যাত্রাবাড়ী-শনিরআখড়ায় সড়ক-ফুটপাত দখল
চলাচলে চরম দুর্ভোগ বাসিন্দাদের
খোরশেদ আলম শিকদার, যাত্রাবাড়ী (ঢাকা)
প্রকাশ: ২৭ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
রাজধানীর ব্যস্ততম শনিরআখড়া, জিয়া সরণি ও মৃধাবাড়ী সড়কের দুই পাশের ফুটপাত এবং সড়কের বেশ কিছু অংশ দখল করে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে তিন শতাধিক দোকানপাট। এছাড়া সড়কের ওপর রয়েছে অবৈধ সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ড। এতে এলাকার ১০ লক্ষাধিক বাসিন্দা চলাচলে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। এসব দোকানে ঝুঁকিপূর্ণভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ। বছরের পর বছর ভোগান্তি চললেও দেখার কেউ নেই। সড়কটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫২, ৫৩, ৫৮, ৫৯, ৬০, ৬১, ৬২, ৬৩ ও ৬৪ নম্বর ওয়ার্ডের ১০ লক্ষাধিক মানুষের চলাচলের প্রধান রাস্তা। সড়কের পাশে রয়েছে দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, বর্ণমালা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, একে উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল, ব্রাইট স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ অর্ধশতাধিক স্কুল, কিন্ডারগার্টেন ও মাদ্রাসা। রয়েছে আরএস শপিংমল, ঢাকা শপিং টাওয়ার, ঢাকা সিটি টাওয়ারসহ ১০টি মার্কেট। এছাড়া প্যারামাউন্ট হাসপাতাল, সেফএইড হাসপাতাল, ডায়মন্ড হাসপাতালসহ কয়েকটি হাসপাতাল। রয়েছে অন্তত ১০টি ব্যাংকের শাখা, উপশাখা ও বিমা অফিস এবং ৩০টির বেশি রেস্টুরেন্ট। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চলাচলের সুবিধার কারণে সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীরা শনিরআখড়া এলাকায় বসবাস করেন।
সরেজমিন দেখা যায়, জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের শনিরআখড়া আন্ডারপাস থেকে দক্ষিণে নামা শ্যামপুর ব্রিজ পর্যন্ত জিয়া সরণি এবং উত্তরে মৃধাবাড়ী সড়ক। সড়কের দুই পাশের ফুটপাত এবং সড়কের কিছু অংশ দখল করে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে ফল, মুদি, সবজি, চটপটি, কাপড়, খেলনা, ঘড়ি, তরকারিসহ হরেক রকম মালামালের তিন শতাধিক দোকানপাট। বিগত দিনে এসব দোকান বসিয়েছেন পাশের মার্কেট ও বাড়ির মালিক এবং আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগর নেতাকর্মীরা।
শনিরআখড়া এলাকার বাসিন্দা আরমিন সুমন, আব্দুল আজিজ ফয়সাল, সাঈদ আহমেদ সোহেল যুগান্তরকে বলেন, শনিরআখড়া-জিয়া সরণি ও মৃধবাড়ী সড়কটি জনগুরুত্বপূর্ণ। সড়কের দুই পাশের ফুটপাত এমনকি সড়কের কিছু অংশ দখল করে অবৈধ দোকান গড়ে উঠেছে। সঙ্গে রয়েছে অবৈধ সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত রিকশার স্ট্যান্ড। এতে সড়কে তীব্র যানজট লেগে থাকে। ফুটপাত না থাকায় মূল সড়ক দিয়েও চলা যায় না।
ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী রিয়াজ খোরশেদ যুগান্তরকে বলেন, এ সড়ক দিয়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শত শত শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ চলাচল করে। সড়কের দুই পাশের ফুটপাত দোকানপাট বসিয়ে দখল হয়ে যাওয়ায় চলাচল খুব কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। তিনি রাস্তা দখলমুক্ত করে মানুষ ও যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন করতে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। এদিকে শনিরআখড়া আন্ডারপাস থেকে রায়েরবাগ সড়ক, দনিয়া কলেজ সড়ক, বর্ণমালা আদর্শ স্কুল ও দোলাইরপাড় সড়ক, রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ডের ফুটওভার ব্রিজের দুই পাশের সড়ক ও ফুটপাত, রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ড থেকে তিতাস গ্যাস রোডের ব্যাংক টাওয়ার পর্যন্ত সড়ক, রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ড থেকে মোহাম্মদবাগ চৌরাস্তা এবং যাত্রাবাড়ী এলাকার বিভিন্ন সড়কের ফুটপাতও দখল হয়ে গেছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা কাইজার মো. ফারাবী যুগান্তরকে বলেন, বিভিন্ন স্থানে ফুটপাত এবং সড়কের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিগগিরই তা উচ্ছেদ করা হবে।
