পরিবেশবান্ধব অর্থায়ন প্রসঙ্গে
তাজওয়ার নূর
প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
দেশের উন্নয়নে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। টেকসই ও পরিবেশবান্ধব অর্থায়নের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। টেকসই অর্থায়ন সেসব প্রতিষ্ঠানের একটি মূল অংশ হয়ে উঠছে, যারা জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রার মতো বৈশ্বিক লক্ষ্য পূরণে অবদান রাখতে চায়। এসব প্রতিষ্ঠান এমন প্রকল্পগুলোর দিকে মনোযোগ দিচ্ছে, যা সামাজিকভাবে ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে এবং পরিবেশবান্ধব হয়ে থাকে। নেট-জিরো ব্যাংকিং অ্যালায়েন্সের সদস্যরা ২০৫০ সালের মধ্যে নেট-জিরো কার্বন নির্গমনের লক্ষ্য অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ২০২১ সালে দেশের একটি স্বনামধন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান এ অ্যালায়েন্সের প্রথম স্বাক্ষরকারী। সে ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তায় ওই আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জ্বালানি-দক্ষ যন্ত্রপাতি এবং অন্যান্য পরিবেশবান্ধব প্রকল্পের জন্য পরিবেশবান্ধব অর্থায়ন প্রদান করছে। এটি এসডিজিকে সমর্থন করে এবং কার্বন নির্গমন হ্রাসে অবদান রাখে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এসএমই এবং ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে অর্থায়ন করে দারিদ্র্য হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এসএমই ব্যবসাগুলো কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে এবং অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তিতে ভূমিকা রাখে এ ব্যবসাগুলোকে টেকসই অর্থায়ন প্রদান করে, নেট-জিরো ব্যাংকিং অ্যালায়েন্সে প্রথম স্বাক্ষরকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠানটিসহ অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের দারিদ্র্য বিমোচনে কাজ করছে। নেট-জিরো ব্যাংকিং অ্যালায়েন্সে প্রথম স্বাক্ষরকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্র জানান, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠানের বিতরণকৃত লোনের ৩৪.৫৩ শতাংশই টেকসই লোন, যার একটি বড় অংশই ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। আর্থিক অন্তর্র্ভুক্তির বাইরে থাকা জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং সেবা গ্রহণে সহায়তা করে যাচ্ছে। অনগ্রসর সম্প্রদায়গুলোকে আর্থিক ব্যবস্থার ভেতরে নিয়ে আসতে পারছে।’
সব লিঙ্গের প্রতি সমতা। মহিলা উদ্যোক্তাদের অর্থায়ন করে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো মহিলাদের আর্থিক ব্যবস্থার অধিগম্যতার ক্ষেত্রে সমতা সৃষ্টি করতে সহায়তা করছে। এ উদ্যোগগুলো নারীদের অর্থনীতিতে আরও সক্রিয়ভাবে অবদান রাখবে। শিল্প দূষণ হ্রাস করে এবং টেকসই ব্যবসার চর্চাকে উৎসাহিত করে, কারখানাগুলোতে এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) অর্থায়ন, যা পানির দূষণ হ্রাস করে এবং সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রকে রক্ষা করে। এ প্রচেষ্টাগুলোয় নেতৃত্ব দিচ্ছে দেশের স্বনামধন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যা বাংলাদেশে টেকসই এবং পরিবেশবান্ধব অর্থায়নকে তাদের মূল কার্যক্রমের অংশ হিসাবে সংযুক্ত করেছে। নেট-জিরো ব্যাংকিং অ্যালায়েন্সে প্রথম স্বাক্ষরকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি ২০২৩ সালে টেকসই অর্থায়নের অধীনে ৪৪.৩৩ শতাংশ ঋণ বিতরণ নিশ্চিত করেছে, যা বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০ শতাংশ বার্ষিক বিতরণের সীমার চেয়েও বেশি। পরিবেশবান্ধব অর্থায়নের অধীনে ১১.৮৮ শতাংশ মেয়াদি ঋণ বিতরণও নিশ্চিত করেছে, যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারিত সীমা (৫ শতাংশ)-এর চেয়ে বেশি।
আইডিএলসি ফাইন্যান্স এর সিইও এন্ড এমডি এম জামাল উদ্দিন এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘একটি দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান হিসাবে আমরা আমাদের গ্রাহকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে যেমন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, ঠিক তেমনই আমাদের পরিবেশ এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বদ্ধপরিকর।’ বাংলাদেশ যখন উন্নয়নের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, তখন স্বনামধন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো প্রমাণ করছে যে সুষম, সমৃদ্ধ এবং পরিবেশবান্ধব অর্থনীতি গড়ে তুলতে সুশাসন, টেকসই এবং পরিবেশবান্ধব অর্থায়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক : প্রাবন্ধিক
