Logo
Logo
×

খবর

স্বাধীনতার ৫৪ বছর

সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ পূর্ণতা পায়নি আজও

Icon

জাভেদ মোস্তফা, ঢাকা উত্তর

প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহিদের স্মৃতি ধারণ করে সাভারে দাঁড়িয়ে আছে জাতীয় শহিদ স্মৃতিসৌধ। এটি স্বাধীনতা যুদ্ধে শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নিবেদিত স্মারক-স্থাপনা। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও নকশানুযায়ী এটি পূর্ণতা পায়নি। এখনো এর অনেক কাজ বাকি। এই স্মারকে মুক্তি সংগ্রামের প্রধান সাতটি স্তম্ভ, যা ধারাবাহিক আন্দোলনের নিদর্শন বহন করে, সেই স্তম্ভগুলোকে সাদা মাবেল পাথর দিয়ে মোড়ানোর কথা। আজও তা বাস্তবায়িত হয়নি।

স্তম্ভগুলোকে সাদা মার্বেল পাথর দিয়ে মোড়ানোর ইচ্ছা ছিল নকশা প্রণেতা স্থপতি সৈয়দ মঈনুল হোসেনের। এ ছাড়াও স্মৃতিসৌধ এলাকায় অগ্নিশিখা, দুটি ম্যুরাল, জাদুঘর, গ্রন্থাগার, ফ্লাওয়ার শপ, অডিও ভিজুয়াল কেন্দ্র স্থাপনের কথা।

স্মৃতিসৌধের প্রধান ফটকে ঢুকতেই দেখা যাবে আদি নকশার প্রতিচ্ছবি। সচেতন মহল মনে করে অসম্পূর্ণ কাজ শিগগিরই শেষ করা দরকার। তাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধ পূর্ণতা পাবে। স্বাধীনতা যুদ্ধের ম্যুরাল বা বৃহদাকার প্রতিকৃতিও এখানে করা হয়নি। স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রধান নেতা হিসাবে আরও কয়েকটি স্মারক থাকতে হবে এখানে, এমনটাই ইচ্ছে ছিল স্থপতির।

জাতীয় স্মৃতিসৌধের দায়িত্বে থাকা গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রকৌশলী মিজানুর রহমান যুগান্তরকে জানান, বিভিন্ন সময় সৌন্দর্যবর্ধনসহ নকশানুয়াযী কাজ হাতে নিলেও নানা সমস্যার কারণে টাওয়ার ডিজাইন আর বাস্তব রূপ নিতে পারে না। তিনি বলেন, ২০১৮ সালে ৭ স্তম্ভে ধূসর সাদা পাথর লাগানোর জন্য গণপূর্ত বিভাগ পরিকল্পনা হাতে নেয়। কিন্তু কাজ এগোয়নি। তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ম্যুরাল ওয়ালটি হলেও ম্যুরাল আর তৈরি করা হয়নি। এছাড়া মিউজিয়ামের বিল্ডিং নির্মাণ হলেও অধরাই রয়েছে মিউজিয়ামের কাজ। এখানে মুক্তিযুদ্ধে নিহতদের দশটি গণকবর রয়েছে। বিদেশি রাষ্ট্রনায়করা সরকারিভাবে বাংলাদেশ সফরে আগমন করলে এই স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন রাষ্ট্রাচারের অন্তর্ভুক্ত।

তিনি আরও বলেন, শিখা অনির্বাণের জন্য জায়গা প্রস্তুত করা হলেও গ্যাস সংযোগের জন্য কাজটি বন্ধ রয়েছে। লাইব্রেরির জন্য জায়গা আছে, কিন্তু ভবন নির্মাণ হয়নি। স্মৃতিসৌধে শহিদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে যারা আসেন তাদের অনেকেই জানেন না স্মৃতিসৌধ কেন নির্মিত হয়েছিল। এর গুরুত্বই বা কি ? বর্তমান প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস শতভাগ জানার জন্য গ্রন্থাগার জরুরি দরকার বলে সচেতন মহল মনে করছেন।

১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকা শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে নবীনগরে এই স্মৃতিসৌধের শিলান্যাস করেন। ১৯৭৮ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্মৃতিসৌধটি নির্মাণের উদ্যোগ প্রহণ করেন এবং নকশা আহ্বান করা হয়। ১৯৭৮-এর জুনে প্রাপ্ত ৫৭টি নকশার মধ্যে সৈয়দ মাইনুল হোসেন প্রণীত নকশাটি গৃহীত হয়। ১৯৭৯ সালে মূল স্মৃতিসৌধের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ১৯৮২ সালে বিজয় দিবসের অল্প পূর্বে কাজ অর্ধসমাপ্ত হয়। ২০০২ সালে গৃহীত প্রকল্প অনুযায়ী এখানে একটি অগ্নিশিখা, সুবিন্যস্ত ম্যুরাল এবং একটি গ্রন্থাগার স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। বাংলাদেশ সফরকারী বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানরা নিজ হাতে এখানে স্মারক বৃক্ষরোপণ করে থাকেন। স্মৃতিসৌধের মিনার ব্যতীত প্রকল্পটির মহা-পরিকল্পনা ও নৈসর্গিক পরিকল্পনাসহ অন্য সকল নির্মাণ কাজের স্থাপত্য নকশা প্রণয়ন করে সরকারের স্থাপত্য অধিদপ্তর।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম