ্যে প্রধান হচ্ছে তথ্যের নিরাপত্তা। এআই ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ভুয়া সফটওয়্যার ব্যবহার করে গোপন তথ্য হাতিয়ে নেওয়া সম্ভব। আবার অতিরিক্ত এর ব্যবহারের ফলে আপনি মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়তে পারেন। আমরা জানি, একজন মানুষের মাথায় অসংখ্য কোষ থাকে। যদি আমরা কোষগুলো ব্যবহার না করি, তাহলে ব্রেন অকেজো হয়ে যায়। ফলে মানুষ মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। ভালো-মন্দ কিছু বুঝতে পারে না। আবার অতিরিক্ত এর ব্যবহারের ফলে বর্তমানে হাজার হাজার মানুষ চাকরিচ্যুত হচ্ছে। কারণ যে কাজ করতে মানুষের কয়েক ঘণ্টা লাগে, এআই সেই কাজ কয়েক মিনিটের মধ্যেই করে দিছে। ফলে তৈরি হচ্ছে বেকারত্ব।

কাজেই এআইর ব্যবহারের সুফল যেমন রয়েছে, তেমনি এর কিছু কুফলও রয়েছে। তাই যেসব ক্ষেত্রে দ্রুতগতিতে কাজ করা সম্ভব হয়, শুধু সেসব ক্ষেত্রে এর ব্যবহার যুক্তিযুক্ত। আর যেসব ক্ষেত্রে ব্যবহার করলে আমাদের পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক অঙ্গন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, সেসব ক্ষেত্রে এআই প্রযুক্তি পরিহার করাই ভালো।

মো. সোহান হোসেন : শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া

 

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম