|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বাংলাদেশকে নদীমাতৃক দেশ বলা হলেও এদেশের রাজধানী ঢাকা নগরীর প্রাণ বুড়িগঙ্গা বর্তমানে ভালো নেই। এ নদী এখন পরিণত হয়েছে বর্জ্য ফেলার উন্মুক্ত স্থানে অর্থাৎ নর্দমায়। অথচ এক সময় এ শহরের পাশ দিয়ে বহমান বুড়িগঙ্গা নদী ছিল অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন ও প্রাণবন্ত, যা আজ নীরব নিস্তব্ধ। বুড়িগঙ্গার পানি ছিল কাঁচের মতো স্বচ্ছ, যেখানে প্রচুর মাছের আনাগোনা ছিল। পাখিদের অভয়াশ্রমও বলা হতো এ নদীকে। বুড়িগঙ্গা নদীর তীর ঘেঁষে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা আহসান মঞ্জিল গড়ে উঠেছিল, যা বুড়িগঙ্গা ও নগরীর সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছিল। এ নদীর বুকে বিচরণ করত শত শত ছোট-বড় পালতোলা নৌকা ও স্টিমার।
বুড়িগঙ্গাকে কেন্দ্র করেই ৪০০ বছর আগে ঢাকার নগরায়ণ শুরু হয়েছিল। আর আজ সেই নদী দখল-দূষণে জর্জরিত ও ক্ষয়িষ্ণু। নদীটির সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে পয়ঃনিষ্কাশনের লাইন। মূলত বিভিন্ন কল-কারখানা ও ট্যানারির বর্জ্য, নৌযানের বর্জ্য বুড়িগঙ্গার দূষণের জন্য দায়ী। এছাড়া ঘর-গৃহস্থালির আবর্জনাসহ অন্যান্য ময়লা-আবর্জনা নদীতে ফেলার কারণে এর পানি হয়ে গেছে চরমভাবে দূষিত। নর্দমার পানির মতো নদীর পানি ধারণ করেছে কালো রঙ। এ পানি বাতাসে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ, যা গ্রহণের মাধ্যমে নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে হাজার হাজার শিশুসহ বয়স্ক ব্যক্তিরাও। আশপাশ এলাকার অধিবাসীদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ, শ্বাসকষ্টসহ নানা ধরনের জটিল রোগ দেখা দিচ্ছে। কিছু মানুষ ও প্রতিষ্ঠানের অবৈধ দখলেরও শিকার হয়েছে বুড়িগঙ্গা। এসব কারণে মাছ ও জলজ প্রাণী বুড়িগঙ্গা থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এমনকি এ নদীর পানি সাধারণ মানুষের ব্যবহারের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
ঢাকা নগরীর প্রাণ বুড়িগঙ্গাকে রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়ে আসছেন পরিবেশবাদীরা এবং সর্বস্তরের সচেতন মানুষ। নদীর তীরবর্তী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে নির্গত বর্জ্য পরিশোধনের জন্য ইটিপি বাস্তবায়নসহ পরিবেশ দূষণ রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
জান্নাতুল মাওয়া : শিক্ষার্থী, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা
jannatulmawa302003@gmail.com
