কাঁচা পাটের মূল্য বেঁধে দেওয়ার দাবি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২২, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশি পাটের ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্ত্বেও কাঁচা পাটের উচ্চ মূল্যের কারণে রপ্তানি করা যাচ্ছে না। এ কারণে ক্রমাগত বাজার হারাতে হচ্ছে। মজুতদাররা পাট মজুত করায় বাজারে পাটের সংকট দেখা দিয়েছে। অনেক মিল পাটের সংকটে উৎপাদন বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছে। মজুতদারদের কবল থেকে পাট শিল্পকে রক্ষায় কাঁচা পাটের মূল্য বেঁধে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে ৪টি সংগঠন।
রাজধানীর মতিঝিলে মঙ্গলবার আদমজী কোর্টে বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের কার্যালয়ে মতবিনিময় সভায় সংগঠনগুলোর নেতারা এ অভিযোগ করেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন, বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শেখ নাসির উদ্দিন, বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শেখ সৈয়দ আলী ও বাংলাদেশ জুট গুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম।
আবুল হোসেন বলেন, গত ৩ বছরে কাঁচা পাটের দাম ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। লাগামহীন প্রশাসনিক দুর্বলতাই এর জন্য দায়ী। বর্তমানে কাঁচা পাটের যে মজুতদারি চলছে, তাতে সরকারেরও নিয়ন্ত্রণ নেই। অথচ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পাটের সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন মূল্য বেঁধে দেওয়া আছে। অবিলম্বে মজুতদারি প্রথা ভাঙতে না পারলে এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখা যাবে না।
শেখ নাসির উদ্দিন বলেন, পাট আইন আছে, কিন্তু বাস্তবায়ন নেই। পণ্যে পাটজাত মোড়কের ব্যবহার আইন আছে, এরও বাস্তবায়ন নেই। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, আইনের জন্যই আইন করা হয়েছে। অথচ একমাত্র পাট শিল্পেই শতভাগ মূল্য সংযোজন হয়। যে পণ্য রপ্তানি হয়, তার পুরো টাকাই বাংলাদেশে আসছে। এ অর্থের ৮০ ভাগই চাষীরা পাচ্ছে। কিন্তু মজুতদারদের কারণে এ শিল্প এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। ভারতে পাট মজুতদারদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালালেও পাট অধিদপ্তর ও পাট মন্ত্রণালয় এ ধরনের নজির স্থাপন করতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত বিজেএমসি অব্যবস্থাপনার কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। এখন বেসরকারি মিলগুলো বাকি। এভাবে মজুতদারি চলতে থাকলে মিলগুলো বন্ধ হতে বেশি দিন লাগবে না। আগে ১৯শ টাকায় যে পাট কিনেছি, এখন সেই পাট ৩ হাজার টাকায় কিনতে হয়। এ কারণে পাট পণ্যের বড় বাজার তুরস্কে ৪০ শতাংশ রপ্তানি কমেছে। এ বাজার ম্যান মেইড ফাইবার দখল করেছে।
আক্ষেপ করে তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে মজুতদাররাও জানেন না, তারা নিজেরা নিজেদের এবং দেশের কী ক্ষতি করছেন। মিলগুলো বন্ধ হয়ে গেলে তারা পাট কার কাছে সরবরাহ করবেন। তখন ২ হাজার টাকাতেও পাট বিক্রি করতে পারবেন না। তাই শিল্পের স্বার্থে নিয়মিত মজুতদারদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর আহ্বান জানান তিনি।
