Logo
Logo
×

খবর

খুলনায় আত্মগোপনে ২ জামায়াতকর্মী

ব্যাংক থেকে গ্রাহকের ৪০ লাখ টাকা আত্মসাৎ

Icon

নূর ইসলাম রকি, খুলনা

প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

নগরীর খানজাহান আলী থানার ইস্টার্ন গেট বাজারে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের এজেন্ট ব্যাংকিং পরিচালনা করেন ফুলতলার জামায়াত নেতা এ এইচ এম শফিউল্লাহ হাজারী। ২০২০ সাল থেকে মেসার্স হাজারী এন্টারপ্রাইজ এজেন্ট ব্যাংকিং ক্যাশ ইনচার্জ ছিলেন কাগজি মাহবুবুর রহমান এবং মার্কেটিং অফিসার ছিলেন মনিরুল গাজী। সম্প্রতি এই দুজনের সহযোগিতায় এজেন্ট ব্যাংকের ২৫ থেকে ৩০ জন গ্রাহকের প্রায় ৪০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাদের দুজনের বিরুদ্ধে ফুলতলা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন এজেন্ট ব্যাংকের মালিক।

স্থানীয় সূত্র জানায়, মাহবুব এবং মনিরুল দুজনই জামায়াতের কর্মী। টাকা আত্মসাৎ করার পর থেকেই দুজন আত্মগোপনে রয়েছেন। এজেন্ট ব্যাংকের মালিক শফিউল্লাহ কেন্দ্রীয় জামায়াতের শীর্ষ নেতার ভাইয়ের সঙ্গে সমস্যা সমাধানের জন্য আলোচনা করছেন। ইস্টার্ন গেট বাজারের পাশে রেলওয়ের সম্পত্তির ওপর দোতলা বিশিষ্টভবনে ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংক। এ সম্পতির মালিক খানজাহান আলী থানা জামায়াতের আমির সৈয়দ হাসান মাহমুদ টিটু। জমির মালিক, এজেন্ট ব্যাংকের মালিক এবং কর্মরত সবাই জামায়াত ইসলামের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২০ সাল থেকে এই এজেন্ট ব্যাংকের যাত্রা শুরু। প্রায় ২২০০ গ্রাহকের একাউন্ট আছে এখানে। চলতি মাসের ২ তারিখে একজন গ্রাহকের ৩৬ হাজার টাকা উত্তোলন করেন মাহবুবুর। বিষয়টি ইসলামী ব্যাংকের ফুলতলা ব্রাঞ্চের কর্মকর্তারা জেনে যান। পরবর্তীতে মাহবুব সেই টাকা জমা দেন। এ ঘটনার পর অনেক গ্রাহক অভিযোগ করেন, এজেন্ট ব্যাংকিং এর টাকা জমা দিলেও সেই টাকা একাউন্টে যোগ হচ্ছে না। আবার অনেকে অভিযোগ করেন, তাদের ব্যাংক থেকে টাকা কেটে যাচ্ছে। অভিযোগের ভিত্তিতে ইসলামী ব্যাংক তদন্ত শুরু করে। ১৫ জুলাই ঢাকা থেকে একটি টিম এই এজেন্ট ব্যাংকে আসে। এদিন ঘটনার তদন্তে প্রিন্সিপাল অফিসার মিজানুর রহমান ও প্রিন্সিপাল অফিসার নুরুল হুদাকে দিয়ে একটি কমিটি করা হয়।

প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, গ্রাহকরা নীল জমা স্লিপের মাধ্যমে টাকা জমা দিয়েছে সেই টাকা অ্যাকাউন্টে যোগ হয়নি। কিন্তু এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে নীল জমা স্লিপের মাধ্যমে টাকা জমা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এছাড়া ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে গ্রাহকের টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে মাহবুবুর ও মনিরুল জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা হয়েছে। গ্রাহক রোকেয়া সুলতানা জানান, ২ জুন ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে এজেন্ট ব্যাংক থেকে ৪০ হাজার টাকা উত্তোলন করেন। এরপর তাকে বলা হয় সার্ভারের সমস্যা আরও একবার ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিতে হবে। সরল মনে রোকেয়া আরেকবার ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেন। বুধবার এজেন্ট ব্যাংকিং এ গিয়ে দেখেন ২ জুন তারিখে তার একাউন্ট থেকে ৬০ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়েছে অথচ সে বিষয়ে কিছুই জানেন না তিনি।

এজেন্ট ব্যাংকিং এর মালিক শফিউল্লাহ জানান, মাহবুব ও মনিরুলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছি। তারা এমন প্রতারণা করবে এটা চিন্তাও করতে পারিনি। এখন গ্রাহকদের সাথে যে প্রতারণা করা হয়েছে এই টাকা আমাকে দিতে হবে।

খানজাহান আলী থানা জামায়াতের আমির সৈয়দ হাসান মাহমুদ বলেন, ঘটনার সঙ্গে সংগঠনের কোনো সম্পর্ক নেই। এই দায়ভার এজেন্ট মালিকের।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম