Logo
Logo
×

খবর

মধুপুরে পরিবেশ উপদেষ্টা

শালবন পুনরুদ্ধারে সরকার বদ্ধপরিকর

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৬ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

টাঙ্গাইলের মধুপুরে গারো সম্প্রদায়সহ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বনবাসীদের বিরুদ্ধে বন বিভাগের ১২৯টি মামলা প্রত্যাহার করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তবে বন বিভাগের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের ওপর হামলার মামলা এ বিবেচনার বাইরে থাকবে। রোববার মধুপুর জাতীয় উদ্যানের দোখলা মাঠে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বত্তৃদ্ধতায় তিনি এ কথা জানান। ‘আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস ২০২৫’ উদযাপন এবং মধুপুর শালবন পুনরুদ্ধার কার্যক্রম উদ্বোধন উপলক্ষ্যে এই সভার আয়োজন করা হয়।

এ সময় পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, কোনোভাবে এখানকার জনগোষ্ঠীদের হয়রানি করা যাবে না। আমি বন বিভাগের লোকজনকে এই নির্দেশনা দিচ্ছি। বনসবাসীদের বিরুদ্ধে করা ১২৯টি মামলা প্রত্যাহার করা হবে, তবে বনজমি দখলের মামলা এবং যেসব মামলায় বন বিভাগের লোকজনের গায়ে হাত তোলা হয়েছে সেই মামলাগুলো প্রত্যাহার সম্ভব হচ্ছে না।

তিনি বলেন, এটি কোনো প্রতিশ্রুতি নয়, একটি ঘোষণা। বনবিনাশ রোধে বনবান্ধব কর্মসূচি গ্রহণ এবং প্রথাগত বনবাসীদের অধিকার নিশ্চিত করার কথাও জানান তিনি।

এ সময় গারো জনগোষ্ঠীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আগামী জুন-জুলাইয়ের মধ্যে সরকার বনের জমির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে এবং এরপর আমরা আপনাদের ভূমির বিষয়ে একটি সেটেলমেন্টে আসব। তবে আপনাদের একটি বিষয়ে ‘কমিটমেন্ট’ করতে হবে। সেটি হচ্ছে শত শত একর জমিতে আনারস, কলা চাষ করতে পারবেন না। নিজেদের যতটুকু প্রয়োজন এবং বিক্রি করা প্রয়োজন সেটুকু জায়গায় চাষ করতে পারবেন। শত শত একর জায়গায় হরমোন ও পেস্টিসাইড দিয়ে শালবন নষ্ট করার সুযোগ পাবেন না।

সৈয়দা রিজওয়ানা আরও বলেছেন, মধুপুরের অবক্ষয়িত শালবন পুনরুদ্ধারে সরকার বদ্ধপরিকর। এবার ৭৫০ একর এবং আগামী তিন বছরে ৬ হাজার ৬১০ একর জায়গায় শালবন রোপণ করব। শালের পাশাপাশি সহযোগী বৃক্ষরোপণ চলছে, যাতে স্থানীয় জনগণকেও সম্পৃক্ত করা হচ্ছে।

উপদেষ্টা বলেন, শালবনের সীমা চিহ্নিতকরণের কাজ চলছে এবং ‘রাজাবাড়ী’ এলাকায় সীমানা পিলার স্থাপন করা হয়েছে। শালবনে শুধু শালগাছই থাকবে। ১০০টি গাছের মধ্যে ৭০টি শাল এবং ৩০টি সহযোগী গাছ থাকবে কিন্তু কোনো বিদেশি গাছ থাকবে না।

এর আগে উপদেষ্টা মধুপুর বনের জীববৈচিত্র্য ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ হিসাবে টেলকি এলাকায় শালগাছ রোপণের মাধ্যমে বনজ গাছ বৃদ্ধি কর্মসূচি শুরু করেন। পরে বনাঞ্চলের রাজাবাড়ী এলাকায় সীমানা চিহ্নিতকরণের কাজ পরিদর্শন ও সীমানা পিলার স্থাপনের মাধ্যমে ‘স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণের মাধ্যমে মধুপুর শালবন পুনঃপ্রতিষ্ঠা’ প্রকল্পের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। উপযুক্ত সময়ে বনে ছেড়ে দেওয়ার জন্য লহুরিয়া হরিণ প্রজনন কেন্দ্রে ১০টি ময়ূর ও ৬টি কচ্ছপ সংরক্ষণ করেছেন।

এ সময় বন উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, শালবনে আবার শালগাছ ফেরত আনা হবে। ইতোমধ্যে বনে জায়গা করে নেওয়া বিদেশি প্রজাতির ইউক্যালিপটাস, আকাশমনি গাছ নিষিদ্ধের ঘোষণায় সেগুলো বন থেকে চলে যাচ্ছে। তাই আসন্ন বর্ষায় বেশি করে শালগাছ রোপণ করতে হবে। এখানে যারা বনবাসী আছেন তাদের এই বন রক্ষায় ভূমিকা পালন করতে হবে। এসব কাজে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করতে হবে।

এর আগে সকালে তিনি টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে বেলুন উড়িয়ে ভূমিমেলা এবং ৫ লাখ বৃক্ষরোপণের কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম